ম্যালেরিয়া টিকার কার্যকারিতায় আর এক ধাপ এগোল অক্সফোর্ড

Advertisement
ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় এতদিন শুধুমাত্র ওষুধের ওপরই নির্ভর করে এসেছে মানুষ। টিকা আবিষ্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকেরা। এবার এই টিকা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে গেল অক্সফোর্ড। তাদের এই উদ্ভাবিত টিকার নাম ‘আর২১/ম্যাট্রিক্স-এম’। ইতিমধ্যেই তারা আফ্রিকার বুরকিনায় ৪৫০ জন শিশুর উপর এই টিকা পরীক্ষা মূলকভাবে প্রয়োগ করেছে। তারপরই তারা দাবি করছে, তাদের এই টিকা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ৭৭ শতাংশ কার্যকর।
ম্যালেরিয়া টিকার কার্যকারিতায় আর এক ধাপ এগোল অক্সফোর্ড
Image by 41330 from Pixabay

অনলাইন পেপার : ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বরাবরই ক্রান্তীয় ও গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় অঞ্চলে বেশি। মশা বাহিত এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বের প্রায় ৪ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়। যাদের অধিকাংশই আফ্রিকা মহাদেশের শিশু বা কিশোর। ম্যালেরিয়া সুপ্রাচীন একটি রোগ। তাই সুদূর অতীত থেকে এই রোগ নির্মূলের চেষ্টা চলে আসছে। অক্সফোর্ডও দীর্ঘদিন ধরেই শিশুদের ম্যালেরিয়া রোধী টিকা নিয়ে কাজ করে চলেছে। তারা এবার দাবি করল, তাদের উদ্ভাবিত নতুন টিকা ম্যালেরিয়া রোধে প্রায় ৭৭ শতাংশ কার্যকর।

ম্যালেরিয়া একটি মশা বাহিত সংক্রামক রোগ। এই রোগ সৃষ্টি করে প্লাসমোডিয়াম জাতীয় এক প্রকার প্রোটোজোয়া। স্ত্রী-অ্যানাফিলিস মশা এই প্রোটোজোয়া বহন করে থাকে। কোনও প্রাণী দেহ থেকে রক্তপান করার সময় তাদের লালার মাধ্যমে এই অণুজীবটি প্রাণী দেহে প্রবেশ করে। পরে রক্তের মাধ্যমে যকৃতে পৌঁছে সেখানে বংশবৃদ্ধি ঘটায়। এরপরই শরীরে ম্যালেরিয়ার উপসর্গ দেখা দেয়।

ম্যালেরিয়া সুপ্রাচীন একটি রোগ। তবুও দীর্ঘদিন ধরে এই রোগের প্রকৃত কারণ জানা ছিল না মানুষের। তবে চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছে নিজেদের মতো করে। সর্বপ্রথম চার্লস ল্যাভেরন ১৮৮০ সাল নাগাদ লোহিত রক্ত কণিকা থেকে ম্যালেরিয়ার জন্য প্রোটোজোয়া খুঁজে পান। তারও ১৭ বছর পর ১৮৯৭ সালে স্যর রোনাল্ড রস কলকাতায় কর্মরত থাকাকালীন প্রমাণ পান, ম্যালেরিয়া আসলে মশা বাহিত একটি রোগ। বলা বাহুল্য, এই দুই বিজ্ঞানীর যুগান্তকারী আবিষ্কারের পরই ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসায় আমূল পরিবর্তন ঘটে।

ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় এতদিন শুধুমাত্র ওষুধের ওপরই নির্ভর করে এসেছে মানুষ। টিকা আবিষ্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকেরা। এবার এই টিকা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে গেল অক্সফোর্ড। তাদের এই উদ্ভাবিত টিকার নাম ‘আর২১/ম্যাট্রিক্স-এম’। ইতিমধ্যেই তারা আফ্রিকার বুরকিনায় ৪৫০ জন শিশুর উপর এই টিকা পরীক্ষা মূলকভাবে প্রয়োগ করেছে। তারপরই তারা দাবি করছে, তাদের এই টিকা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ৭৭ শতাংশ কার্যকর।

এই পরীক্ষার জন্য অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা শিশুদের ৩টি দলে ভাগ করে টিকা প্রয়োগ করেন। প্রথম দুটি দলকে টিকার উচ্চমাত্রার ৩টি ডোজ দেন এবং অপর দলকে দেন কম মাত্রার টিকার ডোজ। ফল স্বরূপ তাঁরা দেখেন, কম মাত্রার ডোজ দেওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে টিকার কার্যকারিতা ৭৪ শতাংশ এবং উচ্চমাত্রার ক্ষেত্রে সেটি ৭৭ শতাংশ নিশ্চিত হয়েছে।

তবে অক্সফোর্ড এখানেই থেমে থাকতে চাইছে না। তারা আরও বড়ো আকারে এই টিকার পরীক্ষা করতে চায়। এক্ষেত্রে তারা আফ্রিকারই ৪টি দেশের ৫ মাস থেকে ৩ বছর বয়সী ৪ হাজার ৮০০ শিশুর উপর এই টিকা প্রয়োগ করতে চায়।

Advertisement
Previous articleভারতীয় কবিতার মহাবৃক্ষ শঙ্খ ঘোষ, আমাদের অস্তিত্বে একটি সজাগ প্রকাশ
Next articleকরোনা ভাইরাস : ভারতীয় নতুন স্ট্রেইন সম্পর্কে কি বলছেন বিজ্ঞানীরা?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here