মেটাভার্স প্রযুক্তি হতে চলেছে ইন্টারনেট জগতের ভবিষ্যৎ

Advertisement

মেটাভার্স প্রযুক্তি একবার চালু করতে পারলে, আমূল বদলে যাবে ভার্চুয়াল জগত, এমনটাই মনে করছেন একাধিক প্রযুক্তিবিদ। তাঁরা আরও দাবি করছেন, সেই প্রযুক্তি হাতের নাগালে আসতে হয়তো আর বেশিদিন অপেক্ষা নাও করতে হতে পারে। কারণ এটাই হবে ইন্টারনেট জগতের ভবিষ্যৎ। তবে এই প্রযুক্তি পেতে গেলে ইন্টারনেটের গতি ৪জি থেকে রূপান্তরিত করতে হবে ৫জি-তে। আর চোখে লাগাতে হবে ভিআর হেডসেট।


মেটাভার্স প্রযুক্তি হতে চলেছে ইন্টারনেট জগতের ভবিষ্যৎ
Symbolic Image – Image by Gerd Altmann from Pixabay

অনলাইন পেপার : সম্প্রতি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সংস্থা তাদের নাম বদলে নতুন নাম রেখেছে ‘মেটা’। এটি একটি গ্রীক শব্দ। যার বাংলা অর্থ ‘গণ্ডির বাইরে’। যদিও এটি হয়েছে তাদের মূল সংস্থা বা কোম্পানির নাম। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ-এর নাম আগের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে। তাই এখন থেকেই এই তিনটি স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক-এর পরিবর্তে ‘মেটা’-র অধীনে থাকবে।

কিন্তু কেন এই নামের পরিবর্তন? আসলে প্রযুক্তি জগতের দ্রুত উন্নতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফেসবুক-ও নিজেকে দ্রুত বদলে ফেলতে চাইছে। তারা এমন একটি প্রযুক্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে স্বয়ং নিজেকেই প্রবেশ করানো যাবে ইন্টারনেটের অন্দরে। প্রযুক্তিবিদরা একে ‘মেটাভার্স’ বলছেন। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্ক নিজেই কিছুদিন আগে জানিয়েছেন, তাঁরা আগামী ৫ বছরের মধ্যেই এই ‘মেটাভার্স’ প্রযুক্তি তৈরি করে ফেলবেন। তবে শুধু ফেসবুক নয়, মেটাভার্স নিয়ে কাজ করছে অ্যাপল, গুগল, মাইক্রোসফট, রোব্লক্স বা ফোর্টনাইট-এর মতো অনলাইন গেম কোম্পানিগুলিও।

কী এই মেটাভার্স? ‘মেটাভার্স’ নামটি প্রথম সামনে আসে ১৯৯২ সালে। ওই বছর ঔপন্যাসিক নীল স্টিফেনসন ‘স্নো ক্রাশ’ নামে একটি উপন্যাস প্রকাশ করেন। যেখানে এই মেটাভার্স নামটি প্রথম ব্যবহার করা হয়।

সহজ কথায় মেটাভার্স বললে বোঝানো হবে ইন্টারনেটের ‘ভার্চুয়াল জগত’-কে। যে জগতের সবকিছুই যেন জীবন্ত বলে মনে হতে পারে। ধরা যাক, হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার মাধ্যমে কেউ ভারতে বসে তার আমেরিকান বন্ধুর সঙ্গে অনলাইন ভিডিও বার্তালাপ করছেন। এক্ষেত্রে ওই ভারতীয় ব্যক্তির সঙ্গে যে মাধ্যমে তার আমেরিকান বন্ধুর যোগাযোগ চলছে, সেটি একটি দ্বি-মাত্রিক মাধ্যম। কিন্তু এই মাধ্যমটি যদি ত্রি-মাত্রিক হয়, ব্যাপারটি তখন কেমন হতে পারে। এই ত্রি-মাত্রিক মাধ্যমে নিজেকেই পৌঁছে দেওয়া যাবে সুদূর আমেরিকায়। আর আমেরিকান বন্ধু পৌঁছে যাবেন ভারতে। যেন মনে হবে, দুই বন্ধু পাশাপাশি বসে আলাপচারিতায় মেতে উঠেছেন। এখানে তখন সবকিছুকেই যেন জীবন্ত বলে অনুমান করা যাবে। আর এটাই মেটাভার্স প্রযুক্তি।

কী কী সুবিধা থাকছে এই মেটাভার্স প্রযুক্তিতে? এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট জগত এবার শুধু কম্পিউটার বা মোবাইলে ধরা দেবে না, বরং নিজেকেই প্রবেশ করানো যাবে ইন্টারনেট জগতের মধ্যেই। এখানে ত্রি-মাত্রিক মাধ্যমে ভার্চুয়াল মিটিং, অনলাইন শপিং, অনলাইন ক্লাস, গেমিং, অফিসের কাজ, সিনেমা, আড্ডা এরকম আরও অনেক কিছুই করা যাবে বাস্তব পরিবেশের মতোই।

মেটাভার্স প্রযুক্তি একবার চালু করতে পারলে, আমূল বদলে যাবে ভার্চুয়াল জগত, এমনটাই মনে করছেন একাধিক প্রযুক্তিবিদ। তাঁরা আরও দাবি করছেন, সেই প্রযুক্তি হাতের নাগালে আসতে হয়তো আর বেশিদিন অপেক্ষা নাও করতে হতে পারে। কারণ এটাই হবে ইন্টারনেট জগতের ভবিষ্যৎ। তবে এই প্রযুক্তি পেতে গেলে ইন্টারনেটের গতি ৪জি থেকে রূপান্তরিত করতে হবে ৫জি-তে। আর চোখে লাগাতে হবে ভিআর হেডসেট।

Advertisement
Previous articleঢেঁড়ির আওয়াজ ক্রমশ ক্ষীণ হচ্ছে আধুনিকতার ভিড়ে
Next articleআবিস্কার হল মায়া সভ্যতার ১২০০ বছরের পুরনো ডিঙি নৌকা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here