সেদিন খুব তাড়াতাড়িই নিজের কর্মস্থান থেকে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন জর্জ। জর্জের এই অসময়ে ফিরে আসা প্রেমিক যুগলের কেউই আন্দাজ করতে পারেননি ওইদিন। ফলে যা হবার সেটাই হল। অ্যালবার্তো ধরা পড়ে গেলেন জর্জের হাতে। প্রথম অবস্থায় অ্যালবার্তো নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন সোফার পিছনে গা ঢাকা দিয়ে। কিন্তু জর্জের তীক্ষ্ণ নজর এড়িয়ে এযাত্রায় আর নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি তিনি। অবশেষে নতিস্বীকার করলেন জর্জের কাছে। |

অনলাইন পেপার : মানুষ প্রেমে পড়লে কত রকমই না পাগলামি করে থাকে। প্রেম বা ভালোবাসা যে বিশ্বের সবচেয়ে মধুর অনুভূতি এবং এই অনুভূতি এছাড়া যে কোনওভাবেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়, একথা প্রমাণ করতে বহুবার বহু প্রেমিক বা প্রেমিকা অবাস্তব সব কাণ্ড ঘটিয়ে গিয়েছে। রূপকথায় এরকম অজস্র ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে। সিনেমার রূপালী পর্দাতেও এরকম ঘটনা হামেশায় চোখে পড়ে। শুধু সিনেমা বা রূপকথার সাম্রাজ্যে নয়, খোঁজ করলে প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি পাড়ায় কোনও না কোনও ‘পাগল প্রেমিক’ অবশ্য খুঁজে পাওয়া যাবে। যারা প্রেমের জন্য অসম্ভব অনেক কিছুই ঘটিয়ে থাকে নিজের অজান্তেও।
তবে মেক্সিকোর সাম্প্রতিককালের এই প্রেমের ঘটনা রীতিমতো অবাক করে দেবে অন্য যে কোনও প্রেমিক যুগলকেও। কারণ এখানে প্রেমিকার সান্নিধ্য পেতে প্রেমিক খুঁড়ে ফেলল রীতিমতো একটি আস্ত সুড়ঙ্গ। আর সেই সুড়ঙ্গ পথে বেশ কয়েকদিন ধরেই নিয়মিত চলেছে পরকীয়া প্রেম।
ঘটনাটি মেক্সিকোর চিজুয়ানা অঞ্চলের দুই প্রতিবেশী অ্যালবার্তো ও পামেলা-কে ঘিরে। প্রথমে আলাপ, তারপর পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই দুই প্রেমিক-প্রেমিকা। ঘটনাটি অবশ্য কিছুদিন থেকেই আন্দাজ করতে পারছিলেন পামেলার স্বামী জর্জ। তাই অ্যালবার্তোর সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করার চেষ্টার উপর ছিল কড়া নিষেধাজ্ঞা।
কিন্তু প্রেমের কাছে এই নিষেধাজ্ঞা বাগ মানবে কেন? অ্যালবার্তো প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফেঁদে ফেললেন এক চমৎকার পরিকল্পনা। সঙ্গ লাভের জন্য নিজের বাড়ি থেকে প্রেমিকার বাড়ির অন্দরমহল পর্যন্ত খুঁড়ে ফেললেন একটি আস্ত সুড়ঙ্গ। সুড়ঙ্গ খুঁড়তে তাঁর কোনও অসুবিধাও হয়নি। কারণ কর্মক্ষেত্রে তিনি নিজেই ছিলেন একজন দক্ষ শ্রমিক। খননের সমস্ত কায়দা-কানুন ছিল তাঁর নখদর্পণে। এবার প্রেমিকার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আর কোনও বাধাও থাকল না। নিশ্চিন্তে জর্জের অবর্তমানে ওই সুড়ঙ্গ পথে অ্যালবার্তো চলে আসত পামেলার ঘরে। চলত চুটিয়ে পরকীয়া প্রেম।
কিন্তু ঘুঘু বারবার ধান খেয়ে ফিরে যাবে, তা কি হয়! সেদিন খুব তাড়াতাড়িই নিজের কর্মস্থান থেকে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন জর্জ। জর্জের এই অসময়ে ফিরে আসা প্রেমিক যুগলের কেউই আন্দাজ করতে পারেননি ওইদিন। ফলে যা হবার সেটাই হল। অ্যালবার্তো ধরা পড়ে গেলেন জর্জের হাতে। প্রথম অবস্থায় অ্যালবার্তো নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন সোফার পিছনে গা ঢাকা দিয়ে। কিন্তু জর্জের তীক্ষ্ণ নজর এড়িয়ে এযাত্রায় আর নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি তিনি। অবশেষে নতিস্বীকার করলেন জর্জের কাছে।
কিন্তু ঘটনার এখানেই শেষ নয়। সোফার পিছন থেকে অ্যালবার্তো-কে টেনে বের করার সময়ই উন্মুক্ত হয়ে গেল গোপন সুড়ঙ্গপথ। প্রথমটা বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন জর্জ। পরে নিজেকে সামলে তিনি খবর দিলেন পুলিশে। তারপর নেমে পড়লেন সুরঙ্গের মধ্যে। সুরঙ্গের শেষ কোথায়, এটাই ছিল তাঁর জানার বিষয়। সুড়ঙ্গ পথ সোজা চলে গিয়েছে অ্যালবার্তো-র বাড়ির ভিতর। পুরো ব্যাপারটা তখনই পরিষ্কার হয় জর্জের। তাহলে এই পথেই তাঁর বাড়িতে নিত্য যাতায়াত চলত অ্যালবার্তো-র!
এদিকে অ্যালবার্তো ঘটনাটি জানাজানি না করার অনুরোধ করে বসলেন জর্জের কাছে। কারণ অ্যালবার্তো-ও যে বিবাহিত। বউ জানলে আর রক্ষা থাকবে না। জর্জ এই অনুরোধে রাজী না হয়ে অ্যালবার্তো-র স্ত্রীকে পুরো ঘটনাটি খুলে বললেন। ফলে অ্যালবার্তো ও জর্জের মধ্যে শুরু হয়ে গেল হাতাহাতি। পরে পুলিশ পৌঁছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।