‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ একপ্রকার ক্ষতিকর ছত্রাক। সাধারণ অবস্থায় যে কোনও স্থানে একে পাওয়া সম্ভব। মাটি, উদ্ভিদ, পচে যাওয়া শাকসবজি বা ফল, এমনকি বাতাসেও উড়ে বেড়াতে দেখা যায় এই ছত্রাককে। নাকের শ্লেষ্মাতেও এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। বারংবার বা অধিকমাত্রায় এদের সংস্পর্শে এলে, এই ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’-এ আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম, তারাই আক্রান্ত হয় বেশি। |

অনলাইন পেপার : এক করোনায় রক্ষা নেই, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ দোসর। ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যে দিন দিন বেড়েই চলেছে, তাতে দ্বিমত থাকার কোনও কারণ নেই। এবার তারই সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হল ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘মিউকরমাইকোসিস’। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, এই ফাঙ্গাস অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদেরকেই আক্রান্ত করছে, যারা করোনা থেকে সেরে উঠেছে বা সুস্থ হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যেই ভারতের মুম্বাই, দিল্লী, পুনে, হায়দ্রাবাদ ও ব্যাঙ্গালোরে শতাধিক মানুষ এই ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছে। এতে অনেকেই খুইয়েছে তাদের চোখও।
কী এই ছত্রাক? এটি একপ্রকার ক্ষতিকর ছত্রাক। সাধারণ অবস্থায় যে কোনও স্থানে একে পাওয়া সম্ভব। মাটি, উদ্ভিদ, পচে যাওয়া শাকসবজি বা ফল, এমনকি বাতাসেও উড়ে বেড়াতে দেখা যায় এই ছত্রাককে। নাকের শ্লেষ্মাতেও এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। বারংবার বা অধিকমাত্রায় এদের সংস্পর্শে এলে, এই ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’-এ আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম, তারাই আক্রান্ত হয় বেশি।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও এইডস রোগীদের শারীরিক ‘ইমিউনিটি ক্ষমতা’ অন্যদের তুলনায় কম। এখন তারাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠার পর বা সেরে ওঠার পথে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে ডায়াবেটিস, ক্যানসার বা এইডস রোগীই নয়, অন্যদের ক্ষেত্রেও ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ হতে দেখা যাচ্ছে। অনেক বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন, মারাত্মকভাবে আক্রান্ত করোনা রোগীদের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা হচ্ছে। স্টেরয়েড সাধারণত ফুসফুসের প্রদাহ কমায়। তবে এর ব্যবহারে শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। এর ফলেও ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’-এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ রোগের লক্ষণ কী? বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মারাত্মক এই ছত্রাকে আক্রান্ত হলে রোগীর নাক বন্ধ হয়ে যায় ও নাক থেকে রক্ত পড়তে দেখা যায়। চোখে ব্যথা হয় ও চোখ ফুলে যায়। চোখের পাতা ঝুলে পড়তে পারে। এমনকি চোখ ঝাপসা হয়ে পরে চোখের দৃষ্টিশক্তিও চলে যেতে পারে।
এই ছত্রাক চোখ থেকে মস্তিষ্কেও পৌঁছে যেতে পারে। ফলে চিকিৎসকেরা জীবন বাঁচাতে অনেকক্ষেত্রে রোগীর চোখ পর্যন্ত বাদ দিয়ে দেন। এই রোগের চিকিৎসায় যে ওষুধ বা ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়, তা যথেষ্ট ব্যয় সাপেক্ষ। ভারতীয় মুদ্রায় যার প্রতি ডোজের দাম প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। এই রকম ৮ সপ্তাহ ধরে গড়ে প্রায় প্রতিদিনই একটি করে ডোজ ব্যবহার করা হয়। সব মিলিয়ে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ চিকিৎসায় খরচ পড়তে পারে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মতো। যা ব্যয় করা সাধারণ ভারতীয়ের পক্ষে অনেকটাই কঠিন।