‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঝুঁকিতে ফেলবে কি?

Advertisement

এনক্রিপশন প্রযুক্তি আসলে কী? সোজা কথায়, যে প্রযুক্তিতে সরল ভাষা সংকেতে রূপান্তরিত করা হয়। অর্থাৎ এই ভাষা শুধুমাত্র প্রেরক ও গ্রাহকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তৃতীয় কেউ বুঝতে পারবে না। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, ‘ক’ ব্যক্তি বহু দূরের ‘খ’ ব্যক্তিকে কোনও গোপন বার্তা পাঠাতে চায়। কিন্তু কোনও মাধ্যম ছাড়া সেই বার্তা পাঠানো সম্ভব নয়। তিনি এমন একটি দুর্বোধ্য ভাষায় বার্তা পাঠালেন, যা কেবল ওই দুইজনই পড়তে পারবেন।


‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঝুঁকিতে ফেলবে কি?
Symbolic Image – Image by methodshop from Pixabay

অনলাইন পেপার : সোশ্যাল মিডিয়ার ম্যাসেজিং সংস্থাগুলি এখন বড্ড বেশি এনক্রিপশন প্রযুক্তির দিকে এগোচ্ছে। এ যেন অনেকটা কম্পিটিশনের মতো। অর্থাৎ কোন সংস্থার ম্যাসেজিং সিস্টেম কতটা নিরাপদ, তা জানিয়ে সংস্থাগুলি কঠোর থেকে কঠোরতর হয়ে নিজেদের গ্রাহক বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যাসেজিং সংস্থাগুলির মধ্যে এই কম্পিটিশন এখন সবচেয়ে বেশি। তারা গ্রাহকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে চায়ছে।

কিন্তু আসল সমস্যা এইখানেই। কারণ বিভিন্ন দেশের প্রশাসনিক নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এই এনক্রিপশন প্রযুক্তির বিরোধিতা করে আসছে। তাদের বক্তব্য, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত জীবন গোপন থাকলেও ফাঁক থেকে যাবে দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থায়। এই প্রযুক্তির বিরোধিতা করে আসছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, নিউজিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের বহু দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।

এনক্রিপশন প্রযুক্তি আসলে কী? সোজা কথায়, যে প্রযুক্তিতে সরল ভাষা সংকেতে রূপান্তরিত করা হয়। অর্থাৎ এই ভাষা শুধুমাত্র প্রেরক ও গ্রাহকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তৃতীয় কেউ বুঝতে পারবে না। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, ‘ক’ ব্যক্তি বহু দূরের ‘খ’ ব্যক্তিকে কোনও গোপন বার্তা পাঠাতে চায়। কিন্তু কোনও মাধ্যম ছাড়া সেই বার্তা পাঠানো সম্ভব নয়। তিনি এমন একটি দুর্বোধ্য ভাষায় বার্তা পাঠালেন, যা কেবল ওই দুইজনই পড়তে পারবেন। ‘ক’ ও ‘খ’-এর এই সহজ সমাধানকেই এনক্রিপশন বলা হচ্ছে। এখানে প্রেরক নিজের ভাষায় বার্তা পাঠালেও প্রযুক্তির জটিলতায় সংকেতে রূপান্তরিত হয়ে বাহকের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে প্রেরকের ভাষাতেই পৌঁছায়।

বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, এনক্রিপশন প্রযুক্তি দুই ধরণের হতে পারে। (১) সাধারণ মানের সংকেত। অধিকাংশ সোশ্যাল মিডিয়া, ম্যাসেজিং সংস্থা, ই-মেইল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এখানে প্রেরক-এর নিকট থেকে সাংকেতিক বার্তা যে সংস্থার মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছায়, ওই সংস্থা গ্রাহকের আগেই পড়ে ফেলতে পারে। (২) প্রথম থেকে শেষ সংকেত বা এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন। আইমেসেজ, সিগন্যাল বা হোয়াটসঅ্যাপ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে যে সংস্থার মাধ্যমে বার্তা যাচ্ছে সে নিজেই পড়তে পারে না। সম্পূর্ণ গোপনভাবে প্রেরকের বার্তা পৌঁছায় গ্রাহকের কাছে।

ম্যাসেজিং সংস্থাগুলি দাবি করছে, এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন প্রযুক্তি যেহেতু অত্যন্ত গোপনীয়, তাই তৃতীয় পক্ষ মাঝপথে প্রবেশ করতে পারে না। গোপন থাকে প্রেরক ও গ্রাহকের কথোপকথন, ছবি, অডিও বা ভিডিও। এতে প্রযুক্তি হ্যাকিং হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে না। নিরাপদ থাকে ম্যাসেজিং ব্যবস্থা।

তবে বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এই এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন-এর বিরোধিতা করে আসছে। যেহেতু মাঝপথে এই সিস্টেমে প্রবেশ করা যায় না, তাই বিভিন্ন ধরণের অবৈধ কাজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে এই মাধ্যমে। যে কোনও দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে যেতে পারে।

Advertisement
Previous articleকরোনা : গাঁজা নাকি সংক্রমণ রুখতে সাহায্য করতে পারবে!
Next articleরটন্তী কালী-র জন্ম-ই হয়েছে অপবাদ ঘোচাতে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here