এর আগে সর্বপ্রথম সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের কাজের বিবৃতি দিয়ে, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাহায্য নিয়ে শুরু করেছিলেন তাঁদের তহবিল গঠনের কাজ। পরে এই সমাজ মাধ্যমকে ব্যবহার করে আমোদপুর ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলে কোভিড আক্রান্ত মানুষদের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চালু করেন হেল্পলাইন নাম্বার। হেল্প লাইন নম্বর মারফত গাড়ি করে রোগীদের পৌঁছে দিতে থাকেন নির্দিষ্ট হাসপাতালে। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি |

বিজয় ঘোষাল : এঁরা অনেকেই কলেজ পড়ুয়া। অথবা এঁদের অনেকেই কলেজ জীবন শেষ করেছেন সবেমাত্র। বয়স প্রত্যেকেরই প্রায় চব্বিশ থেকে ছাব্বিশ। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে লকডাউন চলছে এখন সমগ্র বঙ্গদেশ জুড়ে। তাই যাবতীয় বিধিনিষেধের কারণে প্রায় প্রত্যেকদিনই কাজ হারাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের অনেকেই আবার প্রান্তিক অঞ্চলের বাসিন্দা।
ঠিক এই অবস্থায় হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারেননি ওই কলেজ পড়ুয়ারা। প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের মতোই একে একে সদ্য ‘কাজহারা’-দের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। আমোদপুরের মতো শহরে করোনা আবহে মানুষের পাশে থাকার উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয় তাঁদের প্রাথমিক চিন্তা-ভাবনা। সেই চিন্তা-ভাবনাকে পাথেয় করে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করে চলেছেন এঁরা।
এর আগে সর্বপ্রথম সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের কাজের বিবৃতি দিয়ে, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাহায্য নিয়ে শুরু করেছিলেন তাঁদের তহবিল গঠনের কাজ। পরে এই সমাজ মাধ্যমকে ব্যবহার করে আমোদপুর ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলে কোভিড আক্রান্ত মানুষদের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চালু করেন হেল্পলাইন নাম্বার। হেল্প লাইন নম্বর মারফত গাড়ি করে রোগীদের পৌঁছে দিতে থাকেন নির্দিষ্ট হাসপাতালে। এছাড়াও জরুরি মাধ্যমে সরবরাহ করতে থাকেন অক্সিজেন ও সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধও।
এবার তাঁদেরকেই লকডাউনের বিধিনিষেধের কারণে আটকে পড়া দুঃস্থ, ভবঘুরে প্রান্তিক ও কাজহারাদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল। এঁদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বভারতীর ছাত্র সুদীপ্ত হাজরা, বিব্রসু প্রামানিক, সায়নী দত্ত, প্রীতি সাহা ও ফার্মাসি পড়ুয়া ভাস্কর দত্ত সহ আরও অনেকেই।
তাঁরা প্রত্যেকদিন দুপুরে আমোদপুর স্টেশন ও স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় মানুষের হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন বিনামূল্যে মধ্যাহ্নকালীন আহার। এক্ষেত্রে রান্নার দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদেরই কয়েকজন সহযোগী। রান্নার পর খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে যাচ্ছে তাঁদের হাতে হাতে।
দলের পক্ষ থেকে বিব্রসু প্রামানিক ও ভাস্কর দত্ত জানালেন, করোনা আবহে ওই সমস্ত প্রান্তিক মানুষের পাশে থেকে সহনাগরিকের কর্তব্য পালন করছে তাঁরা। আগামী দিনে তাঁদের পরিকল্পনা, কোভিড আক্রান্ত ও কোভিড থেকে সেরে ওঠা মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটা লক্ষ্য রাখবেন।