সাপেদের এই প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় হাইবারনেশন অর্থাৎ শীতঘুম। যে সমস্ত প্রাণীদের রক্ত শীতল, অর্থাৎ স্তন্যপায়ীদের মতো উষ্ণ নয়। শীতের পরিবেশে তাদের স্বাভাবিক চলাফেরা করতে অসুবিধা হয়। অন্য সময়ের মতো তারা দ্রুত নিজেদের বয়ে নিয়ে যেতে পারে না। তখন প্রয়োজন পড়ে সাময়িক বিশ্রামের।
শীত কড়া নাড়তে শুরু করেছে এবার প্রকৃতির দ্বারে। ‘দীর্ঘ বর্ষা’ পেরিয়ে অবশেষে মেঘের আনাগোনা প্রায় থেমে গিয়েছে আকাশে। কার্তিকের ঝলমলে রৌদ্রে যদিও দিনের পরিবেশ এখনও উষ্ণ। তবে ভোরের বাতাসে ইতিমধ্যেই শীতের আগমনের বাজনা বাজতে শুরু করেছে। হালকা কুয়াশাও সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে ইতিমধ্যে।
বেশ মনোরম পরিবেশ এখন। তবে এই পরিবেশেই সাপেদের তৎপরতা এখন সবচেয়ে বেশি। কারণ তাদের সময় হয়েছে শীতঘুমে যাওয়ার। তারা যে যার মতো করে খাবার খেয়ে নিজেদের লুকিয়ে ফেলবে কোনও অজানা কোঠরে। যার সন্ধান পাওয়া মুশকিল। আর ঠিক এই সময়টাতেই সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে সবাইকেই। কারণ খাবার গ্রহণে সামান্যতম বাধা পেলেই ক্রুদ্ধ হয়ে উঠবে তারা। মারণ আঘাত দিতেও পিছপা হবে না কেউ।
সাপেদের এই প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় হাইবারনেশন অর্থাৎ শীতঘুম। যে সমস্ত প্রাণীদের রক্ত শীতল, অর্থাৎ স্তন্যপায়ীদের মতো উষ্ণ নয়। শীতের পরিবেশে তাদের স্বাভাবিক চলাফেরা করতে অসুবিধা হয়। অন্য সময়ের মতো তারা দ্রুত নিজেদের বয়ে নিয়ে যেতে পারে না। তখন প্রয়োজন পড়ে সাময়িক বিশ্রামের।
পরিবেশের তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নামতে শুরু করলেই সাপেদের শরীরে তার প্রভাব পড়তে শুরু করে। ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত স্বাভাবিক চলাফেরা করার চেষ্টা করতে পারলেও, তার নিচে পরিবেশের তাপমাত্রা নেমে গেলে রক্ত চলাচল ক্রমে ধীর হতে শুরু করে। ফলে সাপেদের নড়াচড়া থেমে যায়। খাবার সংগ্রহ করতে পারে না।
এই অবস্থায় নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে শক্তি সংগ্রহের প্রয়োজন পড়ে। তাই আগে থাকতেই শীতের পূর্ব মুহূর্তে যতটা সম্ভব খাবার খেয়ে নিজেদের টেনে নিয়ে যায় নিশ্চিত কোনও নিরাপদ আশ্রয়ে। সেখানেই তারা শীতের বাকি সময়টুকু একেবারেই স্থির অবস্থায় কাটিয়ে দিয়ে শীত বিদায়ের অপেক্ষায় থাকে। সাপেদের এই অবস্থাকে বলা হয় হাইপারনেশন বা শীতঘুম। তবে ঘুম মানেই কিন্তু তারা পুরোপুরি ঘুমিয়ে থাকে না। ঘুমের ভান করে পড়ে থাকে যেন।
হাইবারনেশন অবস্থায় থাকতে পারলে সাপদের হৃদপিণ্ড ও শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি ধীরে ধীরে কমে আসে। শরীরের বিপাকীয় হারও কমে যায়। ফলে পরিবেশের তাপমাত্রার সঙ্গে সহজেই মানিয়ে নিতে পারে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা।
তবে শুধুমাত্র সাপেরাই নয়, শীতের পরিবেশে শীতঘুমে যেতে হয় ব্যাঙ, বাদুড়, পিঁপড়ে, গ্রাউণ্ড কাঠবিড়ালি, লেমুরস (এক শ্রেণীর ইঁদুর) সহ আরও কতকগুলি প্রাণীকে।
হেমন্তের এই আধো শীতল পরিবেশে তাই সাপেদের তৎপরতা এখন অনেক বেশি। শিকার করে খাবার খেয়ে নিজেদের শীতঘুমে নিয়ে যেতে চায়বে এখন সমস্ত সাপেরা। এই অবস্থায় তাদের শিকার সংগ্রহে বাধা দেওয়া কোনও ভালো কাজ নয়। তাতে বিপদ ঘনিয়ে আসতে কতক্ষণ।