যুক্তরাজ্যে এই প্রজাতির বাদুড় রয়েছে ২৬০০-রও বেশি। দীর্ঘদিন ধরেই লন্ডনে এদের স্বভাব, গতিপ্রকৃতি, বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস নিয়ে চলছিল বিস্তর গবেষণা। সম্প্রতি তারই একটি ‘নাথুসিয়াস পিপিস্ট্রেল’-কে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল গবেষণার কাজে। অবশেষে ১২০০ মাইল বা প্রায় ২০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাশিয়ায় পৌঁছে যেতে সক্ষম হয় সেটি। এবং সেখানেই একটি বিড়ালের হাতে তার মৃত্যু ঘটে। |

অনলাইন পেপার : বাদুড় সমাজের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম প্রজাতি এটি। জীববিজ্ঞানীরা এই প্রজাতিটির নাম দিয়েছেন ‘নাথুসিয়াস পিপিস্ট্রেল’। এর আকার একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের বুড়ো আঙুলের সমান মাত্র। ওজন প্রায় ৮ গ্রাম। এত ক্ষুদ্র প্রাণীটিকে অনেকেই একটি বড়ো-সড়ো পোকা বলে ভুল করতে পারেন। কিন্তু খুব ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারা যাবে, এটি আসলে কোনও পোকা নয়, আর পাঁচটা প্রাণীর মতোই এটি একটি স্তন্যপায়ী।
যুক্তরাজ্যে এই প্রজাতির বাদুড় রয়েছে ২৬০০-রও বেশি। দীর্ঘদিন ধরেই লন্ডনে এদের স্বভাব, গতিপ্রকৃতি, বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস নিয়ে চলছিল বিস্তর গবেষণা। সম্প্রতি তারই একটি ‘নাথুসিয়াস পিপিস্ট্রেল’-কে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল গবেষণার কাজে। অবশেষে ১২০০ মাইল বা প্রায় ২০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাশিয়ায় পৌঁছে যেতে সক্ষম হয় সেটি। এবং সেখানেই একটি বিড়ালের হাতে তার মৃত্যু ঘটে।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, বাদুড়টির মৃত্যুর ঘটনা প্রথমে নজরে পরে সভেৎলানা লাপিনা নামের একজন ভদ্রমহিলার। রাশিয়ার মলগিনো গ্রামে একটি বিড়ালের হাতে তাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। ওই ভদ্রমহিলা দেখতে পান বাদুড়টির ডানায় একটি রিং আটকানো রয়েছে, তাতে ইংরেজি ভাষায় লেখা রয়েছে ‘লন্ডন চিরিয়াখানা’। পরে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে বাদুড়ের গতিবিধি নজরে রাখতে এই রিংটি লাগানো হয়েছিল।
এই বিশ্বে বাদুড়ই একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী, যারা মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াতে পারে। তবে দিনের আলোতে নয়, রাতের অন্ধকারকেই বেছে নেয় তারা ওড়ার জন্য। তাদের দৃষ্টিশক্তি অত্যন্ত ক্ষীণ। শুধুমাত্র শ্রবণ আর অনুভূতি ক্ষমতার উপর নির্ভর করেই তারা চলন ও গমন কার্য চালিয়ে থাকে। এব্যাপারে রাতের অন্ধকারে ওড়ার সময় তারা মুখ দিয়ে অনবরত শব্দ করতে থাকে। যার তরঙ্গ হার ২০ কিলোহার্টজ। সামনে থাকা কোনও পদার্থে প্রতিহত হয়ে সেই তরঙ্গ ফিরে এলে তারা বুঝতে পারে তাদের বর্তমান অবস্থান আসলে কোথায়। বর্তমানে ১৩০০ প্রজাতির বাদুড় রয়েছে এই পৃথিবীতে। যাদের মধ্যে ৭০ ভাগই মাংসাশী বা পতঙ্গভুক। বাকিরা শাকাহারি।
তবে ২০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ‘নাথুসিয়াস পিপিস্ট্রেল’ এবারই প্রথম বারের জন্য রেকর্ড গড়েনি। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে অপর আর একটি ‘নাথুসিয়াস পিপিস্ট্রেল’ বাদুড় লাটভিয়া থেকে স্পেনে উড়ে এসেছিল প্রায় ২২২৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে।