Sunday, February 16, 2025

মৌসিনরাম কেন আজ পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টি বহুল গ্রাম?

- Advertisement -

মৌসিনরাম -এ মার্চ-এপ্রিল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। আর শেষ হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ। বিপুল বৃষ্টিপাতের কারণে অঞ্চলটি প্রায় সব সময়ই সিক্ত হয়ে থাকে। বাইরে বেরোলে ছাতাও যেন বেশিক্ষণ টিকতে পারে না। এখানাকার অধিবাসীরা তাই নিজেরাই পাতা দিয়ে বানিয়ে নিয়েছেন ‘রনপু’ নামের নৌকা আকৃতির এক ধরণের বর্ষাতি।

মৌসিনরাম
Photo by Bibhukalyan Acharya from Pexels

এক সময় চেরাপুঞ্জিকে বলা হত পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টি বহুল স্থান। হয়তো সে জন্যেই কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত লিখেছিলেন, ‘চেরাপুঞ্জির থেকে একখানা মেঘ ধার দিতে পারো গোবী-সাহারার বুকে?’ তবে চেরাপুঞ্জিকে এখন অবশ্য আর বৃষ্টি বহুল স্থান মানা হয় না। কারণ গ্রিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী, সেই স্থান দখল করে নিয়েছে চেরাপুঞ্জিরই স্বল্প দূরত্বের পার্শ্ববর্তী আর একটি গ্রাম, মৌসিনরাম। এই গ্রামই এখন সর্বাধিক বৃষ্টি বহুল স্থান নামে পরিচিত।

চেরাপুঞ্জি স্থানটি শহর হলেও মৌসিনরাম কিন্তু মোটেও শহর নয়, একটি পাহাড়ি গ্রাম। কয়েক দশক আগেও এই গ্রামটি ছিল বেশ অজানা। গ্রিনেস বুকে যখন সর্বাধিক বৃষ্টি বহুল স্থান হিসেবে এর নাম রেকর্ড করা হল, তখন থেকেই মৌসিনরাম -এর পরিচিতি বাড়তে শুরু করে। এখন তো আর প্রায় কারওরই অজানা নেই এই গ্রাম সম্পর্কে জানতে।

চেরাপুঞ্জি ও মৌসিনরাম এই দুটি অঞ্চলই ভারতের পাহাড়ি রাজ্য মেঘালয় এর অংশ। বছরে প্রায় ১২ হাজার মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের রেকর্ড রয়েছে মৌসিনরাম –এর সঙ্গে। চেরাপুঞ্জিও অবশ্য কম যায় না। এর প্রায় কাছাকাছি পর্যন্ত বৃষ্টি হয় এখানেও। অথচ ভাবতে অবাক লাগলেও সত্যি, মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরবর্তী শিলং শহরে অবশ্য বৃষ্টি হয় খুবই কম। শিলং-কে তাই বলা হয় বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল। এর কারণ কী?

আসলে প্রকৃতি এই অঞ্চলগুলিকে এমনভাবে সাজিয়েছে, যাতে তারা খুব সহজেই বৈচিত্র্যময় হতে পেরেছে। বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চল থেকে বিপুল মেঘরাশি উত্তর-পূর্ব দিকে উড়ে গিয়ে এই পাহাড়ি অঞ্চলে পৌঁছায়। তারপর ঘনীভূত হয়ে এই অঞ্চলের খাসি-জয়ন্তী পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে বিপুল পরিমাণে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়। মৌসিনরাম রয়েছে খাসি-জয়ন্তী পাহাড়ের প্রতিপাদ অংশে। তাই এই অংশে রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টি হয়। কিন্তু শিলং-এর অবস্থান খাসি-জয়ন্তী পাহাড়ের বিপরীত দিকে। ওই অঞ্চলে যখন এই ঘনীভূত মেঘ পৌঁছায় তখন তাতে জলীয় বাষ্প থাকে অনেক কম। তাই শিলং পরিণত হয়েছে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে।

- Advertisement -

মৌসিনরাম -এ মার্চ-এপ্রিল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। আর শেষ হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ। বিপুল বৃষ্টিপাতের কারণে অঞ্চলটি প্রায় সব সময়ই সিক্ত হয়ে থাকে। বাইরে বেরোলে ছাতাও বেশিক্ষণ টিকতে পারে না। এখানাকার অধিবাসীরা তাই নিজেরাই পাতা দিয়ে বানিয়ে নিয়েছেন ‘রনপু’ নামের নৌকা আকৃতির এক ধরণের বর্ষাতি। এমনকি পোশাক-পরিচ্ছদ শুকানোর জন্যেও প্রতিটি বাড়িতে হিটার বসাতে হয়। অতি বৃষ্টির জন্য এখানে চাষাবাদও প্রায় কম হয়। তবুও এখানকার জনসংখ্যা প্রায় ২ হাজারের ওপর।

তবে এত বৃষ্টির পরেও বর্ষাকাল পেরিয়ে গেলে জলের জন্য হাহাকার পড়ে যায় গোটা মৌসিনরাম গ্রাম জুড়ে। কারণ পাথুরে জমির জন্য এখানাকার মাটি জল ধরে রাখতে পারে না। তখন সরকারী প্রচেষ্টায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হয়।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর