ক্রিকেট আইনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ঘটল মানকাডিং-এ। কয়েক বছর আগে আইপিএল চলাকালীন একটি ম্যাচে বোলার রবিচন্দন আশ্বিন ব্যাটসম্যানকে বল ছোড়ার আগেই বোলার প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা রানার্স জস বাটলারকে আউট করেছিলেন। কারণ জস বাটলার বোলার আশ্বিনের হাত থেকে বল বেরনোর আগেই ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। যথারীতি ক্রিকেট আইনের ৪২ নাম্বার ধারা অনুযায়ী আউট হয়ে বাটলারকে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল সেই সময়।

অনলাইন পেপার : ক্রিকেট মাঠে বেশ কয়েকটি বড় পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলল এমসিসি বা মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব। ১৭৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত লন্ডনভিত্তিক এই ক্লাবটি বৈশ্বিক ক্রিকেট আইন প্রণয়নের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরেই এই পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে চলছিল আলোচনা। এবার তা আইনে বৈধতা পেল। এতে ক্রিকেট স্প্রিড বেশ কিছুটা বাড়বে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে ব্যাটসম্যান ও বোলার উভয়কেই কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই পরিবর্তনগুলি প্রযোজ্য হবে বলে জানা গিয়েছে। কী কী নতুন পরিবর্তন ঘটল ক্রিকেটের এই নতুন আইনে?
মানকাডিং – ক্রিকেট আইনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ঘটল মানকাডিং-এ। কয়েক বছর আগে আইপিএল চলাকালীন একটি ম্যাচে বোলার রবিচন্দন আশ্বিন ব্যাটসম্যানকে বল ছোড়ার আগেই বোলার প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা রানার্স জস বাটলারকে আউট করেছিলেন। কারণ জস বাটলার বোলার আশ্বিনের হাত থেকে বল বেরনোর আগেই ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। যথারীতি ক্রিকেট আইনের ৪২ নাম্বার ধারা অনুযায়ী আউট হয়ে বাটলারকে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল সেই সময়। এই ঘটনায় দারুণ সমালোচিত হয়েছিলেন রবিচন্দন আশ্বিন। অনেকেই এই নিয়মের বিরোধিতা করেছিলেন।
তবে আশ্বিনই যে বাটলারকে এইভাবে প্রথম আউট করেছিলেন, তা নয়। এর আগে কপিল দেব বা গ্রেগ চ্যাপেলের মতো ক্রিকেটাররাও এই একই নিয়মে আউট করেছিলেন রানার্সকে। যদিও এই নিয়মে প্রথম আউট করেছিলেন ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে ভিনু মানকড়। তখন এই নিয়ে দারুণ হইচই পড়ে গিয়েছিল সমগ্র ক্রিকেট বিশ্বে। এমনকি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা ভিনু মানকড়কে ‘অখেলোয়াড়সুলভ’ আচরণ বলেও সমালোচনা করেছিলেন। ভিনু মাককড় এর আউট করার এই পদ্ধতিকে এতদিন পর্যন্ত ‘মানকাডিং’ বলা হত। স্যর ডন ব্রাডম্যান-ও এই নিয়মের পক্ষে ছিলেন।
এবার এই ধরণের আউটকে সম্পূর্ণভাবে ‘রান আউট’-এ রূপান্তরিত করল এমসিসি। আর সেই সঙ্গে ক্রিকেট আইনের ৪২ নাম্বার ধারা থেকে তাকে বের করে ঢুকিয়ে দেওয়া হল ৩৮ নাম্বার ধারায়। যদি কোনও রানার্স (বোলার প্রান্তের ব্যাটসম্যান) বোলারের হাত থেকে বল ছাড়ার আগেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যায়, সেই মুহূর্তে বোলার যদি তাকে আউট করতে পারে, তবে সেই রানার্স ‘রান আউট’ হয়ে যাবেন।
ডেড বল – এতদিন পর্যন্ত বোলারের বল পিচের বাইরে পড়লে তাকে সরাসরি ডেড বলেই গণ্য করত আম্পায়ার। কিন্তু এবার থেকে সেই বল যদি ব্যাটসম্যান মারতে চায় তবে তাকে ডেড বল বলা হবে না। তবে শর্ত রয়েছে এখানে। ব্যাটসম্যানকে অবশ্যই পিচের মধ্যে থেকে মারতে হবে। পিচের বাইরে বেরিয়ে গেলে চলবে না। নতুবা তাকে ডেড বল গণ্য করা হবে।
বলে থুথু লাগানো নিষেধ – করোনা কালীন সময়ে ক্রিকেট চলাকালীন মাঠে বলে কেউ থুথু লাগাতে পারতেন না। এটি সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। প্রায় সময়ই ফিল্ডার বা বোলার খেলা চলাকালীন মাঠে ক্রিকেট বলকে মোছা বা উজ্জ্বল করার জন্য থুথু ব্যবহার করে থাকেন। তাতে ভালো সুইং এর সম্ভাবনা থাকে বলেই ধারণা করেন বোলাররা। এমসিসি-র নতুন আইন অনুযায়ী, খেলা চলাকালীন সময়ে ক্রিকেট বলে কোনওভাবেই মোছা বা উজ্জ্বল করার জন্য থুথু ব্যবহার করা যাবে না। একে অবৈধ হিসাবে গণ্য করা হবে। তবে শরীরের ঘাম ব্যবহার করা যেতে পারে এক্ষেত্রে।
ফিল্ডিং – এতদিন পর্যন্ত খেলা চলাকালীন সময়ে ফিল্ডার অনৈতিকভাবে স্থান পরিবর্তন করলে ডেড বল গণ্য করা হত। এতে ব্যাটসম্যানরা রান পেলেও তা বৈধ হত না। কিন্তু এই নিয়মে এবার বড় পরিবর্তন আনল এমসিসি। ফিল্ডারের এবার এই ধরণের অনৈতিক স্থান পরিবর্তনে ব্যাটিং দল বাড়তি পাঁচ রান পেয়ে যাবে।