প্রাণীটি আসলে প্যারাসেরাথেরিয়াম লিনজিয়ানসের ফসিলস। যা গণ্ডার এর পূর্ব পুরুষ বললেও ভুল বলা হবে না। গবেষণায় আরও জানা গিয়েছে, ফসিলসটির বয়স আড়াই কোটি বছরেরও বেশি। ওই সময়ে এই জাতীয় গণ্ডার চিন ও ভারত জুড়ে বিচরণ করত। তারা লম্বায় ছিল প্রায় ২৩ ফুট এবং এদের ওজন ছিল প্রায় ২১ টনের কাছাকাছি।
আধুনিক যুগের একটি ভারতীয় গণ্ডারের উচ্চতা খুব বেশি হলে ১.৮ মিটার বা ৬ ফুটের বেশি হতে পারে না। তাও সেটি পুরুষ গণ্ডারের ক্ষেত্রেই হবে। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অতীতে এমন একটি সময় ছিল যখন পৃথিবীর বুকে ঘুরে বেড়ানো এক একটি গণ্ডার এর উচ্চতা ছিল প্রায় ২৩ ফুটের কাছাকাছি। যা আধুনিক যুগের একটি জিরাফের উচ্চতার থেকেও ছিল বেশ কিছুটা বেশি। এযুগের একটি জিরাফের গড় উচ্চতা প্রায় ১৯ থেকে ২০ ফুট।
এমনিতেই জিরাফকে বর্তমানে সবচেয়ে দীর্ঘকায় স্থলচর প্রাণী বলা হয়ে থাকে। গাছের সবচেয়ে উঁচু ডালের পাতা খাওয়ার জন্য তাদের গ্রীবার এই রকম পরিবর্তন হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে তাদেরকেও লজ্জায় ফেলে দিতে পারে সে যুগের গণ্ডার। সম্প্রতি বিবিসি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, চিনের একদল গবেষক চিনের উত্তর-পশ্চিমে এমন একটি গণ্ডার এর ফসিলস পেয়েছে, যা থেকে তারা এই রকম চমকপ্রদ তথ্য জানতে পেরেছে।
তাদের গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে কমিউনিকেশন বায়োলজি জার্নালে। সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৫ সাল নাগাদ চিনের ওই গবেষক দলটি ফসিলসটির সন্ধান পান গানসু প্রদেশের অয়াংজিয়াচুয়ান গ্রামের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে। দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা চলাকালে তারা জানতে পেরেছে, প্রাণীটি আসলে প্যারাসেরাথেরিয়াম লিনজিয়ানসের ফসিলস। যা গণ্ডার এর পূর্ব পুরুষ বললেও ভুল বলা হবে না।
গবেষণায় আরও জানা গিয়েছে, ফসিলসটির বয়স আড়াই কোটি বছরেরও বেশি। ওই সময়ে এই জাতীয় গণ্ডার চিন ও ভারত জুড়ে বিচরণ করত। তারা লম্বায় ছিল প্রায় ২৩ ফুট এবং এদের ওজন ছিল প্রায় ২১ টনের কাছাকাছি। তবে আধুনিক গণ্ডার -এর মতো এদের নাকের ওপর কোনও শিং ছিল না। মাথা ছিল সরু ও বেশ লম্বা।
চিনের ওই গবেষক দলটি আরও জানতে পেরেছে, তাঁদের আবিস্কৃত এই ফসিলসটির সঙ্গে ভারতের প্রাচীনকালের অতিকায় গণ্ডার -এর যথেষ্ট মিল রয়েছে। যা থেকে ধারণা করা যায়, গণ্ডার -টি ভারতীয় অঞ্চল থেকেই বিচরণ করতে করতে চিনের ওই অঞ্চলে পৌঁছে গিয়েছিল।