এমনিতেই ভাইরাসের এক বা একাধিক নতুন স্ট্রেইন তৈরি হওয়া এমন কিছু অস্বাভাবিক বিষয় নয়। যে কোনও ভাইরাসের ক্ষেত্রেই এমনটি ঘটতে পারে। এই মুহুর্মুহু পরিবর্তন যে কোনও দুই মুখী হতে পারে। নতুন স্ট্রেইনের ভাইরাসগুলি পূর্ব অপেক্ষা আরও মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে, নতুবা পূর্ব অপেক্ষা ক্রমশই দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে অধিকাংশ ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন তার পূর্ব স্ট্রেইনের থেকে খুব বেশি পরিবর্তিত হয় না। |

অনলাইন পেপার : দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে প্রভাব বাড়িয়ে চলেছে মারণ ভাইরাস করোনা। যদিও গত বছরের শেষ থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এদেশে করোনা সংক্রমণ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু মার্চ থেকে আবারও স্বমহিমায় ফিরে এসেছে এই সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞরা একে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বলছেন। যা গত বছরের তুলনায় আরও মারাত্মক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেশ কয়েকদিন ধরেই সমগ্র দেশ জুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দেখা যাচ্ছে ৩ লাখেরও বেশি। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
এর মাঝেই উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে করোনার ভারতীয় নতুন স্ট্রেইন। এমনিতেই ভাইরাসের এক বা একাধিক নতুন স্ট্রেইন তৈরি হওয়া এমন কিছু অস্বাভাবিক বিষয় নয়। যে কোনও ভাইরাসের ক্ষেত্রেই এমনটি ঘটতে পারে। এই মুহুর্মুহু পরিবর্তন যে কোনও দুই মুখী হতে পারে। নতুন স্ট্রেইনের ভাইরাসগুলি পূর্ব অপেক্ষা আরও মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে, নতুবা পূর্ব অপেক্ষা ক্রমশই দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে অধিকাংশ ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন তার পূর্ব স্ট্রেইনের থেকে খুব বেশি পরিবর্তিত হয় না।
যদিও করোনার ভারতীয় নতুন স্ট্রেইন কতটা মারাত্মক, এবিষয়ে এখনও নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে এই নতুন স্ট্রেইন পূর্ব অপেক্ষা অধিক সংক্রমণ, এমন কোনও উপযুক্ত প্রমাণও এখনও পাননি তাঁরা। এখানে উল্লেখ করতে হয়, গত বছরের অক্টোবর নাগাদ করোনার এই ভারতীয় নতুন স্ট্রেইনের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। এক্ষেত্রে ভাইরাসটি দুই বার পরিবর্তনের পর বর্তমানের নতুন স্ট্রেইনে রূপান্তরিত হয়েছে। এই ভারতীয় নতুন স্ট্রেইনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বি-১-৬১৭’। গত অক্টোবরে সন্ধান পাওয়ার পরেও এটি এখনও ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই নতুন ভারতীয় স্ট্রেইন যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল বা আফ্রিকান স্ট্রেইনের তুলনায় কম সংক্রামক হতেও পারে। তাই দেশ জুড়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য নতুন স্ট্রেইন দায়ী, একথা জোর দিয়ে বলতে চান না বিজ্ঞানীরা।
তবে এটাও ঠিক, দেশ জুড়ে ভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেইন কতটা ছড়িয়েছে, এবিষয়েও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিষয়ে জানতে সমগ্র দেশ জুড়ে বড়ো আকারের কোনও পরীক্ষা এখনও হয়নি। তাই যথেষ্ট নমুনা তথ্যের অভাব রয়েছে বিজ্ঞানীদের হাতে। মহারাষ্ট্রে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩৬১টি নমুনায় নতুন স্ট্রেইনের সন্ধান মিলেছে ২২০টিতে।
যদিও বর্তমান ভ্যাকসিনগুলি নতুন স্ট্রেইনেও কার্যকর হবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, নতুন স্ট্রেইনে আক্রান্ত হয়ে অত্যধিক অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে এই ভ্যাকসিনগুলি।