Wednesday, June 4, 2025

Jewel wasp এর নৃশংসতা হার মানাবে যে কোনও নৃশংস ঘটনাকেও

- Advertisement -

Jewel wasp এমনই একটি পতঙ্গ, যাকে কিনা বোলতা পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ধরা হয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের তুলনামূলক উষ্ণমণ্ডলে এদের নির্বিচারে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। গায়ের রঙ দেখেই এদের প্রথম দর্শনে চিনে নেওয়া সম্ভব। সমস্ত শরীর জুড়ে দেখা মিলবে উজ্জ্বল নীল ও সবুজের মিশ্রণ। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পায়ের উরু হয়ে থাকে লাল।

Jewel wasp
Jewel wasp – Image by kul bora from Pixabay

পৃথিবীতে একমাত্র মানুষই যে অন্য কাউকে সম্মোহন করতে বা বশ মানাতে পারে, এমনটি ভাবলে ভুল ভাবা হবে। কারণ এমন অনেক প্রাণী রয়েছে যারা প্রয়োজনে অন্য প্রাণীকে নিজের বশে আনতে পারে। তারপর তাকে ব্যবহার করে নিশ্চিন্তে নিজের কার্যসিদ্ধি করে ফেলতে পারে।

আজ এমন একটি প্রাণীর কথা এখানে উল্লেখ করা হবে, আহামরি এমন কোনও বুদ্ধিমান প্রাণী সে আদৌ নয়। সামান্য কিছু কৌশলে সে অন্য আর এক প্রাণীকে নিজের বশে নিয়ে আসে। কিন্তু এই কৌশল অত্যন্ত নৃশংস। যা অন্য যে কোনও নৃশংস প্রাণীকেও কিছু অংশে হার মানিয়ে ফেলবে।

Jewel wasp এমনই একটি পতঙ্গ, যাকে কিনা বোলতা পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ধরা হয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের তুলনামূলক উষ্ণমণ্ডলে এদের নির্বিচারে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। গায়ের রঙ দেখেই এদের প্রথম দর্শনে চিনে নেওয়া সম্ভব। সমস্ত শরীর জুড়ে দেখা মিলবে উজ্জ্বল নীল ও সবুজের মিশ্রণ। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পায়ের উরু হয়ে থাকে লাল।

পুরুষের তুলনায় স্ত্রী Jewel wasp আকারে অনেকটাই বড় হয়ে থাকে। স্ত্রী Jewel wasp লম্বায় প্রায় ২২ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আর এদের শরীরের শেষ প্রান্তে থাকে একটি বিষাক্ত হুল। যা তাদের আত্মরক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে পুরুষ Jewel wasp এর এধরণের কোনও হুল থাকে না।

- Advertisement -

এই হুল শুধু আত্মরক্ষার কাজেই নয়, Jewel wasp এর জীবনচক্রেও অনেক বড় ভূমিকা রাখে। কারণ এই হুলের দাপটে নিজের থেকেও আকারে অনেকটা বড় যে কোনও আরশোলাকে নিজের বশে আনতে পারে Jewel wasp। এটি তাদের জীবনচক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ব্যাপারটি অন্য যে কোনও নৃশংস ঘটনাকেও হার মানানোর জন্য যথেষ্ট। স্ত্রী Jewel wasp তার প্রজননের সময় উপস্থিত হলে একটি উপযুক্ত আরশোলার সন্ধান শুরু করে। তারপর তার বুকের কাছের একটি নির্দিষ্ট গ্যাংলিয়ায় হুল ফুটিয়ে কিছুটা বিষ প্রবেশ করাই। এতে কিছুক্ষণের মধ্যেই আরশোলাটি ক্ষণিকের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এই সুযোগে Jewel wasp তার মাথার একটি নির্দিষ্ট অংশে পুনরায় হুল ফুটিয়ে বিষ প্রবেশ করাই। তাতে আরশোলাটির নড়াচড়া করার আর প্রায় কোনও ক্ষমতা থাকে না। সে একটি ঘোরের মধ্যে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। কিন্তু তার মৃত্যু ঘটে না।

এই সময় Jewel wasp আরশোলাটিকে টানতে টানতে তার পূর্ব থেকে নির্মিত চাক বা বাসায় নিয়ে আসে। তারপর আরশোলাটির পিছনের দু’পায়ের ঠিক মাঝে ছোট্ট গর্ত করে একটি বা দুটি ডিম পাড়ে। যার এক একটির আকার প্রায় ২ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এই অবস্থায় Jewel wasp চাক বা বাসার মুখ পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেয়। যাতে বাইরের কোনও শত্রু বা শিকারি আরশোলাটিকে আক্রান্ত করতে না পারে। তারপর অন্য আরশোলা শিকারে সে আবার বেরিয়ে পড়ে।

প্রায় দিন তিনেক পর ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে লার্ভা। এই লার্ভার খাবার কিন্তু এই সম্মোহিত আরশোলার শরীর। প্রায় চার-পাঁচ দিন ধরে আরশোলাটিকে খেয়ে লার্ভারা তার শরীরের মধ্যেই পিউপায় পরিণত হয়। বলা বাহুল্য, আরশোলাটি আর বেঁচে থাকতে পারে না। অথবা Jewel wasp এর বিষক্রিয়ায় সে এতটাই সম্মোহিত হয়ে পড়েছিল, আত্মরক্ষার কোনও উপায় তার আর থাকে না।

অবশেষে কিছুদিনের মধ্যেই পিউপা থেকে পূর্ণাঙ্গ Jewel wasp আরশোলার শরীর ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে আসে। Jewel wasp কে তার বংশধারা এগিয়ে নিয়ে যেতে আরশোলার শরণাপন্ন হতে হয়। তাই এই পতঙ্গদের বিজ্ঞানীরা Emerald cockroach wasp নামেও পরিচয় দিয়ে থাকেন।

প্রকৃতিক এই হিংস্র নিয়ম হার মানিয়ে দেবে যে কোনও নৃশংসতাকে। এখানে আশ্রয়কারী নিজের জীবনচক্রের ধারা বজায় রাখতে তার পোষক বা আশ্রয়কারীকেই নৃশংসভাবে হত্যা করে চলেছে বছরের পর বছর। এর চেয়ে নৃশংস ঘটনা আর কি হতে পারে?

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর