রামনগর মুর্শিদাবাদ সীমান্তবর্তী বীরভূমের একটি প্রান্তিক গ্রাম। গ্রামটিতে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ও রয়েছে। যেখানে বীরভূমের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ থেকেও অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী পঠন-পাঠন করতে আসে। গ্রামের বাসিন্দা সহ এই ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই গ্রামটিতে একটি গ্রন্থাগার অতি আবশ্যিক ছিল এতদিন। গত ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন সেই আশা যেন পূরণ হল বলে মনে করছেন গ্রামবাসীরা। |

বিশ্বজিৎ ঘোষ : এর আগে মূয়রেশ্বর ২ ব্লকের রামনগর গ্রামে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি শিশুপাঠ্য, কিশোরপাঠ্য বা বয়স্ক উপযোগী বিনোদনমূলক বইয়ের কোনও গ্রন্থাগার ছিল না। বইপ্রেমীদের বই পাঠের জন্য যেতে হত প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরবর্তী ন’পাড়া গ্রামে। অন্যদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে প্রায় সমস্ত সরকারি গ্রন্থাগার সাময়িক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদেরও যেন বই পড়ার অভ্যাস ক্রমে কমে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন এই গ্রামটিতে উদ্বোধন হল একটি গ্রামীণ গ্রন্থাগার-এর। গ্রন্থাগারটি গড়ে তুলতে সম্পূর্ণভাবে সাহায্য করেছে ‘দিশা’।
রামনগর মুর্শিদাবাদ সীমান্তবর্তী বীরভূমের একটি প্রান্তিক গ্রাম। গ্রামটিতে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ও রয়েছে। যেখানে বীরভূমের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ থেকেও অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী পঠন-পাঠন করতে আসে। গ্রামের বাসিন্দা সহ এই ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই গ্রামটিতে একটি গ্রন্থাগার অতি আবশ্যিক ছিল এতদিন। গত ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন সেই আশা যেন পূরণ হল বলে মনে করছেন গ্রামবাসীরা। শিক্ষক ও বইপ্রেমী মানুষদের দান করা বইয়ে এদিন উদ্বোধন হল এই গ্রামীণ গ্রন্থাগারের। যদিও গ্রান্থাগার স্থাপনের যাবতীয় উদ্যোগ নিতে দেখা গেল ওই গ্রামেরই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘দিশা’-কে।
এর আগে উদ্যোক্তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রন্থাগার স্থাপনের জন্য নতুন ও পুরাতন বই দান করার আবেদন জানিয়েছিলেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে। সেই ডাকে যথেষ্ট সাড়াও পেয়েছেন তাঁরা। এই গ্রন্থাগারের জন্য বই দান করে সাহায্য করেছেন রামনগর সাহোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধ্রুবজ্যোতি দত্ত, বেড়গ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকা প্রতিভা গাঙ্গুলী, রজতপুর ইন্দ্রনারায়ণ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক দীপ নারায়ণ দত্ত, রামনগর অঞ্চলের পুস্তক ব্যবসায়ী বিল্টু মুখোপাধ্যায় সহ আরও অনেকেই। প্রায় ৫০০টি বই নিয়ে শুরু হয়েছে গ্রন্থাগারটির পথ চলা। এদিন গ্রন্থাগার উদ্বোধন করেন স্থানীয় শিক্ষক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়।
রামনগর বাসিন্দা রিম্পা চন্দ্র জানালেন, “আমাদের গ্রামে এর আগে কোনও লাইব্রেরি না থাকায় গল্পের বই পাঠে অসুবিধা ছিল। ন’পড়ার লাইব্রেরি বাড়ি থেকে অনেক দূরে হওয়ায় নিয়মিত সেখানে গিয়েও বই পড়া সম্ভব ছিল না। পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি গল্পের বই সামাজিক ও নৈতিক বিকাশে সাহায্য করে। রামনগরে নতুন লাইব্রেরি হওয়ায় এখন থেকে নিয়মিত বই পড়া সম্ভব হবে।” অন্যদিকে এই ঘটনায় ন’পড়ার বাসিন্দারাও খুশি। ন’পাড়া গ্রন্থাগারের সদস্য ধৃতিদেব মন্ডল ও রত্নদীপ গঁড়াই রামনগর গ্রন্থাগারের সঙ্গেও সম্পর্ক রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ‘দিশা’-র কর্ণধার চিত্তরঞ্জন গড়াই জানালেন, এখন স্বল্প সংখ্যক বই নিয়ে রামনগর গ্রন্থাগারের পথ চলা শুরু হলেও পরে তাঁরা আরও বই সংগ্রহ করবেন এই গ্রন্থাগারের জন্য।