কিছু গবেষক দাবি করছেন, কোনও একজন মানুষের শরীরে প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টটির পরিবর্তন এসেছিল। সেই ব্যক্তি হয়তো শারীরিক দিক থেকে ছিলেন অনেকটাই দুর্বল। হয়তো তিনি ক্যানসার বা এইচআইভি-র মতো কোনও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফলে তার শরীরে মিউটেশন ঘটা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল। তবে এমনটি ঘটলে তিনি শনাক্ত হলেন না কেন? এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, ওমিক্রনের উপসর্গ অত্যন্ত মৃদু। তাই কোনও কারণে তাকে শনাক্ত করা হয়নি।

অনলাইন পেপার : ওমিক্রন এখন অবিশ্বাস্য গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। যে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বকে সতর্ক করে দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টি ৭৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়তে পেরেছে। এবং এখনও দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। WHO আশঙ্কা প্রকাশ করছে, এখনই এই ভ্যারিয়েন্টটির ছড়িয়ে পড়ার গতি রোখা না গেলে অল্প কিছুদিনের মধ্যে এর প্রভাব আরও ভয়াবহ হতে পারে।
এখন প্রশ্ন, ওমিক্রন এল কীভাবে? যদিও এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত সঠিক কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছেন গবেষকেরা। এবিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত-ও তাঁরা পেশ করেছেন। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের একটি রিপোর্টে সম্প্রতি এবিষয়ে কিছুটা আলোচনা করা হয়েছে।
তবে একথা নিশ্চিত, দক্ষিণ আফ্রিকাতেই সর্বপ্রথম করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটির জন্ম হয়েছে। তারপর ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র বিশ্বে। যদিও প্রথম দিকে করোনা সংক্রমণ প্রথম মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার মতোই ওমিক্রন-এর আবির্ভাবও কিছুটা রহস্যজনক। গবেষকেরা এই রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের ধারণা, ঠিকঠাক উৎসের সন্ধান জানা গেলে, ওমিক্রন দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়া থেকে রোখা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
ওমিক্রন দক্ষিণ আফ্রিকায় সর্বপ্রথম নজরে আসে গত ২৪ নভেম্বর। এখনও পর্যন্ত যতটুকু তথ্য গবেষকদের হাতে পৌঁছেছে তাতে জানা যাচ্ছে, ওমিক্রন-এর এরই মধ্যে প্রায় ৫০ বার মিউটেশন ঘটেছে। তার মধ্যে ৩০ বারেরও বেশি পরিবর্তন এসেছে তার স্পাইক প্রোটিনে। অন্য কোনও ভ্যারিয়েন্টের দ্রুতগতিতে এতবার পরিবর্তন ঘটেনি।
কিছু গবেষক দাবি করছেন, কোনও একজন মানুষের শরীরে প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টটির পরিবর্তন এসেছিল। সেই ব্যক্তি হয়তো শারীরিক দিক থেকে ছিলেন অনেকটাই দুর্বল। হয়তো তিনি ক্যানসার বা এইচআইভি-র মতো কোনও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফলে তার শরীরে মিউটেশন ঘটা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল। তবে এমনটি ঘটলে তিনি শনাক্ত হলেন না কেন? এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, ওমিক্রনের উপসর্গ অত্যন্ত মৃদু। তাই কোনও কারণে তাকে শনাক্ত করা হয়নি। পরে ধীরে ধীরে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এই ভ্যারিয়েন্টটি।
আবার কিছু গবেষকের দাবি, নির্দিষ্ট কোনও একটি মানুষের শরীরে ওমিক্রন-এর জন্ম না হয়ে গোটা এলাকার মানুষের শরীরে এর উদ্ভব ঘটতে পারে। ব্রাজিলের কিছু গবেষক এই ধারণাকেই অধিক প্রাধান্য দিচ্ছেন। কারণ গবেষণাকালে তাঁরা দেখেছিলেন, করোনার ‘গামা’ ভ্যারিয়েন্টটির জন্ম এমনভাবেই হয়েছিল। তাঁদের ধারণা ওমিক্রন-এর জন্মও আফ্রিকার কোনও একটি অঞ্চলে এমনভাবেই ঘটতে পারে। পরে সেটি দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
এখনও পর্যন্ত সারা বিশ্বে ২৭ কোটিরও বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গিয়েছে প্রায় ৫৩ লক্ষ ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে সুস্থের সংখ্যাও নেহাত কিছু কম নয়। করোনা সংক্রমণ থেকে এখনও পর্যন্ত ২৪ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠতে পেরেছে।