৪ দিন ধরে চলা সৃজনী শিল্পগ্রামের পরিচালিত এই লোকউৎসবে শান্তিনিকেতনে আগত দর্শকদের চোখে পড়বে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের আদিবাসী ঘরানার বিভিন্ন লোকশিল্পের কারুকার্যের প্রদর্শনী। ওই ৪ দিনের প্রত্যেকদিনই প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে বিকাল ৫টার পর থেকে। এই উৎসবে দেখতে পাওয়া যাবে ঝাড়খণ্ডের উপজাতি নৃত্য ও কৃষ্টির এক অনন্য প্রদর্শন। প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে ছিল পাঁচটি লোকনৃত্যের সমাহার। |

বিজয় ঘোষাল : বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনের সৃজনী শিল্পগ্রামে এবার শুরু হয়েছে ঝাড়খণ্ডের জনজাতি উৎসব। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে ঝাড়খণ্ডের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার আরও একবার প্রচেষ্টা চালিয়েছে সৃজনী। পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে এই উৎসব শুরু হয়েছে ২৫ সেপ্টেম্বর। উৎসব চলবে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পারম্পরিক আদিবাসী তথা জনজাতির নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি বিষয়ক পরিবেশ।
পূর্ব ভারতের অন্যতম রাজ্য এই ঝাড়খণ্ড। রাজ্যটি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার একেবারেই পশ্চিম লাগোয়া। তাই ওই রাজ্যের আদিবাসী জনজীবনের সঙ্গে এই জেলার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। সেই সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই দুই অঞ্চলের জীবনসংগ্রামের শিল্পসত্তা। যা এবার একই মঞ্চে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে সৃজনী শিল্পগ্রাম।
অন্যদিকে করোনা অতিমারি আবহে বহু শিল্পী এখন প্রায় গৃহবন্দি হয়ে কর্মহীনভাবে দিনযাপন করছেন। তাঁদের শিল্পসত্তা ও কৃষ্টির প্রদর্শন যেন থমকে গিয়েছে এক লহমায়। যদিও করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তাই ওই শিল্পীরা পুনরায় নিজেদের শিল্পসত্তা ও কৃষ্টি প্রদর্শনে চেষ্টা শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে লড়াই করছেন নতুন করে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে।
৪ দিন ধরে চলা সৃজনী শিল্পগ্রামের পরিচালিত এই লোকউৎসবে শান্তিনিকেতনে আগত দর্শকদের চোখে পড়বে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের আদিবাসী ঘরানার বিভিন্ন লোকশিল্পের কারুকার্যের প্রদর্শনী। ওই ৪ দিনের প্রত্যেকদিনই প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে বিকাল ৫টার পর থেকে। এই উৎসবে দেখতে পাওয়া যাবে ঝাড়খণ্ডের উপজাতি নৃত্য ও কৃষ্টির এক অনন্য প্রদর্শন।
প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে ছিল পাঁচটি লোকনৃত্যের সমাহার। এর মধ্যে ছিল গুরু তপনকুমার পট্টনায়ক-এর নেতৃত্বে ‘সরাইকেল্লা ছৌ’, কিশোর নায়েকের নেতৃত্বে ‘মারদানি ঝুমুর’ ও ‘জনানি ঝুমুর’, সুনিতা কিডো-র নেতৃত্বে ‘খারিয়া নৃত্য’, গুলাপ সিং মুন্ডা-র নেতৃত্বে ‘পাইকা নৃত্য’ এবং বিশ্বদেব মাহাতোর নেতৃত্বে ‘নাটুয়া নৃত্য’।
অন্যদিকে প্রদর্শিত হওয়া হস্তশিল্পের মধ্যে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের জনজাতির নিজস্ব হাতে বোনা গামছা, বাদ্যযন্ত্র, সোহরাই চিত্র, মুখোশ, বাঁশের কাজ এবং আরও অসংখ্য শিল্প সামগ্রী। এছাড়াও সৃজনী শিল্পগ্রামে আগত দর্শকদের জন্য থাকছে ঝাড়খণ্ডের ধুস্কা, ডুম্বু, মারওয়া রোটি, ডাল পিঠা, উড়ত ডাল প্রভৃতি খাদ্য সমূহ।
সৃজনী শিল্পগ্রামের আধিকারিক অমিত অধিকারী জানালেন, প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের জনজাতির হারিয়ে যেতে বসা লোকসংস্কৃতিকে তুলে ধরতেই মূলত তাদের এই উদ্যোগ।