গত বছরের নভেম্বরে আরও একটি চমকপ্রদ অ্যাপ্লিকেশন হাজির হয়েছে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। তার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ChatGPT। অ্যাপ্লিকেশনটির জনপ্রিয়তা এখন এমনই, মাত্র দুই মাসের মধ্যেই এর ব্যাবহারকারীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে প্রায় ১০ কোটি। উত্তরোত্তর এই ChatGPT নিয়ে মানুষের আগ্রহ যে আরও বাড়বে এ কথা বলা যেতেই পারে। আর এর ফলেই প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞরা কিছুটা আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন এই অ্যাপ্লিকেশনটি সম্পর্কে।

অনলাইন পেপার : মানুষের শ্রমকে দিনে দিনে আরও বেশি সাশ্রয়ী করে তুলতে এই মানুষই দিনের পর দিন পরিশ্রম করে চলেছে। খুব কম সময়ে কোনও কাজকে নির্বিঘ্নে আরও তাড়াতাড়ি কীভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব, তা নিয়েই চলছে নিয়মিত গবেষণা আর সেই সঙ্গে প্রতিযোগিতাও।
এই যেমন ইন্টারনেট আবিস্কার হওয়ার পর থেকে অনেক কিছুই কেমন যেন সহজ হয়ে উঠেছে। যে কোনও তথ্য হাতের কাছে পেতে মানুষ এখন লাইব্রেরির তুলনায় ইন্টারনেটকেই ভরসা করছে সবচেয়ে বেশি। কারণ কম্পিউটার আর মোবাইলের এই যুগে গুগল সার্চ বারে ক্লিক করে খুব সহজে ও নিমেষে যে কোনও তথ্য পেয়ে যাচ্ছে ঘরে বসেই। যদিও গুগলে প্রদর্শিত বহু বিষয়ই বিভ্রান্তি নিয়ে হাজির হচ্ছে। তা স্বত্বেও মানুষ অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে ইন্টারনেটের উপর।
গত বছরের নভেম্বরে আরও একটি চমকপ্রদ অ্যাপ্লিকেশন হাজির হয়েছে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। তার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ChatGPT। অ্যাপ্লিকেশনটির জনপ্রিয়তা এখন এমনই, মাত্র দুই মাসের মধ্যেই এর ব্যাবহারকারীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে প্রায় ১০ কোটি। উত্তরোত্তর এই ChatGPT নিয়ে মানুষের আগ্রহ যে আরও বাড়বে এ কথা বলা যেতেই পারে।
আর এর ফলেই প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞরা কিছুটা আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন এই অ্যাপ্লিকেশনটি সম্পর্কে। তাদের ধারণা, বহু ক্ষেত্রে অসংখ্য মানুষের কাজ হয়তো হাত ছাড়া হতে পারে এর জন্য।
ChatGPT আসলে কী? সহজ কথায় বললে ChatGPT হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি অত্যাধুনিক অ্যাপ্লিকেশন। এর সম্পূর্ণ নাম Chat Generative Pre-trained Transformer। অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের OpenAI সংস্থা। এক সময় যে সংস্থার প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ছিলেন ইলন মাস্ক। ChatGPT র আগে ওই সংস্থা GPT-3 নামে একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছিল। পরে সেটিকে উন্নতকরণ করে তারা তৈরি করে GPT-3.5। আর এই ChatGPT হল GPT-3 ও GPT-3.5 এর মিশ্রিত ফল।
ChatGPT তে যা কিছু জানতে চাওয়া হয়, তার উত্তর প্রায় সঠিকভাবে লিখিত আকারে হাজির করে দিতে পারে সকলের সামনে। সে চুক্তিপত্র, কোনও ঘটনার বিবরণ, রিপোর্ট, রচনা, যে কোনও ধরণের আবেদনপত্র অনায়াসেই প্রায় নির্ভুলভাবে লিখে ফেলতে পারে। তাহলে এখানে প্রশ্ন উঠতেই পারে, গুগল বা ওই ধরণের সার্চ ইঞ্জিনও তো এই একই ধরণের কাজ করে থাকে। তাহলে ChatGPT কে নিয়ে আলাদাভাবে মানুষের এত আগ্রহ কেন? তার মূল কারণ, কম্পিউটার জগতের প্রথাগত নিয়ম-নীতির বাইরে গিয়েও এই অ্যাপ্লিকেশন নিজের মতো করে ভাবতে পারে ও মানবিকতা দেখাতে পারে।
আর এখানেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ। তাদের দাবি, বর্তমানে যে অবস্থায় ChatGPT দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাতে মানুষের কর্মক্ষেত্রে বিশেষ কোনও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ এখানে প্রশ্ন করা মাত্রেই ChatGPT ইন্টারনেট জগত থেকেই নিজস্ব উপায়ে তথ্য অনুসন্ধান করে থাকে। আর সেখান থেকেই সাজিয়ে নিজের মতো করে উত্তর তৈরি করে নেয়। তাই সেই তথ্যেও থেকে যায় একাধিক ভুল। এই ভুলগুলিকে আবার মানুষকেই নিজের মতো করে শুধরিয়ে সাজিয়ে নিতে হয়। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সরকারি স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রদের ChatGPT ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কিন্তু ভবিষ্যতে ChatGPT কে যখন আরও উন্নতকরণ করা হবে, তখন ভুল শোধরানোর আর কোনও জায়গা থাকবে না মানুষের হাতে। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেও প্রবেশ করার একটা আশঙ্কা থাকবে তখন। কর্মক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে পারে মানুষ। তাছাড়া প্রতারনার ক্ষেত্রেও প্রভাব বিস্তার করার বড় ধরণের ঝুঁকি থেকে যাবে, বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।