এই বর্ষা মরশুমেই নানান রোগের সম্ভাবনা দেখা দেয় প্রতি বছর। বিশেষ করে পেটের রোগের সম্ভাবনা প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই প্রবেশ করে থাকে। বলা বাহুল্য, এই সময়ে চারিদিকে জল জমার কারণে বিশুদ্ধ পানীয় জলের সঙ্গে মিশে যায় ক্ষতিকর নোংরা জলও। সেই জল পান করে জন্ম নেয় একাধিক পেটের রোগের। যার মধ্যে অন্যতম আমাশয়।
চলে এসেছে বর্ষা মরশুম। যদিও তেমনভাবে বর্ষা র আগমন এখনও ঘটেনি। কিন্তু আকাশ জুড়ে ছেয়ে রয়েছে কালো মেঘের স্তর। কখনও-সখনও দু-এক পশলা বৃষ্টিও হচ্ছে কোথাও। তাপমাত্রাও রয়েছে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে। তবে মৌসুম ভবনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারি বর্ষা আর বেশি দূরেও নেই। যে কোনও দিন বা যে কোনও সময়ে আগমন ঘটতে পারে তার।
আর এই বর্ষা মরশুমেই নানান রোগের সম্ভাবনা দেখা দেয় প্রতি বছর। বিশেষ করে পেটের রোগের সম্ভাবনা প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই প্রবেশ করে থাকে। বলা বাহুল্য, এই সময়ে চারিদিকে জল জমার কারণে বিশুদ্ধ পানীয় জলের সঙ্গে মিশে যায় ক্ষতিকর নোংরা জলও। সেই জল পান করে জন্ম নেয় একাধিক পেটের রোগের। যার মধ্যে অন্যতম আমাশয়। দীর্ঘদিন এই সমস্যায় ভুগতে ভুগতে শরীর হয়ে পড়ে দুর্বল। মুখের রুচি চলে যায়। কোনও খাবারই আর সহ্য হয় না পেটে।
তবে সামান্য কয়েকটি ঘরোয়া টোটকায় এই বর্ষা মরশুমেও ভালো রাখা যায় নিজেকে। দূরে রাখা যায় পেটের রোগকেও। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এই রকমই একটি ঘরোয়া টোটকার নাম থানকুনি বা আদামণি। হ্যাঁ, এই থানকুনি পাতা’ই পেটের যে কোনও রোগের অব্যর্থ ওষুধ হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে সুপ্রাচীনকাল থেকেই। বিশেষ করে আমাশায় নির্মূলে এই পাতার রস যেন আজও অদ্বিতীয়।
বর্তমান প্রযুক্তিতে থানকুনি পাতার রস বিশ্লেষণে জানা গিয়েছে, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ব্রাহ্মসাইড, ব্রাহ্মিক অ্যাসিড, সেন্টেল্লায় এশিয়াটিকোসাইড, অ্যাসিইয়্যাটিক অ্যাসিড। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন সি। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আমাশয়ের পাশাপাশি, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা নিরাময়েও অব্যর্থ ওষুধ হিসাবে কাজ করে এই থানকুনি।
থানকুনি যে কোনও বয়সে, যে কোনও সময়ে এবং যে কোনও পরিস্থিতিতে খাওয়া যেতে পারে। কয়েকটি পাতা পরিষ্কার জলে ভালো করে ধুয়ে খালি পেটে চিবিয়ে খেলেই বেশি উপকার পাওয়া বলে মনে করেন কবিরাজেরা।
আর এই থাকুনি গ্রাম-বাংলার নিজস্ব বর্ষজীবী ভেষজ গাছ। তাই অতি সহজেই জন্ম নিতে পারে গ্রাম-বাংলার আনাচে-কানাচে, কিছুটা স্যাঁতসেঁতে অঞ্চলে। বাড়িতে সামান্য জায়গা বা টবেও অতি সহজে সংরক্ষণ করা যেতে পারে একে।
তবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে থানকুনির গুরুত্ব কমেছে অনেক। গাছ চেনার ত্রুটি ও ভেষজ গুণ সম্পর্কে অবগত না হওয়ার কারণে অচিরেই হারিয়ে যেতে বসেছে এই থানকুনি। এছাড়াও এর সংরক্ষণেরও কোনও উদ্বেগ নেই কোথাও। তবে বর্ষা মরশুমে অবশ্যই রোগ প্রতিরোধী হিসাবে থানকুনিকে হাতের কাছে রাখতেই হবে।