করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এত ভয়ঙ্কর কেন ভারতে? একাধিক বিশেষজ্ঞ তার অন্যতম কারণ হিসাবে দায়ী করেছেন ভারতে ছড়িয়ে পড়া করোনার ‘ডবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট’ বা ‘দ্বৈত মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট’-কে। যার অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল গত বছরের শেষের দিকেই। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বি-১-৬১৭’। তবে এই নতুন ভারতীয় ধরণটি দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে লক্ষ্য করা গিয়েছিল মার্চের প্রথম দিকে। |

অনলাইন পেপার : গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ করোনা সংক্রমণ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণেই ছিল ভারতে। সেসময় দৈনিক সংক্রমণের গড় ৩ হাজারের কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিল। ধরেই নেওয়া হয়েছিল, করোনা সংক্রমণ বোধহয় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে ভারতে। তার জেরে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলি ধীরে ধীরে খুলতেও শুরু করেছিল। এর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছিল বারংবার জনসমাগমও। এমনকি জনসাধারণও করোনা বিষয়ক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিধিনিষেধ ভুলে নিজের মতো করে জীবন-যাপন পালন করা শুরু করেছিল। মুখে মাস্ক ব্যবহারও ভোলার উপক্রম হয়েছিল।
তবে একাধিক বিশেষজ্ঞ সতর্ক করেছিলেন, ভারতে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে। আর সেটাই ঘটল। গত মার্চ থেকেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশ জুড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। যা এখন প্রতিদিনের আক্রান্তের সংখ্যা তার পূর্ব দিনকেও টেক্কা দিয়ে চলেছে। দৈনিক আক্রান্তের গড় এখন প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) হিসাব দিয়েছে, গত ৭ দিনে সারা বিশ্বে যত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, তার প্রায় অর্ধেকই আক্রান্ত হয়েছে ভারতে।
মৃত্যুর হারও নেহাত কম নয় ভারতে। এখানেও প্রতিদিনের রেকর্ড যেন পূর্ব দিনকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি গড় এখন দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যার। ‘হু’-এর হিসাব অনুযায়ী, গত ৭ দিনে সারা বিশ্বে যতজন মানুষ করোনায় মারা গিয়েছে, তার প্রায় ২৫ শতাংশই মৃত্যু ঘটেছে ভারতে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এত ভয়ঙ্কর কেন ভারতে? একাধিক বিশেষজ্ঞ তার অন্যতম কারণ হিসাবে দায়ী করেছেন ভারতে ছড়িয়ে পড়া করোনার ‘ডবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট’ বা ‘দ্বৈত মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট’-কে। যার অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল গত বছরের শেষের দিকেই। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বি-১-৬১৭’। তবে এই নতুন ভারতীয় ধরণটি দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে লক্ষ্য করা গিয়েছিল মার্চের প্রথম দিকে।
‘বি-১-৬১৭’-কে ‘দ্বৈত মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট’ বলা হচ্ছে কেন? যখন কোনও ভাইরাসের মধ্যে দু’প্রকারের পরিবর্তন একই সঙ্গে লক্ষ্য করা যায়, তখন তাকে ‘দ্বৈত মিউট্যান্ট’ বা ‘ডবল মিউট্যান্ট’ বলা হয়। এখানে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় নতুন ধরণে এই প্রকারই লক্ষ্য করা গিয়েছে।
কিন্তু ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য ‘দ্বৈত মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট’-ই যে দায়ী অনেক বিশেষজ্ঞই এখন প্রায় একমত। কারণ, ইতিমধ্যেই দেশের ৮টি রাজ্যের প্রায় ১৩ হাজার নমুনা সিকোয়েন্স করা হয়েছে, তার মধ্যে সাড়ে ৩ হাজার নমুনাতেই পাওয়া গিয়েছে এই ‘দ্বৈত মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট’। যা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।