বর্তমানে ডায়াবেটিস অনেক বড় একটি সমস্যা। চিকিৎসা বিজ্ঞান ডায়াবেটিস –কে ২ ভাগে ভাগ করেছে, টাইপ-১ ও টাইপ-২। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায় ৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ টাইপ-১ ধরণের ডায়াবেটিস –এ ভুগছেন। এক্ষেত্রে এই রোগটি জিনগত বা বংশগত বলা যেতে পারে। কারণ এই ধরণের ডায়াবেটিস বংশ পরম্পরায় হয়ে থাকে।
২০২২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ (WHO) ও এনসিডি রিস্ক ফ্যাক্টর কোলাবোরেশন যৌথভাবে ডায়াবেটিস –এর উপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। সম্প্রতি ল্যানসেট ম্যাগাজিনে সেটি প্রকাশিত হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সমগ্র বিশ্বের প্রায় ৮২ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত।
এর আগে যে সমীক্ষা চালিয়েছিল হু, সেখানে এই সংখ্যা ছিল ৪২ কোটি ২০ লক্ষ। যা আগের হিসেবের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। অর্থাৎ ডায়াবেটিস –এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যে দ্রুতগতিতে ক্রমবর্ধমান তা আর বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সেই সঙ্গে বাড়ছে উদ্বেগও।
আসলে আমাদের শরীরে যে নিত্য-নৈমিত্তিক খাবার প্রবেশ করে তার মধ্যে থাকে শর্করা। এই শর্করা কোশে প্রবেশের পর ভেঙে যায়। আর তার থেকে বেরিয়ে আসে চিনি বা গ্লুকোজ। যা শরীর পরিচালনায় শক্তির যোগান দেয়। এখানে শর্করা ভেঙে চিনিতে রূপান্তরিত করতে ইনসুলিন হরমোনের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। যা সাধারণত অগ্নাশয় থেকে নিঃসৃত হয়।
কিন্তু কোনও কারণে ইনসুলিন হরমোন নিঃসরণ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলে বা নিঃসরণ বন্ধ হয়ে গেলে কোশ শর্করাকে আর ঠিকঠাক ভাঙতে পারে না। ফলে কোশের পরিবর্তে রক্তের মধ্যেই সঞ্চিত হয় চিনি বা গ্লুকোজ। এই অবস্থায় শরীর অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে।
বর্তমানে ডায়াবেটিস অনেক বড় একটি সমস্যা। চিকিৎসা বিজ্ঞান ডায়াবেটিস –কে ২ ভাগে ভাগ করেছে, টাইপ-১ ও টাইপ-২। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায় ৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ টাইপ-১ ধরণের ডায়াবেটিস –এ ভুগছেন। এক্ষেত্রে এই রোগটি জিনগত বা বংশগত বলা যেতে পারে। কারণ এই ধরণের ডায়াবেটিস বংশ পরম্পরায় হয়ে থাকে। তবে সবার ক্ষেত্রেই যে বংশ পরম্পরায় হবে তার কোনও কথা নেই। এই ধরণের ডায়াবেটিস –এর চিকিৎসায় তেমন কোনও অগ্রগতি ঘটেনি।
অপরদিকে টাইপ-২ প্রকৃতির ডায়াবেটিস অনিয়মিত জীবনধারণের জন্য যে কারওই হতে পারে। এক্ষেত্রে নিয়মমাফিক জীবনধারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। তবে সম্পূর্ণভাবে ডায়াবেটিস নির্মূল হবে, এমন কথা কেউই হলফ করে বলতে পারে না। কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ।
ডায়াবেটিস সম্পর্কে একশ্রেণীর মানুষের বিশ্বাস, মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খেলেই ডায়াবেটিস হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বক্তব্য অনুযায়ী, কথাটি পুরোপুরি সত্য বা মিথ্যাও নয়। কারণ অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস –এর সরাসরি কোনও যোগাযোগ নেই। তবে পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
আসলে শরীরে ইনসুলিনের নিঃসরণ হ্রাস পেলেই ডায়াবেটিস –এর লক্ষণ দেখা দেয়। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলেই ইনসুলিন নিঃসরণ হ্রাস পাবে এমন কোনও কথা নেই। কিন্তু ডায়াবেটিস –এ একবার আক্রান্ত হলে মিষ্টি জাতীয় খাবার পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। এক্ষেত্রে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়।