সম্প্রতি ইরাকের একদল প্রত্নতাত্ত্বিক সেদেশের একটি সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছেন, তারা প্রাচীন একটি মদ বা ওয়াইন তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছেন। যেটি অন্তত ২৭০০ বছরের পুরনো। আর এই কারখানাটি চালু করেছিল অ্যাসিরিয় সভ্যতার কোনও একজন রাজা। এমনিতেই অ্যাসিরিয় সভ্যতা ছিল ইরাকের প্রাচীন সভ্যতাগুলির সর্বাধুনিক। ঐতিহাসিকদের অনুমান অনুযায়ী এই সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ সাল থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৬০৫ সাল পর্যন্ত।

অনলাইন পেপার : প্রাচীন যুগেও যে মদ ছিল একটি জনপ্রিয় পানীয়, তার প্রমাণ বহুবারই পেয়েছেন ঐতিহাসিকেরা। সেযুগে উত্তেজক এই পানীয়টি কি পদ্ধতিতে তৈরি করা হত, তারও প্রমাণ তারা পেয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আবিষ্কারও হয়েছে একাধিক প্রাগৈতিহাসিক মদ তৈরির কারখানা। এবার সেই সংখ্যায় নতুন করে যুক্ত হল আরও একটি নাম।
সম্প্রতি ইরাকের একদল প্রত্নতাত্ত্বিক সেদেশের একটি সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছেন, তারা প্রাচীন একটি মদ বা ওয়াইন তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছেন। যেটি অন্তত ২৭০০ বছরের পুরনো। আর এই কারখানাটি চালু করেছিল অ্যাসিরিয় সভ্যতার কোনও একজন রাজা।
এমনিতেই অ্যাসিরিয় সভ্যতা ছিল ইরাকের প্রাচীন সভ্যতাগুলির সর্বাধুনিক। ঐতিহাসিকদের অনুমান অনুযায়ী এই সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ সাল থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৬০৫ সাল পর্যন্ত। তাদের রাজধানী আসুর-এর অবস্থান ছিল টাইগ্রিস নদীর প্রায় ৩২২ কিলোমিটার উত্তরে। সেসময়ের সর্বাধুনিক লৌহ সমরাস্ত্রে সজ্জিত ছিল এই সভ্যতার সেনারা। তারা ঘোড়ায় চড়ার কৌশলও বেশ ভালোভাবেই আয়ত্ত করেছিল।
বিজ্ঞান চিন্তায়ও অ্যাসিরিয় সভ্যতার মানুষেরা ছিল বেশ উন্নত। একাধিক ঐতিহাসিক দাবি করেন, এই সভ্যতার মানুষেরাই সর্বপ্রথম বৃত্তকে ৩৬০ ডিগ্রী হিসাবে ভাগ করেছিল। এছাড়াও ঐতিহাসিকদের দাবি অনুসারে, পৃথিবীর সর্বপ্রথম অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণয় নাকি অ্যাসিরিয় সভ্যতার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা-ই করেছিলেন। এই সভ্যতার চিকিৎসা বিজ্ঞানও ছিল বেশ উন্নত।
তবে ঐতিহাসিকদের মতে, অ্যাসিরিয় সভ্যতার মানুষেরা ছিল অনেক বেশি নিষ্ঠুর। একে অপরকে ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গেও তারা যুক্ত থাকত। এমনকি অপরাধীর শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়াও ছিল বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে শাস্তি স্বরূপ অঙ্গহানির বিধান ছিল এই সভ্যতায়। তাই কোনও কোনও ঐতিহাসিকের দাবি, এই নিষ্ঠুর কার্যকলাপই নাকি অ্যাসিরিয় সভ্যতার পতনের মূল কারণ ছিল।
খননকার্যের সময় ইরাকের ওই প্রত্নতাত্ত্বিক দলটি চুনা পাথরের পাহাড় কেটে নির্মিত ১২টি খালের সন্ধান পান। যেগুলি দৈর্ঘ্যে ছিল ৫ মিটার ও প্রস্থে ছিল ২ মিটার। ঐতিহাসিকদের দাবি, রাজা সেনেরিবের সময়ে এই খালগুলি কাটা হয়েছিল মূলত কৃষিকাজে জল সরবরাহের জন্য।
আর ঠিক এরই সঙ্গে আবিস্কার হয়েছে একটি ওয়াইন তৈরির কারখানা। তাঁদের অনুমান, এই কারখানাটি প্রায় ২৭০০ বছরের পুরনো। তাঁরা আরও অনুমান করছেন, এখানে মদ তৈরি হত সাধারণত আঙুরের রস থেকে। এখানে ১৪টি পাত্র পাওয়া গিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পাত্রগুলি মদ বা ওয়াইন তৈরির সময় ব্যবহার করা হত।