উদ্বেগ বেশি শিশুদের নিয়ে। কারণ গর্ভাবস্থায় মায়েরা যদি একবার ZIKA VIRUS-এ আক্রান্ত হয়ে থাকেন, গর্ভের শিশুদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে শিশুরা মাইক্রোসেফালি নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়ে থাকে। মাইক্রোসেফালি বলতে স্বাভাবিকের তুলানায় মস্তিস্কের আকার ছোটো হওয়াকে বোঝায়। অর্থাৎ এই অবস্থায় শিশুর মস্তিস্কের গঠন সম্পূর্ণ হয় না। এখানে আরও উদ্বেগের বিষয়, ZIKA VIRUS নিয়ন্ত্রণে এখনও পর্যন্ত কোনও ওষুধ বা টিকা আবিস্কার হয়নি। তবে গবেষণা চলছে।

জনদর্পণ ডেস্ক : করোনা সংক্রমণের মাঝেই এবার নতুন উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে ZIKA VIRUS। উত্তরপ্রদেশে এরই মধ্যে ৭৯ জনের শরীরে এই ভাইরাস নতুন করে ধরা পড়েছে। জানা গিয়েছে, তার মধ্যে ১৭ জন রয়েছে শিশু। ওই রাজ্যের কানপুরে মশা বাহিত এই ভাইরাস বেশি সংক্রমিত করছে বলে সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছে স্থানীয় মেডিক্যাল বিভাগ।
প্রায় ৭০ বছর আগে আফ্রিকায় ZIKA VIRUS-এর প্রথম সন্ধান পাওয়া গেলেও ভারতে এতদিন ধরে এই ভাইরাসের কোনও চিহ্ন ছিল না। এই ভাইরাস ভারতে প্রথম প্রবেশ করে ২০১৭ সালে। ওই বছর গুজরাত রাজ্যে প্রথমবারের জন্য ZIKA VIRUS-এর সন্ধান পাওয়া যায়। পরে ধীরে ধীরে এর বিস্তার ঘটতে থাকে ভারতে। ZIKA VIRUS থেকে যে রোগ হতে পারে তাকে ‘ZIKA জ্বর’ বলা হয়।
উত্তরপ্রদেশে প্রথম এই ভাইরাসের অস্তিত্ব জানা গিয়েছে গত মাসের ২৩ তারিখে কানপুরে। উত্তরপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই এই ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক থাকার নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য জুড়ে। এছাড়াও এই ভাইরাসের উপর নজর রাখতে ও ছড়িয়ে পড়া আটকাতে বেশ কয়েকটি বিশেষজ্ঞের দলও গঠন করেছে।
ZIKA VIRUS আসলে কি ধরণের ভাইরাস? বিশেষজ্ঞদের দাবি ZIKA আসলে ফ্ল্যাভিভাইরিডি পরিবারের RNA প্রকৃতির ভাইরাস। ১৯৪৭ সাল নাগাদ আফ্রিকার উগান্ডায় রেসাস ম্যাকাক প্রজাতির এক ধরণের বানরের শরীরে প্রথম এই ভাইরাসের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। পরে ১৯৫২ সাল নাগাদ উগান্ডাতেই মানব শরীরে প্রথম এই ভাইরাসের দেখা মিলেছে। পরে উগান্ডার ZIKA গ্রামের নামানুসারে এই ভাইরাসের নামকরণ করা হয়।
কীভাবে ZIKA VIRUS ছড়াতে পারে? ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুর মতো এই ভাইরাসও মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। সাধারণত এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এল্বোপিকটাস মশা এই ভাইরাসের বাহক। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে রক্তপানের সময় মশা নিজেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। পরে অন্য ব্যক্তির শরীরে রক্তপান করতে গেলে ওই ব্যক্তিও ZIKA VIRUS-এ আক্রান্ত হয়। তবে সম্প্রতি একটি মার্কিন গবেষণা বলছে, ZIKA VIRUS শারীরিক মিলনের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।
যদিও ZIKA VIRUS-এ আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর হার খুবই কম। আক্রান্ত হওয়ার পরও সবার শরীরে ZIKA জ্বর-এর কোনও লক্ষণ থাকে না। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি ৫ জনের মধ্যে মাত্র ১ জনই এই ZIKA জ্বরে আক্রান্ত হন। ZIKA জ্বর-এর অন্যতম লক্ষণ হিসাবে দেখা দিতে পারে জ্বর, মাথা ব্যথা, পেশী ব্যথা, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, শরীরে লালচে দাগের উদয় প্রভৃতি। ZIKA জ্বর ২-৭ দিন স্থায়ী হতে পারে।
তবে উদ্বেগ বেশি শিশুদের নিয়ে। কারণ গর্ভাবস্থায় মায়েরা যদি একবার ZIKA VIRUS-এ আক্রান্ত হয়ে থাকেন, গর্ভের শিশুদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে শিশুরা মাইক্রোসেফালি নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়ে থাকে। মাইক্রোসেফালি বলতে স্বাভাবিকের তুলানায় মস্তিস্কের আকার ছোটো হওয়াকে বোঝায়। অর্থাৎ এই অবস্থায় শিশুর মস্তিস্কের গঠন সম্পূর্ণ হয় না। এখানে আরও উদ্বেগের বিষয়, ZIKA VIRUS নিয়ন্ত্রণে এখনও পর্যন্ত কোনও ওষুধ বা টিকা আবিস্কার হয়নি। তবে গবেষণা চলছে।