বীরভূম জেলার সবচেয়ে বেশি পটের দুর্গা রয়েছে নানুর ব্লকের হাটসেরান্দী গ্রামে। বোলপুর-পালিতপুর হাটসেরান্দীর মোড় থেকে অটো বা টোটো যোগে যাওয়া যাবে এই গ্রামে। এখানে গোটা গ্রামটিতে দুর্গা পুজো হয়ে থাকে ২৪টি। এর মধ্যে ৭টিই পটের দুর্গা। এগুলি পুজো করে থাকে চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায়, রায়, ঘোষ, পাল ও ২টি মণ্ডল পরিবার। যদিও পূর্বে এখানে সবগুলি দুর্গা-ই পটের ছিল। |

সুজয় ঘোষাল ও বিজয় ঘোষাল : এবারের পটের দুর্গা পরিক্রমার একেবারে শেষ মুহূর্তে পৌঁছে গিয়েছি আমরা। গত বছর দুর্গা পুজোর প্রাক্কালে আমরা তুলে ধরেছিলাম বীরভূম জেলার বেশ কয়েকটি পটের দুর্গা। তার মধ্যে সিউড়ি ও লাভপুর ব্লকের গ্রামগুলির উপস্থিতি ছিল। এবছর আমরা বেছে নিয়েছি এই জেলার বোলপুর ও নানুর ব্লকের গ্রামগুলিকে। যদিও গত সপ্তাহে তুলে ধরা হয়েছিল বোলপুর ব্লকের গ্রামগুলি।
হাটসেরান্দী : বীরভূম জেলার সবচেয়ে বেশি পটের দুর্গা রয়েছে নানুর ব্লকের হাটসেরান্দী গ্রামে। বোলপুর-পালিতপুর হাটসেরান্দীর মোড় থেকে অটো বা টোটো যোগে যাওয়া যাবে এই গ্রামে। এখানে গোটা গ্রামটিতে দুর্গা পুজো হয়ে থাকে ২৪টি। এর মধ্যে ৭টিই পটের দুর্গা। এগুলি পুজো করে থাকে চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায়, রায়, ঘোষ, পাল ও ২টি মণ্ডল পরিবার। যদিও পূর্বে এখানে সবগুলি দুর্গা-ই পটের ছিল।
কিন্তু একটি গ্রামে এতগুলি পটের দুর্গার রমরমা কেন? জানা গিয়েছে, সেসময়ে বারংবার বর্গি আক্রমণ ও প্লাবনের আশঙ্কা ছিল এখানে। এছাড়াও মাটির প্রতিমা নির্মাণের খরচও ছিল অনেক। তাই সবদিক বিবেচনা করে পটের দুর্গাকেই গ্রহণ করেছিলেন পুজো উদ্যোক্তারা। পটের দুর্গা অঙ্কনে খরচ তুলনামূলক কম। তাছাড়া একবার অঙ্কনের পর তা দীর্ঘদিন রেখেও দেওয়া সম্ভব।
গ্রামে সবগুলি পটের পুজোর বয়স গড়ে প্রায় ১৫০-২০০ বছর। এখানে পাল পরিবারের পটের দুর্গা কখনও বিসর্জন দেওয়া হয় না। চট্টোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গা পুজোর পর এক বছর রেখে দেওয়া হয় মন্দিরে। তবে অন্য পটগুলি বিসর্জন হয়ে যায় দশমীর দিনে।
কুরম্বঘোষ : ঘোষ পদবীধারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় সম্ভবত গ্রামটির নাম দেওয়া হয়েছে কুরম্বঘোষ। বোলপুর-পালিতপুর সড়কের বঙ্গছত্র বাস স্টপে নেমে যেতে হয় এই গ্রামে। এখানকার মুখোপাধ্যায় পরিবার প্রায় ৪৫০ বছর ধরে পটের দুর্গার আরাধনা করে আসছে। বর্তমানে যে মন্দিরে দুর্গা পুজো করা হয়, অতীতে সেখানেই নাকি ছিল এক চতুষ্পাঠী টোল, দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা। এই গ্রামের রীতি অনুযায়ী, গ্রামের বাকি পুজোগুলি শুরু হয় মুখোপাধ্যায় পরিবারের পুজো শুরু হওয়ার পর।