Blackwood গাছের কাঠই এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কাঠ। চন্দন, পিঙ্ক আইভরি, আগারউড আর এবনি গাছের চেয়েও Blackwood এর দাম এখানে অনেকটাই বেশি। Blackwood আফ্রিকার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মাত্র ২৬টি শুষ্ক মৌসুমি প্রধান দেশেই পাওয়া যায়। অন্য কোনও দেশ বা অঞ্চলে এই পর্ণমোচী গাছটি বেঁচে থাকতে পারে না।
পৃথিবীর সবচেয়ে দামি গাছ বা কাঠ কী হতে পারে? এই প্রশ্ন যদি কেউ করে থাকেন অধিকাংশের উত্তর অবশ্যই হবে চন্দন। সে লাল চন্দন হোক বা সাদা। চন্দন কাঠের চেয়ে দামি আর কিই বা হতে পারে। এক কেজি লাল চন্দনের দাম ভারতীয় বাজারে এই মুহূর্তে ৭-৮ হাজার টাকা। সাদা চন্দনের দাম আরও বেশি।
তাই চন্দন কাঠের চোরাচালানের খবর মাঝেমধ্যেই সামনে নিয়ে আসে একাধিক মিডিয়া। ২০২১ সালে এই রকমই একটি চন্দন কাঠের চোরাচালান কেন্দ্রিক সিনেমা Pushpa : the rise রীতিমতো ঝড় তুলে দিয়েছিল সিনেমা জগতে। দক্ষিণী সুপাস্টার আল্লু অর্জুন অভিনীত এই সিনেমাটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল পরিচালককে যথারীতি এর দ্বিতীয় অংশ নির্মাণ করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। কীভাবে লাল চন্দন চোরাপথে বিদেশে চালান করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে সিন্ডিকেট বাহিনী, তা এই সিনেমায় তুলে ধরা হয়েছিল।
তবে জানলে অবাক হতে হবে, চন্দন কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কাঠ নয়। এর চেয়েও দামি কাঠ পৃথিবীতে রয়েছে। যার প্রতি কেজির দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা। তাহলে চন্দনের সঙ্গে এই কাঠের পার্থক্য কতটা তা সহজেই অনুমান করা যায়। হয়তো অনেকেই এবার বুঝতে পেরেছেন এখানে Blackwood গাছের কথা বলা হচ্ছে। একদম ঠিক, Blackwood গাছের কাঠই এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কাঠ। চন্দন, পিঙ্ক আইভরি, আগারউড আর এবনি গাছের চেয়েও Blackwood এর দাম এখানে অনেকটাই বেশি।
Blackwood আফ্রিকার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মাত্র ২৬টি শুষ্ক মৌসুমি প্রধান দেশেই পাওয়া যায়। অন্য কোনও দেশ বা অঞ্চলে এই পর্ণমোচী গাছটি বেঁচে থাকতে পারে না। ছোট ছোট পাতা বিশিষ্ট Blackwood ৪-১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। গাছটি ব্যবহারের উপযুক্ত হতে সময় নেয় প্রায় ৬০ বছর। সমস্ত গাছ জুড়ে থাকে বেল গাছের মতো কাটা। ছালের রঙ ধূসর। আর এই ধূসর ছালের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে গাঢ় লাল বা কুচকুচে কালো কাষ্ঠল অংশটি। যার দাম হাতির দামের থেকেও বেশি।
Blackwood কেন এত দামি? এর মূল কারণ, এমন কিছু জিনিস যা অন্য কোনও কাঠ দিয়ে বানানো সম্ভব নয়, বা বানাতে পারলেও তা নিখুঁত ও টেকসই হতে পারে না, সেই জিনিসগুলিই একমাত্র Blackwood গাছের কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়। এই যেমন ক্লারিনেট, ওবো, ট্রান্সভারস বাঁশি, রেকর্ডার, পিককোলস, হাইল্যান্ডপাইপ এর মতো দামি বাদ্যযন্ত্রগুলি কেবলমাত্র Blackwood গাছের কাঠ দিয়েই নির্মাণ করা সম্ভব। এছাড়াও কিছু প্রয়োজনীয় দামি আসবাব একমাত্র এই কাঠ দিয়েই তৈরি করা হয়।
Blackwood গাছের কাঠ এত দামি হওয়ার অন্যতম কারণ, কাঠটি ক্ষয় প্রতিরোধী। সহজে নষ্ট হয় না। আর্দ্র আবহাওয়াতেও টিকে থাকতে পারে। এছাড়াও গুটি কয়েক দেশ ছাড়া এই গাছ অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। গাছ বাড়তে সময়ও নেয় বেশি। বর্তমানে চোরাচালানের কারণে Blackwood এর সংখ্যা যথেষ্ট হারে কমেও গিয়েছে।