Monday, December 9, 2024

মেন্সট্রুয়াল কাপ নারীদের অর্থসাশ্রয়ী করে দিতে পারে

- Advertisement -

মেন্সট্রুয়াল কাপ তিন প্রকার অর্থাৎ ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের হয়ে থাকে। নারীরা নিজেদের মাপ অনুযায়ী এই কাপ ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্যবহারের সময় অবশ্যই সঠিক পদ্ধতিতে যোনিপথে প্রবেশ করাতে হবে। প্রথম দিকে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করলেও বারংবার ব্যবহারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

মেন্সট্রুয়াল কাপ
Photo by Nataliya Vaitkevich from Pexels

রজঃস্রাব নারীদের প্রতি মাসের একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। তাই এই প্রক্রিয়া চলার সময়ে বিব্রত বোধ করেন বহু নারী। এই সময় অধিকাংশ নারীকেই স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড ব্যাবহার করতে হয়। কিন্তু নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের নারীরা অনেক সময় অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হন। অর্থের অভাবে তাঁদের বহুজনকেই হাতে তৈরি প্যাড ব্যবহার করতে বাধ্য হতে হয়। তাতে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হন তাঁরা। অনেক সময় নারী ঘটিত বিভিন্ন রোগেরও জন্ম দিয়ে থাকে।

তাই এই সমস্যা অনেকটাই দূর করতে একক সময় বাজারে এসেছিল মেন্সট্রুয়াল কাপ। কিন্তু কিছুটা ভ্রান্ত ধারণার জন্যই মেন্সট্রুয়াল কাপ সেভাবে বাজার আয়ত্ব করতে পারেনি। তবে একথা বলার প্রয়োজন পড়ে না, এতে অর্থসাশ্রয়ী হতে পারেন নারীরা। কারণ একবার এই প্রোডাক্ট কিনতে পারলে প্রায় ৫ থেকে ১০ বছর নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। প্রতি মাসে অর্থ নষ্ট করে স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড কেনার প্রয়োজন পড়ে না।

মেন্সট্রুয়াল কাপ আসলে কী? এটি একটি রাবার বা সিলিকন দ্বারা নির্মিত ফানেল আকৃতি কাপ। যা ওপরের প্রসারিত দিকটি উন্মুক্ত আর নিচের সরু দিকটি বদ্ধ থাকে। প্রসারিত দিকটি দুই আঙুলের সাহায্যে কিছুটা ভাঁজ করে যোনিপথে প্রবেশ করাতে হয়। ভেতরে প্রবেশের পর উন্মুক্ত হয়ে গিয়ে এটি জরায়ুর দ্বারে আটকে যায়। রজঃস্রাবের সময় রক্তধারা এই কাপের নিচের অংশে সঞ্চিত হয়। পরে আঙুলের চাপে এটিকে বের করে পুনরায় ব্যবহারের উপযুক্ত করা যায়।

রজঃস্রাব বা মাসিক নারীদের একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। ১০ থেকে ১৬ বছর বয়সী নারীদের প্রথম এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। তারপর ২৮ দিন অন্তর এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকে। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যা ঘটিত কারণে কয়েক দিন আগে বা পরেও হতে পারে এই প্রক্রিয়া। ৪০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে রজঃস্রাব কমে আসে নারীদের।

- Advertisement -

রজঃস্রাবের সময় যে রক্তধারা যোনিপথ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে, তাতে নারীরা অস্বস্তি বোধ করেন। এই সময় তাঁরা রক্তধারাকে ছড়িয়ে পরা থেকে আটকাতে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেন। সবচেয়ে অধিক প্রচলিত পদ্ধতি স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড। এটি বহু প্রাচীন একটি পদ্ধতি। কিন্তু এই পদ্ধতিতে বারংবার প্যাড পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে। বর্তমানে এর মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক নারীকেই অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

এই সমস্যা আটকাতেই এক সময় এসেছিল মেন্সট্রুয়াল কাপ।

মেন্সট্রুয়াল কাপ প্রথম তৈরি হয়েছিল অষ্টাদশ শতাব্দীতে। এটি তখন ছিল রবার দ্বারা নির্মিত। কিন্তু বর্তমান বাজারে এসেছে তার থেকেও নরম পদার্থ সিলিকন এর মেন্সট্রুয়াল কাপ।

এই কাপ তিন প্রকার অর্থাৎ ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের হয়ে থাকে। নারীরা নিজেদের মাপ অনুযায়ী এই কাপ ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্যবহারের সময় অবশ্যই সঠিক পদ্ধতিতে যোনিপথে প্রবেশ করাতে হবে। প্রথম দিকে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করলেও বারংবার ব্যবহারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

স্যানিটারি ন্যাপকিন একবার ব্যবহারের পর পুনরায় ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু মেন্সট্রুয়াল কাপ বারংবার ব্যবহার করা সম্ভব। এই কাপ প্রতিবার আকার অনুযায়ী ১৬ থেকে ২৬ মিলিলিটার রক্ত ধারণ করতে পারে। তবে প্রতিবার ব্যবহারের পূর্বে ৫ থেকে ৭ মিনিট গরম জলে ফুটিয়ে নেওয়া আবশ্যিক।

তবে একটি মেন্সট্রুয়াল কাপ অবশ্যই একজন নারীকেই ব্যবহার করতে হবে। একাধিক নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এর মূল্য বিভিন্ন নির্মাণ কোম্পানি অনুযায়ী বিভিন্ন দামের হতে পারে। যা ১৫০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে একটি মেন্সট্রুয়াল কাপ একবার কিনতে পারলে ৫ থেকে ১০ বছর ব্যবহার করা সম্ভব।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর