সবদিক বিচার করেই এক অভিনব উপায় বের করেছে FBDOI-WB ও বীরভূম ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের রক্ত সঞ্চালন পরিষদের সহযোগিতায় তারা যৌথ উদ্যোগে চালু করেছে ভ্রাম্যমাণ রক্তদান শিবির। এই শিবিরটির আয়োজন করা হয়েছে মূলত একটি অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমাণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাসের মাধ্যমে। এই ধরণের বাসে একই সঙ্গে ৩ জন রক্তদাতা রক্তদান করতে পারেন। |

বিজয় ঘোষাল : কয়েক মাস আগেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতে থমকে গিয়েছিল জেলা জুড়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে করোনার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি আবার জেলা জুড়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে শুরু করেছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন ক্লাব বা সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী তরুণ-তরুণীরা।
বীরভূম জেলায় এমনিতেই সারা বছর জুড়ে একাধিক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে থাকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। করোনা পরিস্থিতির মাঝে এই শিবিরগুলি সাময়িক বন্ধ থাকায় জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে এখন রক্ত সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। যদিও করোনা পরিস্থিতি থেকে এখনও পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া যায়নি। তার উপর বর্ষার মরশুমে একের পর এক নিম্নচাপ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
তাই সবদিক বিচার করেই এক অভিনব উপায় বের করেছে FBDOI-WB ও বীরভূম ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের রক্ত সঞ্চালন পরিষদের সহযোগিতায় তারা যৌথ উদ্যোগে চালু করেছে ভ্রাম্যমাণ রক্তদান শিবির। এই শিবিরটির আয়োজন করা হয়েছে মূলত একটি অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমাণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাসের মাধ্যমে। এই ধরণের বাসে একই সঙ্গে ৩ জন রক্তদাতা রক্তদান করতে পারেন।
ইতিমধ্যে বাসটি বীরভূমের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিভ্রমণ করে রক্ত সংগ্রহ করা শুরু করে দিয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর তারা পৌঁছে যায় সাঁইথিয়া ব্লকের আমোদপুর সন্নিহিত ইসলামপুর গ্রামে। সেখানে তাদের সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন আমোদপুর ও ইসলামপুরের একদল যুবক। এদিন জেলা সদর সিউড়ি থেকে সকাল ১০ নাগাদ ওই অত্যাধুনিক বাতানুকূল বাসটি এসে পৌঁছায় ইসলামপুর।
উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, বর্ষার মরশুমে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা তাঁদের কাছে অত্যন্ত কষ্টকর। তবে এই ধরণের বাতানুকূল বাসে আয়োজন করা বেশ স্বচ্ছন্দের। আয়োজন সংস্থার পক্ষ থেকে মানোয়ার শেখ ও মোহাম্মদ শাহিন জানালেন, এদিনের শিবিরে ১০ জন ব্যক্তি রক্ত দান করেছেন। এই দশজনের মধ্যে একজন মহিলা দাতাও ছিলেন। তাঁরা আরও জানালেন, এদিন রক্তদানের পর প্রত্যেক রক্তদাতাকে শংসাপত্র সহ রক্তদানে উৎসাহ যোগাতে একটি করে স্মারক তুলে দেওয়া হয়েছে।
ইসলামপুরের পর এদিন বাসটি সাঁইথিয়ার ছত্রিপাড়া ও সলপা-তেও পৌঁছে যায়। ছত্রিপাড়ায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে ছত্রিপাড়া নারী শক্তি কমিটি। সব মিলিয়ে এদিন মোট ৩৮ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করতে পেরেছে অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমাণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এই বাসটি।