Monday, December 9, 2024

গোলাপ গাছের পুরুষ ডাল ক্ষতি করে গাছের, চিনবেন কীভাবে?

- Advertisement -

গোলাপ পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুলগুলির একটি। গোলাপ ভালবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশেই গোলাপের দেখা মেলে। তবে এর আদি বাসস্থান কোথায়, তা আর জানা যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বহু পুরনো পুঁথিতেও গোলাপের উল্লেখ রয়েছে।

গোলাপ
Photo by Samer Daboul from Pexels

আপনি হয়তো গোলাপ ভালবাসেন। তাই শখ করে নার্সারি থেকে বেশ কয়েক ধরণের গোলাপ চারা কিনে এনে বাড়ির বাগানে বা ব্যালকনির টবে সযত্নে রোপণ করলেন। গাছগুলিতে কয়েকটি গোলাপও ফুটে রয়েছে। কিছুদিন পর দেখলেন গাছগুলি বেশ তাজা হয়ে উঠেছে। আরও লক্ষ করলেন, কয়েকটি গোলাপ গাছের নিচের অংশ থেকে এক বা একাধিক ডাল গজিয়ে উপরের দিকে বাড়তে শুরু করেছে।

কিছুদিন যাওয়ার পর ওই ডালগুলি এখন মূল গোলাপ গাছের অংশ থেকে বেশ অনেকটাই উপরে উঠে এসেছে। ডালগুলি বেশ পুষ্ট এবং অন্য অংশের তুলনায় যথেষ্ট তাজা। আপনি লক্ষ করলেন, ওই ডালটি যতটা দ্রুত বাড়ছে, গাছের বাকি অংশ তত দ্রুত বাড়ছে না। বরং বুড়িয়ে যাচ্ছে।

আরও কিছুদিন এইভাবে চলার পর আপনি লক্ষ করলেন, ওই ডালগুলি ছাড়া গোলাপ গাছের বাকি অংশ ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে। একসময় মরেও গেল। হয়তো ভাবলেন, এই বেঁচে যাওয়া নতুন ডালে এবার কুড়ি আসবে এবং গাছ ভরে যাবে নতুন গোলাপ ফুলে। কিন্তু সেটি আর হচ্ছে না। কারণ এই ডালে কখনওই আর গোলাপ ফুটবে না। এগুলি পুরুষ ডাল। চলতি কথায় যাকে বলা হয় ‘এঁলা’। এই রকম একটি ডালই আপনার শখের গোলাপ গাছটিকে মেরে ফেলতে যথেষ্ট।

কিন্তু কেন এমনটি হল? তাহলে নার্সারি কি আপনাকে ঠকিয়ে দিয়েছে? ফুল ফোটা দেখেই তো আপনি গাছগুলিকে কিনে এনেছিলেন। তাহলে কেন এমনটি হল? স্ত্রী গোলাপ গাছে পুরুষ ডাল কীভাবে জন্মাবে? আসলে এখানে নার্সারির কোনও ভুল ছিল না। আসল কারণ লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোথাও। আসুন জেনে নেওয়া যাক, কী সেই কারণ।

- Advertisement -

গোলাপ পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুলগুলির একটি। গোলাপ ভালবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশেই গোলাপের দেখা মেলে। তবে এর আদি বাসস্থান কোথায়, তা আর জানা যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বহু পুরনো পুঁথিতেও গোলাপের উল্লেখ রয়েছে।

গোলাপ নামটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘রোসা’ থেকে। এই গাছ ‘রোজেই’ পরিবারের অন্তর্গত। পৃথিবীতে প্রায় কয়েক হাজার জাতের গোলাপ রয়েছে। তবে স্থান ভেদে এর প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৩০০।

নার্সারিতে যখন ব্যবসায়ী স্বার্থে গোলাপ গাছের চারা তৈরি করা হয়, তখন বেছে নেওয়া হয় কয়েক জাতের জংলী পুরুষ গাছকে। কারণ এই সমস্ত গাছের সহ্য ক্ষমতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। সহজে মারা যায় না। এই গাছের সঙ্গে ‘জোড় কলম’ পদ্ধতিতে বিভিন্ন জাতের গোলাপ চারা তৈরি করা হয়। তাই এই নতুন গাছের মাটি সংলগ্ন নিচের অংশটি হয়ে থাকে পুরুষ আর ওপরের দিকটি হয় স্ত্রী অংশ।

কিন্তু কখনও-সখনও নিচের পুরুষ অংশ থেকেও নতুন ডাল গজাতে দেখা যায়। তখন এই ডালগুলিকে অবশ্যই ভেঙে দেওয়া প্রয়োজন। না হলে পুরুষ পুষ্ট ডালটি গাছের স্ত্রী অংশটিকে আর বাড়তে দেয় না। বরং ধীরে ধীরে মেরে ফেলতে চায়।

কিন্তু অনেক সময় গাছের পুরুষ ও স্ত্রী ডালের মিলন অংশটি বুঝতে পারা যায় না। তাই কোন ডাল পুরুষ অংশ থেকে বেরিয়ে আসছে তা জানা যায় না। সেক্ষেত্রে ডালের পাতা দেখে বুঝে নিতে হয়।

সাধারণত গোলাপ গাছের একটি বৃন্তে ৩, ৫ বা ৭টি পাতা থাকে। স্ত্রী ডালের প্রতি বৃন্তে এই প্রক্রিয়ায় পাতা গজায়। একই ডালে এই তিন প্রক্রিয়া অবশ্যই থাকবে। কিন্তু পুরুষ ডালে সব সময়ই একটি বৃন্তে ৭টি পাতা থাকবেই। এছাড়াও পুরুষ ডালে কাঁটার পরিমাণ থাকবে অনেক বেশি।

আরও একটি বিষয় লক্ষ করলে অবশ্যই চেনা যায় পুরুষ ও স্ত্রী ডালের পার্থক্য। উভয় ডালের পাতা কখনওই বাহ্যিকভাবে একই আকৃতির হবে না। কিছুটা পার্থক্য অবশ্যই থাকবে। খুব নিখুঁতভাবে লক্ষ করলেই বিষয়টি বুঝতে পারা যাবে। আর বুঝতে পারলেই পুরুষ ডালটি তৎক্ষণাৎ ভেঙে ফেলা প্রয়োজন। নয়তো আপনার গোলাপ গাছে কখনওই ফুল ফুটবে না।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর