বাঁকুড়ার হাটগ্রামের শঙ্খশিল্পীদের নিয়ে কর্মশালা হয়ে গেল শান্তিনিকেতনের সৃজনীতে

Advertisement
বাঁকুড়ার শঙ্খ শিল্পের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাদের সময়কালে সূত্রপাত হয়েছিল এই শিল্পের। শঙ্খ শিল্পের কাঁচামাল আসে মূলত চেন্নাই থেকে। তবে বাঁকুড়ার হাটগ্রামের শিল্পীদের এই কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হয় কলকাতা ও খড়্গপুরের মহাজনদের কাজ থেকে। এরপর শঙ্খ বা শাঁখগুলিকে অসীম ধৈর্য্য ও শৈল্পিক নিপুণতায় আলাদা আলাদা আকারে কাটিং করে পলিশ করতে হয়।
বাঁকুড়ার হাটগ্রামের শঙ্খশিল্পীদের নিয়ে কর্মশালা হয়ে গেল শান্তিনিকেতনের সৃজনীতে

বিজয় ঘোষাল : বাংলার যে কয়েকটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প রয়েছে, তার মধ্যে শাঁখ বা শঙ্খশিল্প অন্যতম। এই শাঁখ বা শঙ্খ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে অতি প্রাচীনকাল থেকেই ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আজও যে কোনও পুজো-পার্বন বা সামাজিক রীতিনীতিতে শাঁখের ব্যবহার অপরিহার্য। এছাড়াও শঙ্খশিল্পের অন্যতম উপাদান ‘শাঁখা’ হিন্দু বিবাহিত মহিলাদের অতি আবশ্যিক উপাদান।

বাংলার এই শঙ্খশিল্পের অন্যতম পীঠস্থান বাঁকুড়া জেলার হাটগ্রাম। সদর শহর বাঁকুড়া থেকে যার দূরত্ব ২ ঘন্টার। এখানেই তিনশোরও বেশি শিল্পী এই শঙ্খশিল্পের সাথে যুক্ত রয়েছেন বংশানুক্রমে। শিল্পীরা এখানে তাঁদের নিপুণ দক্ষতায় শাঁখের ওপর ফুটিয়ে তোলেন মহাভারত ও রামায়ণ সহ নানান পৌরাণিক কাহিনীচিত্র।

এই হাটগ্রামের শিল্পীদের নিয়ে এবার শঙ্খশিল্পের প্রসার ও ঐতিহ্য বিষয়ে শান্তিনিকেতনের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের সৃজনী শিল্পগ্রামে ৭ দিনের একটি বিশেষ কর্মশালার আয়োজন হয়েছিল। কর্মশালা চলেছিল ২৫ জুলাই থেকে ৩১ পর্যন্ত। এবারের কর্মশালায় বাঁকুড়ার হাটগ্রাম থেকে সুবোধ দত্ত, বাবলু নন্দী, প্রশান্ত নন্দী, নিমাই নন্দী সহ পাঁচজন শঙ্খ শিল্পী অংশগ্রহণ করতে এগিয়ে এসেছিলেন।

তাঁরা একত্রে মিলিত হয়ে শুভ্র শঙ্খের ওপর খোদাই করে তৈরি করেছেন বিভিন্ন ধরনের কারুকৃতি। কোথাও বা দুর্গা মূর্তি, কোথাও কালীমূর্তি, কোথাও বা রাধা কৃষ্ণ। এভাবেই একের পর এক শঙ্খের ওপর ফুটিয়ে তুলেছেন নানান দেবদেবী এবং একাধিক পৌরানিক চিত্র।

পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতিকেন্দ্রের অধিকর্তা গৌরী বসু ২৫ জুলাই এই কর্মশালার উদ্বোধন করেন এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী ক্ষেত্রে শঙ্খ শিল্প যেন আরও বেশি মাত্রায় সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিস্তার লাভ করতে পারে। মানুষের আগ্রহ শঙ্খ শিল্পের উন্নতি সাধনে এক অনন্য মাত্রা গ্রহণ করুক।

কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে আসা শিল্পী বাবলু নন্দী জানালেন, বাঁকুড়ার শঙ্খ শিল্পের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাদের সময়কালে সূত্রপাত হয়েছিল এই শিল্পের। শঙ্খ শিল্পের কাঁচামাল আসে মূলত চেন্নাই থেকে। তবে বাঁকুড়ার হাটগ্রামের শিল্পীদের এই কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হয় কলকাতা ও খড়্গপুরের মহাজনদের কাজ থেকে। এরপর শঙ্খ বা শাঁখগুলিকে অসীম ধৈর্য্য ও শৈল্পিক নিপুণতায় আলাদা আলাদা আকারে কাটিং করে পলিশ করতে হয়।

Advertisement
Previous articleদেরিয়া গ্রামের পদ্ম পুকুরে আজও রয়েছে যকভীতি
Next articleরেকর্ড গড়ে রাশিয়ান বিড়ালের হাতে মারা পড়ল সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম বাদুড়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here