‘ইগ নোবেল’ পাওয়া রবিন রেটক্লিফ ও তাঁর সাথীদের গবেষণার বিষয় ছিল, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় কোনও প্রাণীকে উলটো করে ঝুলিয়ে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের উপর কোনও প্রভাব পরে কিনা। এক্ষেত্রে তাঁরা প্রাণী হিসাবে গণ্ডার ব্যবহার করেছেন। গবেষণাটি হাস্যকর হলেও এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওই অবস্থায় গণ্ডার বরং অনেক বেশি সুস্থ থাকে। |

অনলাইন পেপার : ‘নোবেল’ কিন্তু ‘নোবেল’ নয়। তবে ‘নোবেল’ শব্দটি এখানে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করা হয়েছে। আর এই পুরস্কারটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইগ নোবেল’। যা এবছর পরিবেশ, জীববিজ্ঞান, চিকিৎসাশাস্ত্র, রসায়ন, শান্তি, অর্থনীতি, পরিবহণ, গণিতবিদ্যা, কীটতত্ত্ব, পদার্থ বিজ্ঞান এই রকম মোট ১০টি বিষয়ের উপর দেওয়া হয়েছে।
এখানে ‘ইগ নোবেল’ কোনও বিখ্যাত পুরস্কার নয়। তবে বিশ্ব জুড়ে এটি কোনও অপরিচিত পুরস্কারও নয়। বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা চলাকালে অনেক সময় মজা ও হাস্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তার মধ্য থেকেই সেরা হাস্যকর ও গভীর তাৎপর্যের উপর বিচার করেই প্রতি বছর দেওয়া হয় এই ‘ইগ নোবেল’ নামের আন্তর্জাতিক পুরস্কারটি। তবে সাধারণভাবে গবেষণার বিষয় বা পদ্ধতিগুলি যতই মজা বা হাস্যকর হোক না কেন, গবেষণার দিকগুলি খুঁটিয়ে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারা যায়, সেগুলি মোটেও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। বরং রীতিমতো ভাবিয়ে তুলবে সবাইকে।
‘ইগ নোবেল’ পুরস্কারটি আয়োজন করে থাকে ‘এ্যানালস অব ইমপ্রোব্যাবল রিসার্চ’ নামের একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা। এই অনুষ্ঠান প্রথম আয়োজন করা হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। তবে পরে এটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যান্ডার্স রুমে। প্রতি বছর এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন প্রাক্তন আসল নোবেল জয়ীরা।
তবে যেহেতু এবছর করোনা মহামারীতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে সমগ্র বিশ্ব। তাই এবারের ‘ইগ নোবেল’ দেওয়া হয়েছে অনলাইনে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, এবছর ‘ইগ নোবেল’ প্রদান অনলাইন ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোবেল জয়ী ফ্রান্সে আর্নল্ড (রসায়ন, ২০১৮), এরিক ম্যাসকিন (অর্থনীতি, ২০০৭) ও কার্ল অয়েম্যান (পদার্থ বিজ্ঞান, ২০০১)।
আরও পড়ুন :
- এবার কীটনাশকের বিরুদ্ধেও লড়তে সক্ষম হচ্ছে আরশোলা
- সাবধান! আসছে সৌর ঝড়, তীব্র বিঘ্ন ঘটতে পারে ইন্টারনেট পরিষেবায়
- জালে উঠে এল নীল রঙের বিরল গলদা চিংড়ি
এবারের ‘ইগ নোবেল’ পুরস্কার পেয়েছেন, লেটসা সাটারি ও তাঁর সাথীরা (পরিবেশ), সুজান শটৎস (জীববিজ্ঞান), ওলকাই চেম বুলুট ও তাঁর সাথীরা (চিকিৎসাশাস্ত্র), ইয়র্গ ভিকার ও তাঁর সাথীরা (রসায়ন), এথান বেসারিস ও তাঁর সাথীরা (শান্তি), পাবলো ব্লাভাটস্কি (অর্থনীতি), রবিন রেটক্লিফ ও তাঁর সাথীরা (পরিবহণ), হিসাসি মুরাকামি ও তাঁর সাথীরা (গণিতবিদ্যা), জন মালরেনান ও তাঁর সাথীরা (কীটতত্ত্ব) এবং আলেসান্দ্রো করবেটা ও তাঁর সাথীরা (পদার্থ বিজ্ঞান)।
এখানে এই সমস্ত গবেষকদের গবেষণার বিষয় ও পদ্ধতিগুলি আপাতভাবে মজার ও হাস্যকর বলে মনে হলেও তা ছিল গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। এই যেমন পরিবহণে ‘ইগ নোবেল’ পাওয়া রবিন রেটক্লিফ ও তাঁর সাথীদের গবেষণার বিষয় ছিল, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় কোনও প্রাণীকে উলটো করে ঝুলিয়ে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের উপর কোনও প্রভাব পরে কিনা। এক্ষেত্রে তাঁরা প্রাণী হিসাবে গণ্ডার ব্যবহার করেছেন। গবেষণাটি হাস্যকর হলেও এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওই অবস্থায় গণ্ডার বরং অনেক বেশি সুস্থ থাকে।