Asteroids এর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ এড়ানোর নতুন পথ খুঁজছে নাসা

Advertisement

ডার্ট ২৪ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে আপাতত পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকবে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ যখন ডাইমফোর্স-এর সঙ্গে পৃথিবীর দূরত্ব হবে ১ কোটি ৭ লক্ষ কিলোমিটার, তখন ডার্ট তাকে ২৪ হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে আঘাত হানবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই সংঘর্ষের ফলে খুব সামান্য হলেও ডাইমফোর্স-এর গতির পরিবর্তন হবে। হতে পারে এই পরিবর্তন ১ সেকেন্ডের ১ মিলিমিটার অংশ, কিন্তু এটাই পৃথিবীর সঙ্গে Asteroids-গুলির সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য যথেষ্ট।


Asteroids এর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ এড়ানোর নতুন পথ খুঁজছে নাসা
Symbolic Image – Image by Rolando Marin from Pixabay

অনলাইন পেপার : সৌরজগৎ সৃষ্টির সময় কিছু অবশিষ্টাংশ টুকরো আকারে রয়ে গিয়েছিল মহাশূন্যে। তারা সুদূর অতীত থেকে এখনও পর্যন্ত কিছুটা নিয়মিত বা অনিয়মিতভাবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। এদেরকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্রহাণু বা Asteroids বলেছেন। এই Asteroids-গুলির এক একটিকে ‘ক্ষুদ্র গ্রহ’ বললেও ভুল বলা হয় না। কারণ এগুলিও সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। তবে এরা আকার বা আয়তনে বুধের থেকেও অনেক ছোটো।

১৮০১ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী গুইস্পিপিয়াজ্জি সর্বপ্রথম Asteroids আবিস্কার করেন। তাঁর আবিষ্কৃত সেই Asteroids এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘সিরাস’। আর এটিই এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড়ো Asteroids।

Asteroids-গুলির অধিকাংশই মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝে অবস্থান করে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। তবে কোনও কোনও Asteroids-এর কক্ষপথ পৃথিবীর কক্ষপথের মধ্যে পড়ে। যেগুলি অতি ভয়ঙ্কর বলেই মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাঁদের ধারণা, যদি কখনও কোনও Asteroids-এর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ ঘটে, তবে তার পরিণাম হতে পারে অতি ভয়াবহ। তবে যদি কোনওভাবে ওই Asteroids-এর গতিপথের পরিবর্তন করা সম্ভব হয়, তবে সেই ভয়ঙ্কর সংঘর্ষ থেকে বাঁচানো যাবে পৃথিবীকে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াকে বলেছেন ‘কাইনেটিক ইমপ্যাক্টর টেকনিক’।

এবার তারই ট্রায়াল শুরু করতে যাচ্ছে নাসা। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের একটি রিপোর্টে এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ২৪ নভেম্বর ফ্যালকন ৯ নামের একটি রকেটে করে মহাকাশে পাড়ি দেবে ‘ডার্ট’ নামের একটি মহাকাশযান। যেটি আঘাত করবে ডাইমফোর্স নামের একটি ছোটো Asteroids-কে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তাঁদের এই গবেষণায় জানতে চাইছেন, ডার্টের সঙ্গে সংঘর্ষে ডাইমফোর্স-এর গতিপথের কোনও পরিবর্তন হবে কিনা।

এমনিতে ক্ষুদ্র Asteroids-এর সঙ্গে সংঘর্ষে পৃথিবীর উপর কোনও প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু বড়ো আকারের Asteroids পৃথিবীকে অপরিসীম ক্ষতি করতে পারে। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের ওই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ১৬০ মিটার চওড়ার কোনও Asteroids পৃথিবীকে আঘাত করলে যে বিস্ফোরণ ঘটবে তার শক্তি হতে পারে একটি অ্যাটম বোম বিস্ফোরণের থেকেও বহু গুণ বেশি। সেক্ষেত্রে মারা যেতে পারে পৃথিবীর হাজার হাজার মানুষ। সেই Asteroids-এর আকার যদি ১ কিলোমিটার পর্যন্ত চওড়া হয়, তাহলে তার প্রভাব পড়তে পারে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে।

যদিও ডাইমফোর্স-এর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা এখনও পর্যন্ত নেই। তবে পরীক্ষা চালাতে এই Asteroids-কেই বেছে নিয়েছেন নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই Asteroids-টি আবার ডিমাইফোর্স নামের অন্য একটি Asteroids-এর চারিদিকে প্রদক্ষিণ করছে।

ডার্ট ২৪ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে আপাতত পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকবে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ যখন ডাইমফোর্স-এর সঙ্গে পৃথিবীর দূরত্ব হবে ১ কোটি ৭ লক্ষ কিলোমিটার, তখন ডার্ট তাকে ২৪ হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে আঘাত হানবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই সংঘর্ষের ফলে খুব সামান্য হলেও ডাইমফোর্স-এর গতির পরিবর্তন হবে। হতে পারে এই পরিবর্তন ১ সেকেন্ডের ১ মিলিমিটার অংশ, কিন্তু এটাই পৃথিবীর সঙ্গে Asteroids-গুলির সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য যথেষ্ট।

ডার্টের শরীরে বসানো থাকবে ড্রাকো নামের একটি ক্যামেরা, যেটি পুরো প্রক্রিয়াটির ছবি পৃথিবীতে পাঠাতে সাহায্য করবে। এছাড়া লিসিয়াকিউব নামের আরও একটি মহাকাশযান সংঘর্ষের অন্তত ১০ দিন আগে মহাকাশে পাঠাবে নাসা, যেটি সংঘর্ষের চিত্র রেকর্ড করতে সাহায্য করবে।

তবে এই পরীক্ষায় নাসা সফল হল কিনা, তার উত্তর জানতে পরবর্তী আরও এক মাস সময় লেগে যেতে পারে। কারণ Asteroids ডাইমফোর্স-এর গতিপথ পরিবর্তন পর্যবেক্ষণের জন্য টেলিস্কোপে চোখ রেখে ওই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের।

Advertisement
Previous articleChristmas Island : এখানে থমকে আছে মানুষের চলাচল, কেবল ছুটছে লাল কাঁকড়ার দল
Next articleCorona : বিধিনিষেধ না মানতে চেয়ে রীতিমতো দাঙ্গা পরিস্থিতি ইউরোপ জুড়ে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here