আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই নিম্নচাপের কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গে। ১১ নভেম্বর থেকে পারদের পতন পূর্বের তুলনায় থমকে যাবে। জলীয়বাষ্প প্রবেশের জন্য দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বাড়বে মেঘের আনাগোনা। এর পাশাপাশি আবহাওয়া দফতর আরও সতর্কবার্তা দিয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে ১২, ১৩ ও ১৪ নভেম্বর দক্ষিণবঙ্গের সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে কিছুটা হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে।

জনদর্পণ ডেস্ক : গত অক্টোবরের মাঝামাঝি শেষ নিম্নচাপের প্রভাব পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। সেবার কোনও রকমে নিম্নচাপের হাত থেকে রেহায় মিলেছিল দুর্গোৎসবের। সেই নিম্নচাপ স্থায়ী ছিল অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। তারপর নিম্নচাপ কেটে যাওয়ার পর বলতে গেলে প্রায় ঝুপ করেই পারদের পতন হতে করে। সেই পতন এখনও অব্যাহত।
শহরাঞ্চলগুলিতে দিনের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও সন্ধ্যার পর পরই নামতে থাকে পারদ। ভোরের দিকে রীতিমতো গায়ে শাল চাপাতে হয়। গ্রামের দিকে অবশ্য পারদের পতন আরও কিছুটা বাড়ে। পশ্চিমের জেলাগুলিতে আরও একধাপ এগিয়ে ইতিমধ্যেই শীতের আমেজ একটু বেশিই মিলতে শুরু করেছে। বীরভূম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় রাতের দিকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রীর কাছাকাছি ঘোরাঘুরি করছে। শীত আসার আগেই শীতের পরিবেশ তৈরি হওয়ায় খুশি এ রাজ্যের সাধারণ মানুষ।
তবে এই শীত শীত ভাব এবার কিছুদিনের জন্য লুকিয়ে পড়তে যাচ্ছে, অন্তত এমনটাই জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। আবহাওয়া দফতরের দাবি, ১০ নভেম্বর পর্যন্ত এই শীত শীত মেজাজ বজায় থাকবে। ১১ নভেম্বর থেকে কিছুদিনের জন্য বাড়তে পারে পরিবেশের তাপমাত্রা। আকাশেও মেঘের আনাগোনা বাড়বে। আর সেই সঙ্গে আর্দ্রতা জনিত অস্বস্তিও কিছুদিনের জন্য ভোগ করতে হতে পারে দক্ষিণবঙ্গবাসীদের।
আসলে নিম্নচাপ যেন কোনওভাবেই পিছু ছাড়তে চাইছে না এবছর। একের পর এক নিম্নচাপ রীতিমতো বিব্রত করে তুলেছে বঙ্গবাসীর। আবারও একটি নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে। উইণ্ডি ডট কম সূত্রে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে নিম্নচাপটির অবস্থান আন্দামান সাগরের কাছে। ১১ নভেম্বরের মধ্যে এটি আরও সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে। এটির অভিমুখ হয়েছে চেন্নাই ও পুদুচেরির দিকে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই নিম্নচাপের কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গে। ১১ নভেম্বর থেকে পারদের পতন পূর্বের তুলনায় থমকে যাবে। জলীয়বাষ্প প্রবেশের জন্য দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বাড়বে মেঘের আনাগোনা। এর পাশাপাশি আবহাওয়া দফতর আরও সতর্কবার্তা দিয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে ১২, ১৩ ও ১৪ নভেম্বর দক্ষিণবঙ্গের সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে কিছুটা হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে।
তবে নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেলে আবারও নামতে শুরু করবে পারদ। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পারদের পতন পূর্বের মতো আবারও শুরু হবে ১৬ নভেম্বর থেকে। তবে পূর্ণ শীতের মেজাজ পেতে দক্ষিণবঙ্গবাসীদের অন্তত ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। এবছর ‘এল নিনো’-র জন্য বেশ কঠিন শীতের পরিবেশ তৈরি হতে পারে সমগ্র দেশ জুড়ে।
তবে উইণ্ডি ডট কম জানাচ্ছে, চলতি নিম্নচাপের পর আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে আন্দামান সাগরের কাছে। ১৪ নভেম্বর নাগাদ এটি আন্দামান ও নিকোবরের কাছে অবস্থান করবে। ঘূর্ণাবর্তটির অভিমুখ এখনও পর্যন্ত চেন্নাই ও নেলোর-এর দিকে রয়েছে। তবে এটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে কিনা তা জানতে আরও দুই দিন অপেক্ষা করতে হতে পারে। এছাড়া এর কোনও প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়বে কিনা, সেটাও নিম্নচাপ তৈরি না হলে স্পষ্ট করে জানা সম্ভব নয়।