সমুদ্রে ভাসমান বৃহৎ আকারের বরফের টুকরোকে হিমশৈল বা ইংরেজিতে আইসবার্গ বলে। সমগ্র হিমশৈলের খুব কম অংশকেই (প্রায় ১০ শতাংশ) জলের ওপরে ভেসে থাকতে দেখা যায়। তাই মাঝে-মধ্যেই এদের প্রকৃত অস্তিত্ব বুঝতে না পেরে বিপদে পরে সমুদ্রে ভাসমান বৃহৎ আকারের জাহাজগুলি। বলা বাহুল্য, ১৯১২ সালে এই রকমই একটি হিমশৈলের অস্তিত্ব বুঝতে না পেরে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক জাহাজটি। মৃত্যু ঘটেছিল দেড় হাজারেরও বেশি যাত্রীর। |

অনলাইন পেপার : ছোটো হতে হতে অবশেষে নিজের অস্তিত্বকেই হারিয়ে ফেলল হিমশৈল বা আইসবার্গ ‘এ-৬৮’। এতদিন এটিই ছিল বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈল। এর অবস্থান ছিল দক্ষিণ আতলান্তিকায়। সম্প্রতি স্যাটেলাইট পরিদর্শন করে এই হিমশৈলটির অস্তিত্ব হারিয়ে যাওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আইস সেন্টার।
আসলে সমুদ্রে ভাসমান বৃহৎ আকারের বরফের টুকরোকে হিমশৈল বা ইংরেজিতে আইসবার্গ বলে। সমগ্র হিমশৈলের খুব কম অংশকেই (প্রায় ১০ শতাংশ) জলের ওপরে ভেসে থাকতে দেখা যায়। তাই মাঝে-মধ্যেই এদের প্রকৃত অস্তিত্ব বুঝতে না পেরে বিপদে পরে সমুদ্রে ভাসমান বৃহৎ আকারের জাহাজগুলি। বলা বাহুল্য, ১৯১২ সালে এই রকমই একটি হিমশৈলের অস্তিত্ব বুঝতে না পেরে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক জাহাজটি। মৃত্যু ঘটেছিল দেড় হাজারেরও বেশি যাত্রীর।
কীভাবে তৈরি হয়েছিল হিমশৈল ‘এ-৬৮’? অধিকাংশ হিমশৈল তৈরি হয় বৃহৎ কোনও হিমবাহ বা বরফের চাই ভেঙে। পরে এগুলি সমুদ্রে ভেসে বেড়াতে থাকে। আইসবার্গ ‘এ-৬৮’-র জন্ম হয়েছিল ২০১৭ সালে এন্টারটিকা পেনিনসুলার লারসেন সি আইস ভেঙে। তখন এর আয়তন ছিল ২ হাজার ২০০ বর্গমাইল বা ৫ হাজার ৮০০ কিলোমিটার। সেসময়ে এটিই ছিল বিশ্বের বৃহত্তম আইসবার্গ।
হিমশৈলগুলি সাধারণত দুই ধরণের হয়ে থাকে, ট্যাবুলার ও অ-সারণী। ট্যাবুলার হিমশৈলগুলি বৃহৎ মালভূমি আকারের হয়ে থাকে। এদের মাঝখানটা সমতল ও কিনারা হয় খাড়া। বড়ো বড়ো হিমশৈলগুলির আকৃতি এই ধরণেরই হয়ে থাকে। হঠাৎ দেখলে সমুদ্রে জেগে ওঠা কোনও বৃহৎ বরফের ভূমিভাগ বলে মনে হতে পারে। তবে অ-সারণীর হিমশৈলগুলির আকার ছোটো প্রকৃতির হয়। এদের নির্দিষ্ট কোনও আকারও থাকে না। বলা বাহুল্য, আইসবার্গ ‘এ-৬৮’ ছিল ট্যাবুলার প্রকৃতির হিমশৈল। সুবৃহৎ আকৃতির জন্য অনেকে একে একটি ছোটো দেশের সঙ্গেও তুলনা করতেন।
তবে কি কারণে নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলল আইসবার্গ ‘এ-৬৮’? বিবিসি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৮ সাল থেকে ক্রমশ উত্তরে সরে আসছিল আইসবার্গটি। দক্ষিণ জর্জিয়ার কাছে পৌঁছে গলতে থাকে এটি। অবশেষে গলতে গলতে এটি এখন অসংখ্য ছোটো টুকরোই পরিণত হয়েছে। মোট কথা নিজের প্রকৃত অস্তিত্বকেই হারিয়ে ফেলেছে আইসবার্গ ‘এ-৬৮’।