Sunday, February 16, 2025

সাবধান, প্ল্যাস্টিক কণা পৌঁছে যাচ্ছে মানুষের মস্তিষ্কের কোশে

- Advertisement -

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানুষের মস্তিষ্কে পাওয়া এই প্ল্যাস্টিক কণার পরিমাণ প্রতি গ্রাম কোশে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ সমগ্র মস্তিষ্কের ০.৫ শতাংশ হল এই প্ল্যাস্টিক কণা। এই প্ল্যাস্টিক কণাগুলি এতটাই ক্ষুদ্র, দিব্যি একটি কোশের মধ্যে এটি স্থান করে নিতে পারে। বিজ্ঞানীরা একে ক্ষুদ্র বা ন্যানো প্ল্যাস্টিক বলেছেন।

প্ল্যাস্টিক
Image by Gerd Altmann from Pixabay

প্ল্যাস্টিক –এর রমরমা এই বাজারে প্ল্যাস্টিক ছাড়া যেন কোনও কিছুই সহজে মেলে না। সস্তার এই অপচনশীল পদার্থটি এখন গোটা পৃথিবীটিকেই প্রায় কব্জা করে নিয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় যে কোনও সামগ্রীতেই প্ল্যাস্টিক –এর ব্যবহার যেন বাঞ্ছনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা খুবই আশঙ্কার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

এবার এই প্ল্যাস্টিক রীতিমতো পৌঁছে গিয়েছে মস্তিষ্কের কোশেও। ২০১৬ সাল থেকে চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৪ সাল পর্যন্ত করা একাধিক পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে এর। শুধু মস্তিষ্ক নয়, হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, ধমনী, কিডনি, যকৃতেও মিলেছে প্ল্যাস্টিক কণা। সম্প্রতি এমনই একটি গবেষণামূলক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে অনলাইন জার্নালে। রিপোর্টটি লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো ইউনিভার্সিটির ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স কক্ষের অধ্যাপক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন।

রিপোর্টটি থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত করা মানুষের ময়নাতদন্তের সময় মস্তিষ্কের কোশ নিয়ে গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। এবং আরও উদ্বেগের বিষয়, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০২৪ সালের গবেষণায় এই প্ল্যাস্টিক কণার পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানুষের মস্তিষ্কে পাওয়া এই প্ল্যাস্টিক কণার পরিমাণ প্রতি গ্রাম কোশে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ সমগ্র মস্তিষ্কের ০.৫ শতাংশ হল এই প্ল্যাস্টিক কণা। এই প্ল্যাস্টিক কণাগুলি এতটাই ক্ষুদ্র, দিব্যি একটি কোশের মধ্যে এটি স্থান করে নিতে পারে। বিজ্ঞানীরা একে ক্ষুদ্র বা ন্যানো প্ল্যাস্টিক বলেছেন। এই ন্যানো প্ল্যাস্টিক কণার আকার ১০০-২০০ ন্যানোমিটার (১ ন্যানো মিটার = ১ মিটারের ১০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ মাত্র)। পরিবেশে এই ন্যানো প্ল্যাস্টিক হামেশায় ভেসে বেড়াতে পারে। যা কখনওই মানুষের সাধারণ দৃষ্টিতে ধরা পরার কথা নয়।

- Advertisement -

কীভাবে এই ন্যানো প্ল্যাস্টিক মানুষের মস্তিষ্কে পৌঁছে যাচ্ছে? যদিও এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি। তবে অনেকেই ধারণা করছেন, ফ্যাট গ্রহণ করার মাধ্যমে এই ধরণের প্ল্যাস্টিক কণা মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। সাধারণত ফ্যাটের সঙ্গেই ন্যানো প্ল্যাস্টিক অবস্থান করে সবচেয়ে বেশি। মানুষের শরীরে ফ্যাটের উপস্থিতিও অনেকটাই। মস্তিষ্কের প্রায় ৬০ শতাংশই হল ফ্যাট।

শরীর বা মস্তিষ্কের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মানুষের শরীরে কখনওই তৈরি হতে পারে না। বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করাতে হয়। এর ফলেও শরীরে প্ল্যাস্টিক কণা প্রবেশ করতে পারে।

এছাড়াও বর্তমান প্ল্যাস্টিক –এর সাম্রাজ্যে বাতাসে মিশে রয়েছে অসংখ্য ন্যানো প্ল্যাস্টিক। যা প্রশ্বাসের সময় হামেশায় শরীরে প্রবেশ করতে সক্ষম।

এমনিতেই পরিবেশবিদরা দীর্ঘদিন ধরেই প্ল্যাস্টিক জাত বিভিন্ন দ্রব্যের বিষয়ে সামাজিক সতর্কতা জারি করে আসছেন। কারণ বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাবের সঙ্গে প্ল্যাস্টিক কণা শরীরে ক্যানসারের মতো ভয়ঙ্কর রোগও তৈরি করতে পারে। যদিও প্ল্যাস্টিক পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা প্ল্যাস্টিক জাত দ্রব্যগুলির (বোতল, ব্যাগ, পেপার, মোড়ক, চা বা কফির কাপ প্রভৃতি) ব্যবহার কমানো যেতেই পারে।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর