Sunday, February 16, 2025

Nuclear Fusion প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ পেতে এখনও পেরোতে হবে বহু পথ

- Advertisement -

প্রথমে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই বিস্ফোরণ আবার দুইভাবে করা যেতে পারে, Nuclear Fission আর Nuclear Fusion। Nuclear Fission এর ক্ষেত্রে বাইরে থেকে শক্তি প্রয়োগে পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ভেঙে দেওয়া হয়। আর Nuclear Fusion এর ক্ষেত্রে ঘটাতে হয় ঠিক এর উল্টোটা।

Nuclear Fusion
Image by Alexandra_Koch from Pixabay

সূর্যের ভেতর কি এমন জ্বালানি ব্যবস্থা রয়েছে যা তাকে প্রায় নিঃশেষ হতে দেয় না বা এত বেশি উজ্জ্বল করে রাখে? বিজ্ঞানীরা এক সময় এমনই সব অজানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন। অবশেষে একদিন সেসব প্রশ্নের উত্তরও পেয়ে গিয়েছিলেন।

ঘটনাচক্রে সেই উত্তর পাওয়ার পর থেকেই তারা এক নতুন প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ তৈরির কথা চিন্তা করতে শুরু করেন। যে প্রযুক্তিতে একবার বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারলে কোনও রকম দূষণ ছাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে অফুরন্ত আলো পাওয়া যাবে।

হ্যাঁ, বিজ্ঞানীরা এই Nuclear Fusion প্রযুক্তিকেই কাজে লাগিয়ে কীভাবে অফুরন্ত বিদ্যুৎ তৈরি করা যায়, সে বিষয় নিয়ে প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গবেষণা করে যাচ্ছেন। এর সমাধান সূত্রের খুব কাছাকাছি পৌঁছাতে পারলেও বিজ্ঞানীদের ধারণা, বিদ্যুৎ পেতে এখনও পেরোতে হতে পারে আরও বহু পথ। কিন্তু কেন?

তার আগে জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে তা থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়। এর জন্য প্রথমে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই বিস্ফোরণ আবার দুইভাবে করা যেতে পারে, Nuclear Fission আর Nuclear Fusion। Nuclear Fission এর ক্ষেত্রে বাইরে থেকে শক্তি প্রয়োগে পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ভেঙে দেওয়া হয়। আর Nuclear Fusion এর ক্ষেত্রে ঘটাতে হয় ঠিক এর উল্টোটা। এখানে দুটি পরমাণুকে শক্তি প্রয়োগে জোড়া লাগানো হয়। উভয় ক্ষেত্রে যে তাপশক্তি পাওয়া যায়, তার থেকে অনায়াসে বিদ্যুৎ তৈরি করা সম্ভব।

- Advertisement -

সাধারণত পারমাণবিক বোমা বা বর্তমানের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে Nuclear Fission প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে বাইরে থেকে তুলনামূলক অনেক কম শক্তি প্রয়োগ করে অনেক বেশি শক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু এর থেকে ক্ষতিকর তেজক্রিয় বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

দ্বিতীয় প্রযুক্তি অর্থাৎ Nuclear Fusion এর ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা প্রায় থাকে না বললেই চলে। বলা বাহুল্য, সূর্যে এই প্রক্রিয়াতেই অফুরন্ত জ্বালানি তৈরি হয়। বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়া নিয়েই প্রায় ৬০ বছরেরও সময় ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ধারণা একবার এই প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ তৈরি করা সম্ভব হলে, দীর্ঘদিন অফুরন্ত শক্তি পাওয়া যাবে।

কিন্তু এক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উৎপন্ন শক্তি। কারণ বর্তমান প্রযুক্তিতে দুটি তেজক্রিয় পদার্থের পরমাণুকে জোড়া লাগাতে যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয় বিস্ফোরণের পর পাওয়া যায় তার থেকেও অনেক কম শক্তি। ফলে লাভের লাভ প্রায় কিছুই হয় না।

কিন্তু গত দুই বছর আগে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির একদল বিজ্ঞানী। তারা শক্তিশালী লেজার রশ্মি প্রয়োগ করে ল্যাবরেটরিতে একটি Nuclear Fusion পরীক্ষা করেছিলেন। তাতে কিছুটা হলেও সাফল্য পেয়েছিলেন তারা।

ওই পরীক্ষার জন্য তাদের মোট খরচ পড়েছিল প্রায় ৩০০ কোটি ডলার। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে সেসময় জানা গিয়েছিল, ওই পরীক্ষায় Nuclear Fusion ঘটাতে বিজ্ঞানীরা শক্তি প্রয়োগ করেছিলেন প্রায় ২.০৫ মেগাজুল। আর তার থেকে শক্তি পাওয়া গিয়েছিল প্রায় ৩.১৫ মেগাজুল। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলেও উল্লেখ করেছিলেন একাধিক বিজ্ঞানী।

যদিও এখনও পেরোতে হবে বহু পথ। কারণ Nuclear Fusion প্রক্রিয়ায় এখনও রয়েছে বহু বাধা। উৎপন্ন শক্তির পরিমাণ আরও বহু গুণ বাড়ালে তবেই একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা সম্ভব। তবেই প্রায় দূষণ মুক্ত অফুরন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর