আসলে ‘সুশি’ মূলত একটি জনপ্রিয় জাপানিজ খাবার। যা এখন বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁগুলিতে পাওয়া যাচ্ছে। খাবারটি তৈরি হয় ভিনিগারে ভেজানো বাদামি বা সাদা ভাত, কাঁচা সামুদ্রিক ‘নেতা’ মাছ (কখনও কখনও ভাজা মাছও হতে পারে) এবং বিভিন্ন ধরণের সবজি ও ফল দিয়ে। যদিও জনপ্রিয় এই জাপানিজ খাবারটির উৎপত্তি হাজার বছর পূর্বে। অতীতে সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষেরা ভাত ব্যবহার করত। ভাতের মধ্যে থাকা ল্যাক্টো-ফার্মেন্টেশন দিব্যি সতেজ রাখতে পারে মাছকে। |

অনলাইন পেপার : জন্ম থেকেই যে নামের জন্য মানুষ তার নিজের সমাজে পরিচিত, সেই নাম কখনও-সখনও সে পরিবর্তন করে বিশেষ প্রয়োজনে। তবে এই পরিবর্তন করতে হয় রীতিমতো আইনানুগ ও আনুষ্ঠানিকভাবে। যাতে তার পূর্ব পরিচয়ের সমস্ত কিছুই মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় নতুন নামের সঙ্গে।
মানুষ তার নিজের নামকেই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে থাকে। তাই নাম পরিবর্তনের মতো এত বড়ো কাজের পিছনে অবশ্যই কোনও না কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য থাকে তার। তবে সেই উদ্দেশ্য যদি হয় বিনামূল্যে পছন্দের কোনও খাবার পাওয়ার জন্য, তবে ব্যাপারটি কেমন হতে পারে? আর এই রকমই একটি আজব উদ্দেশ্য নিয়ে নিজের পছন্দের নামটি পরিবর্তন করতে হিড়িক পড়ে গিয়েছে তাইওয়ানে।
তাইওয়ানের একটি চেইন রেস্তোরাঁ বেশ কিছুদিন আগে কিছুটা মজার ছলে ঘোষণা করেছিল, গ্রাহকদের যদি কারও নামের সঙ্গে চাইনিজ শব্দ ‘গুই য়ু’ শব্দটি যুক্ত থাকে, তবে তিনি তার ৫ জন সঙ্গীকে নিয়ে বিনামূল্যে ২ দিন ‘সুশি’ খেতে পারবেন। ‘গুই য়ু’ শব্দটির ইংরেজি অর্থ ‘স্যামন’। আর এই ঘোষণাতেই রীতিমতো নাম পরিবর্তনের হিড়িক পড়ে গিয়েছে ওই অঞ্চলে। বিনামূল্যে ‘সুশি’ খাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নামও বদলে ফেলেছেন অনেকেই।
আসলে ‘সুশি’ মূলত একটি জনপ্রিয় জাপানিজ খাবার। যা এখন বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁগুলিতে পাওয়া যাচ্ছে। খাবারটি তৈরি হয় ভিনিগারে ভেজানো বাদামি বা সাদা ভাত, কাঁচা সামুদ্রিক ‘নেতা’ মাছ (কখনও কখনও ভাজা মাছও হতে পারে) এবং বিভিন্ন ধরণের সবজি ও ফল দিয়ে। যদিও জনপ্রিয় এই জাপানিজ খাবারটির উৎপত্তি হাজার বছর পূর্বে। অতীতে সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষেরা ভাত ব্যবহার করত। ভাতের মধ্যে থাকা ল্যাক্টো-ফার্মেন্টেশন দিব্যি সতেজ রাখতে পারে মাছকে। সেই সংরক্ষিত মাছ রান্নাকে তারা ‘নারে-জুশি’ বলত। দীর্ঘদিন পরও এই প্রক্রিয়ায় রান্না আজও জাপানে হয়ে চলেছে। তবে বর্তমানের রেসিপি সঙ্গে অতীতের রেসিপির মিল রয়েছে খুবই সামান্য।
‘নারে-জুশি’-র রান্না হওয়া মাছের স্বাদ কিছুটা টক প্রকৃতির। প্রাচীন জাপানি ভাষায় ‘সুশি’ কথার অর্থও টক। সম্ভবত জনপ্রিয় এই জাপানি খাবারের টক স্বাদের জন্য তার নামও ‘সুশি’ রাখা হয়েছে। বর্তমানে অবশ্য মাছের টক স্বাদ আনার জন্য ভিনিগার ব্যবহার করা হয়। দামও বেশ চড়া।
যদিও বিনামূল্যে এই ‘সুশি’ পেতে এখনও পর্যন্ত দেড়শো জনেরও বেশি ব্যক্তি তার নিজের নামের সঙ্গে ‘গুই য়ু’ বা ‘স্যামন’ যুক্ত করার আবেদন করে ফেলেছেন। অনেকে ইতিমধ্যে তার নিজের নাম পরিবর্তন করে বিনামূল্যে তার সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে ওই রেস্তোরাঁ-ই ‘সুশি’ও খেতে পেরেছেন। পরে তারা তাদের পূর্ব নামেই ফিরে যেতে পুনরায় আবেদন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে এই ঘটনায় রীতিমতো বিরক্ত তাইওয়ান প্রশাসন। প্রশাসনের বক্তব্য, খুব সাধারণ ঘটনার জন্য নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা মানে প্রশাসনের অতিরিক্ত সময় নষ্ট করা।