এমনিতেই উড়িষ্যার কেন্দ্রপাড়া জেলার গহিনমাথা বেশ নির্জন একটি সমুদ্র সৈকত। বিলুপ্তপ্রায় অলিভ রিডলে প্রায় প্রতি বছরই ডিম পাড়ার মরশুমে এই সৈকতকেই বেছে নিয়ে থাকে। গভীর সমুদ্র থেকে ঝাঁক বেঁধে ধীরে ধীরে একের পর এক কিনারায় উঠে আসে মা কচ্ছপেরা। তারপর ডিম পেড়ে বালি চাপা দিয়ে তারা আবার ফিরে যায় সমুদ্রের নোনা জলে। গত ২৫ এপ্রিল থেকে সেই ডিম ফুটে বাচ্চা বেরুতে শুরু করে। যা এখন প্রায় শেষের দিকে। |

অনলাইন পেপার : ভারতের একদিকে যেমন করোনা সংক্রমণ প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে হাজার হাজার মানুষের। স্বজন হারাদের বুক ফাটা আর্তনাদে বারংবার কেঁপে উঠছে দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। অপরদিকে ঠিক এই সময়েই প্রায় দেড় কোটি অলিভ রিডলে জন্ম নিল এই ভারতেরই একটি নির্জন সমুদ্র সৈকতে। তাদের নিঃশব্দ বিচরণে যেন প্রাণের স্পন্দন বাজছে সৈকতের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমুদ্রের কিনারা ছুঁয়ে সারাক্ষণই নড়েচড়ে বেড়াচ্ছে সেই সব সদ্য জন্ম নেওয়া অলিভ রিডলের ছানারা। এ যেন নতুন করে জেগে ওঠার আদর্শ পুনরাবৃত্তি।
এমনিতেই উড়িষ্যার কেন্দ্রপাড়া জেলার গহিনমাথা বেশ নির্জন একটি সমুদ্র সৈকত। বিলুপ্তপ্রায় অলিভ রিডলে প্রায় প্রতি বছরই ডিম পাড়ার মরশুমে এই সৈকতকেই বেছে নিয়ে থাকে। গভীর সমুদ্র থেকে ঝাঁক বেঁধে ধীরে ধীরে একের পর এক কিনারায় উঠে আসে মা কচ্ছপেরা। তারপর ডিম পেড়ে বালি চাপা দিয়ে তারা আবার ফিরে যায় সমুদ্রের নোনা জলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ এপ্রিল থেকে সেই ডিম ফুটে বাচ্চা বেরুতে শুরু করে। যা এখন প্রায় শেষের দিকে। ইতিমধ্যেই ডিম ফুটে প্রায় দেড় কোটি অলিভ রিডলের জন্ম হয়ে গিয়েছে। যা এক অনন্যা নজির বলেই মনে করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা।
অলিভ রিডলে আসলে জলপাই রঙের এক ধরণের সামুদ্রিক কচ্ছপ। এদের অনেক সময় ‘পান্না কাছিম’-ও বলা হয়ে থাকে। এরা অন্য কচ্ছপ প্রজাতির মতো বৃহদাকার হয় না। এক একটি পরিণত কচ্ছপের গড় ওজন প্রায় ৪৬ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। পিঠের খোলস জলপাই রঙের জন্যই এদের ‘অলিভ রিডলে’ বলা হয়েছে। অলিভ রিডলের প্রধান বিচরণ ক্ষেত্র আটলান্টিক মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরের উষ্ণ জলভাগ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এদের ভারত, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, আরব, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ প্রায় ৮০টি দেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। জলদূষণ সহ একাধিক প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে এদের সংখ্যা ক্রমশই নিম্নমুখী এখন। তাই প্রানিবিদরা দীর্ঘদিন ধরেই এদের বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর তালিকায় রেখেছেন।