মাত্র ৯ বছরেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ১৪ শতাংশ প্রবালপ্রাচীর

Advertisement
গ্লোবাল কোরাল রিফ মনিটরিং নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রায় ১১ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চলের প্রবালপ্রাচীর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আর এর অন্যতম কারণ সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি। ওই নেটওয়ার্কটি আরও জানিয়েছে, তারা এব্যাপারে ৭৩টি দেশের প্রবালপ্রাচীর নিয়ে ৪০ বছর ধরে গবেষণা করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগর, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ভারত মহাসাগরের প্রবালপ্রাচীরে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে।
মাত্র ৯ বছরেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ১৪ শতাংশ প্রবালপ্রাচীর
Coral – Image by Marcelo Kato from Pixabay

অনলাইন পেপার : নিঃসন্দেহে সমুদ্রের তলদেশ সজ্জায় প্রবালপ্রাচীরের কোনও বিকল্প নেই। বছরের পর বছর ধরে নিঃশব্দে, অতি সন্তর্পণে এই ক্ষুদ্র জীবেরা এখন সমুদ্রের তলদেশের প্রায় ১ শতাংশ অঞ্চল নিজেদের দখলে রেখেছে। আর এরই সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করছে সমুদ্রের জীব বৈচিত্র্যের। প্রায় ২৫ শতাংশ সামুদ্রিক প্রাণীর বসবাসের স্থান এখন এই প্রবালপ্রাচীর।

তবে আর কতদিন নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে পারবে এই প্রবালপ্রাচীর, সেবিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন জীব বিজ্ঞানীরা। কারণ গত ৯ বছরে অতি দ্রুত প্রবালপ্রাচীরের প্রায় ১৪ শতাংশ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাকি অংশগুলিও বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে চলেছে। যা প্রবালপ্রাচীরের বিলুপ্ত হওয়ার পাশাপাশি সমুদ্রের জীব বৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষার উপরেও দেখা দিয়েছে বড়ো প্রশ্নচিহ্ন। চলতি সপ্তাহে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ‘গ্লোবাল কোরাল রিফ মনিটরিং নেটওয়ার্ক’।

প্রবালপ্রাচীর আসলে কী? প্রবাল বা কোরাল আসলে অ্যান্থজোয়া শ্রেণীর এক ধরণের ক্ষুদ্র সামুদ্রিক প্রাণী। সমুদ্রের তলদেশে তারা কলোনি তৈরি করে। প্রবাল পূর্ণবয়স্ক হলে সমুদ্রের তলদেশে স্থিরভাবে অবস্থান করে। এই সময় ধীরে ধীরে তাদের শরীরের চারপাশে জমতে থাকে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের শক্ত খোলস। তারা মারা যাওয়ার পরেও সেই খোলস অক্ষুণ্ণ থাকে যুগের পর যুগ ধরে। পরে ওই খোলসের উপর অন্য প্রবালও স্থিরভাবে অবস্থান করে নিজের খোলস নির্মাণ করতে থাকে। এইভাবে বাড়তে থাকে খোলসের আকার। আর তৈরি হয় প্রবালপ্রাচীর ও প্রবাল দ্বীপ। পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো প্রবাল দ্বীপটি এখন অস্ত্রেলিয়ার নিকটবর্তী গ্রেট বেরিয়ার দ্বীপপুঞ্জ।

গ্লোবাল কোরাল রিফ মনিটরিং নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রায় ১১ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চলের প্রবালপ্রাচীর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আর এর অন্যতম কারণ সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি। ওই নেটওয়ার্কটি আরও জানিয়েছে, তারা এব্যাপারে ৭৩টি দেশের প্রবালপ্রাচীর নিয়ে ৪০ বছর ধরে গবেষণা করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগর, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ভারত মহাসাগরের প্রবালপ্রাচীরে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে।

সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি কীভাবে ধ্বংস করছে প্রবালপ্রাচীরকে? গ্লোবাল কোরাল রিফ মনিটরিং নেটওয়ার্ক এব্যাপারে জানিয়েছে, প্রবাল সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে নিজেদের শরীরের কোশ থেকে রঙিন পদার্থ বের করে দিচ্ছে। ফলে তাদের শরীর হয়ে যাচ্ছে ফ্যাকাসে বা সাদা। নতুন করে আর তৈরি করতে পারছে না প্রবালপ্রাচীর। বিজ্ঞানীরা যাকে বলেছেন ‘কোরাল ব্লিচিং’। এরই সঙ্গে তাদের আশঙ্কা, এইভাবে সমুদ্রের উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকলে এক সময় প্রবালপ্রাচীরের অস্তিত্বই বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে।

Advertisement
Previous articleসবকিছু ঠিক থাকলে ‘মলনুপিরাভির’ হবে করোনার প্রথম অ্যান্টিভাইরাল মেডিসিন
Next articleবিবর্তনের হাত ধরে যেভাবে শুরু হয়েছিল বাংলার দুর্গাপুজো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here