বিশেষজ্ঞরা ইউরোপ জুড়ে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া এই Corona পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন Corona-র টিকা না নেওয়ার অনীহাকে। তাঁদের দাবি, ইউরোপে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ Corona-র টিকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু একশ্রেণীর মানুষ ভুয়ো খবরে বিশ্বাসী হয়ে এখনও পর্যন্ত টিকা নেয়নি। তাছাড়া বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় মাস্ক ছাড়ায় দেদার মানুষের মধ্যে মেলামেশা বেড়ে গিয়েছে।

অনলাইন পেপার : গ্রীষ্মের মাসগুলিতে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণেই ছিল Corona পরিস্থিতি। বিধিনিষেধও অনেকটা শিথিল করা হয়েছিল সেসময়। আর সেই সুযোগে জনসাধারণ দেদার স্বাধীনতা উপভোগ করেছেন। কিন্তু শীতের মরশুম ঢুকতে শুরু করতেই Corona সংক্রমণ এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে। একাধিক দেশের সরকার নিয়ন্ত্রণের বিকল্প কোনও উপায় না পেয়ে দ্রুত কঠোর বিধিনিষেধ চাপাতে শুরু করেছে জনসাধারণের উপর। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে একাধিক অঞ্চলের আমজনতা। তাই রীতিমতো দাঙ্গা পরিস্থিতি এখন ইউরোপ জুড়ে।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, ইউরোপ জুড়ে পরিস্থিতি এখন এমনই, বেশ কিছু অঞ্চলের জনসাধারণ বিধিনিষেধ মানতে না চেয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে। অহিংস থেকে বিক্ষোভ পরিস্থিতি পৌঁছে গিয়েছে সহিংস-তে। ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন দেওয়া, এমনকি পুলিশের দিকে পেট্রোল বোমা ছোড়ারও দৃশ্য সম্প্রতি দেখা গিয়েছে। প্রশাসনকে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো দাঙ্গা নিয়ন্ত্রক পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। ক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভগ্ন করতে পুলিশকে ছুড়তে হয়েছে জল কামান, কাঁদানে গ্যাস। এমনকি নেদারল্যান্ডসের দি হেগ শহরের দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে রাস্তায় নামাতে হয়েছে ঘোড়া পুলিশ বাহিনীকে।
মাস কয়েক আগেও সমগ্র ইউরোপ জুড়ে Corona গ্রাফ ছিল যথেষ্ট নিম্নমুখী। সেসময় শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধও। কিন্তু সম্প্রতি আবারও ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে সেই গ্রাফরেখা। ফলে বাধ্য হয়েই প্রশাসন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়। নেদারল্যান্ডসে সন্ধ্যার পরই পানশালা বা রেস্তোরাঁর মতো জনবহুল জায়গা বন্ধ করে দিতে বলা হয়। বেলজিয়ামে এই পরিস্থিতিতে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি সেদেশে সপ্তাহের চারদিন বাড়িতে বসে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। অস্ট্রিয়া অবশ্য আরও একধাপ এগিয়ে সমগ্র দেশ জুড়েই লকডাউন ঘোষণা করে দিয়েছে। একই পরিস্থিতি ইতালি, জার্মানি, ডেনমার্ক, চেক রিপাবলিকান, ক্রোয়েশিয়া, গ্রিসেও।
বিশেষজ্ঞরা ইউরোপ জুড়ে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া এই Corona পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন Corona-র টিকা না নেওয়ার অনীহাকে। তাঁদের দাবি, ইউরোপে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ Corona-র টিকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু একশ্রেণীর মানুষ ভুয়ো খবরে বিশ্বাসী হয়ে এখনও পর্যন্ত টিকা নেয়নি। তাছাড়া বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় মাস্ক ছাড়ায় দেদার মানুষের মধ্যে মেলামেশা বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে টিকা গ্রহণ করা মানুষেরাও আক্রান্ত হচ্ছে Corona-র ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে।
ওয়ার্ল্ডোমিটার সূত্রে জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত সারা বিশ্বে ২৫ কোটি ৯৭ লক্ষ ৩৩ হাজারেও বেশি মানুষ Corona ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গিয়েছে ৫১ লক্ষ ৯২ হাজারেও বেশি মানুষ। ইউরোপে এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাজ্য। তারপর ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইতালি।