Friday, November 8, 2024

পাকিস্তান এখন সবচেয়ে বড় ভিক্ষুকের দেশ, কেন?

- Advertisement -

এশিয়ান মানবাধিয়ার কমিশনের তথ্য বলছে, গোটা পাকিস্তান –এ এখন ভিক্ষুকের সংখ্যা পঞ্চাশ লাখ থেকে প্রায় আড়াই কোটি। অর্থাৎ এই তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার আড়াই থেকে এগারো শতাংশ জনগণ ভিক্ষুক। যদিও দেশটির একাধিক মিডিয়া বলছে এই সংখ্যা আরও বেশি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান –এ ভিক্ষুকের সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে তিন কোটি আশি লাখকেও।

পাকিস্থান
Image by Aamir Mohd Khan from Pixabay

হাত পাতলেই যখন পাওয়া যাচ্ছে, তখন পরিশ্রমের কি দরকার। পাকিস্তান –এর এখন এমনই অবস্থা। এদেশে সরকার থেকে সাধারণ নাগরিকের একাংশ হাত পাততে অভ্যস্ত। যেখানে সরকার যখন-তখন বা যে কোনও সময় হাত পাতছে তার বন্ধু রাষ্ট্রের কাছে, সেখানে দেশের এক শ্রেণীর মানুষ হাত পাতছে ব্যবসায়ী ধঙে। যদিও এই বিষয়ে কেউই লজ্জায় নিজেকে গুটিয়ে নিতে চায়ছে না।

পাকিস্তান অর্থনৈতিক দিক থেকে এখন রীতিমতো একটি খাদে পড়া দেশে পরিণত হয়েছে। যদিও তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার কোনও কালেই তেমন ভারসাম্য ছিল না। পুরোপুরিভাবেই দান ও ঋণের উপর দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে দেশের অর্থনীতি। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির দিকে কোনও খেয়ালও তাদের আদৌ কোনও দিন ছিল কিনা সেবিষয়েও সন্দেহ রয়েছে ঢের। তাই বর্তমানে দেশটি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভিক্ষুকের দেশে পরিণত হয়েছে। এমনই অবস্থা, ভিক্ষা যেন এই পাকিস্থান -এর নতুন কোনও শিল্প।

এশিয়ান মানবাধিয়ার কমিশনের তথ্য বলছে, গোটা পাকিস্তান –এ এখন ভিক্ষুকের সংখ্যা পঞ্চাশ লাখ থেকে প্রায় আড়াই কোটি। অর্থাৎ এই তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার আড়াই থেকে এগারো শতাংশ জনগণ ভিক্ষুক। যদিও দেশটির একাধিক মিডিয়া বলছে এই সংখ্যা আরও বেশি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান –এ ভিক্ষুকের সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে তিন কোটি আশি লাখকেও।

মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে বড় কর্ম হল উপার্জন। সে যে কোনওভাবেই হতে পারে। একটি দেশের অর্থনীতির ভিতও গড়ে ওঠে এই উপার্জনের উপর নির্ভর করে। তবে সেই উপার্জন অবশ্যই হতে হবে আইনসিদ্ধ। পাকিস্তান –এও রয়েছে তেমন একাধিক আইন। সেদেশে সরকারিভাবে ভিক্ষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এমনকি ভিক্ষাবৃত্তির অপরাধে পাকিস্থান –এ সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত সাজারও ব্যবস্থা রয়েছে।

- Advertisement -

কিন্তু এর পরেও পাকিস্তান আজ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভিক্ষুকের দেশ। কোনও মানুষের যখন উপার্জনের অন্য কোনও পথ খোলা থাকে না, তখনই সে ভিক্ষার মতো লজ্জাজনক পথকে বেছে নিতে শুরু করে। কিন্তু দ্য ডন সহ দেশটির একাধিক মিডিয়া জানাচ্ছে, এখানে আইনসিদ্ধ উপার্জনের বিভিন্ন পথ খোলা থাকলেও এক শ্রেণীর মানুষের প্রথম পছন্দ এই ভিক্ষাবৃত্তি। কারণ এখানে কোনও পুঁজি লাগে না, পরিশ্রমেরও তেমন কোনও প্রয়োজন পড়ে না। পাকিস্থান –এর ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এর সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশটির মোট ভিক্ষুকের প্রায় ৫৮ শতাংশেরই বয়স ২০ থেকে ৪০ বছর।

দেশের বড় বড় শহরগুলিতে ভিক্ষাবৃত্তি এখন রীতিমতো বড় ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে। এই ব্যবসার মাথা হিসেবে কাজ করছে এক শ্রেণীর মাফিয়া চক্র। তারা যে কোনও উপায়ে এক বা একাধিক ভিক্ষুকের দল তৈরি করছে। তারপর এলাকা ভেদে ভিক্ষুকের দলগুলিকে বিভক্ত করে দিচ্ছে। এই দলে নারী, পুরুষ ও শিশু সবই মজুত রয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশু পাচারও করছে তারা। দিন শেষে সেই ভিক্ষার অর্থের অধিকাংশই চলে যাচ্ছে মাফিয়াদের হাতে। এমনকি পুলিশ-প্রশাসনের হাতেও সেই অর্থের একাংশ চলে যাচ্ছে।

শুধু পাকিস্তান –এই নয়। ভিক্ষার এই ব্যবসা এখন ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক স্তরেও। পাকিস্তান –এর পররাষ্ট্রসচিব একবার জানিয়েছিলেন, পৃথিবীতে যত ভিক্ষুক ভিক্ষাবৃত্তি করার সময়ে ধরা পড়েছে তার প্রায় নব্বই শতাংশ ভিক্ষুকই পাকিস্তানি। বলা বাহুল্য, এই পাকিস্তানি ভিক্ষুকেরা ভিক্ষার জন্য বাইরের দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি টার্গেট করছে সৌদি আরবকে। এরপর রয়েছে ইরাক, ইরান ও জাপান। সৌদি আরব একাধিকবার এই বিষয়ে পাকিস্তান সরকারকে অবগত করেছে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র সৌদি আরব থেকেই প্রায় ৪৪ হাজার ভিক্ষুককে নিজেদের দেশে ফিরিয়ে এনেছে পাকিস্তান। শাস্তি স্বরূপ তাদের পাসপোর্ট সাত বছরের জন্য ব্যান্ড করে করেছে সরকার।

যদিও পাকিস্তান –এ ভিক্ষাবৃত্তি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। তা সত্ত্বেও এই দেশ কোনওভাবেই ভিক্ষাবৃত্তিকে বন্ধ করতে পারছে না অথবা চায়ছেও না, বলেই মনে করছে একাধিক মহল। দ্য ডন এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান –এ ভিক্ষুকদের বছরে উপার্জন এখন প্রায় ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা দেশটির মোট জিডিপি-র প্রায় ১২ শতাংশ।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর