গত বছর ভারতীয় ও চিনা সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর থেকেই চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অনেকটাই অবনতি ঘটেছে। ভারতের জনগণের মধ্যেও সেই ঘটনার প্রভাব বেশ গভীরভাবেই বিস্তারলাভ করেছে। চিনা দ্রব্য বর্জন করা থেকে শুরু করে জাতীয় নিরাপত্তার কথা ভেবে একাধিক চিনা অ্যাপসও নিষিদ্ধ করা হয়েছে ভারতে। তেমনভাবে ‘ড্রাগন’ নামটির সঙ্গে চিনের সম্পর্ক থাকায় এবার এই ফলটির নামই বদলে দিল বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার। |

জনদর্পণ ডেস্ক : ড্রাগনের প্রসঙ্গ উঠলে প্রথমেই চিনের নাম ভেসে ওঠে। কারণ ড্রাগনের সঙ্গে নাকি যুগ যুগ ধরে চিনাদের আত্মার সম্পর্ক। যে কোনও শুভ কাজে চিনারা প্রথমেই ড্রাগনকে স্মরণ করে থাকে। তাই সাধারণ অবস্থায় যে কেউ মনে করে, ‘চিন মানেই ড্রাগন, আর ড্রাগন মানেই চিন’। চিনের সঙ্গে এই আত্মার সম্পর্কের জন্যই এবার ‘ড্রাগন’ নামটাই বদলে দিল গুজরাত সরকার।
‘ড্রাগন’ বলতে এখানে ড্রাগন ফলের কথা বলা হচ্ছে। ড্রাগন এক ধরণের ফণীমনসা জাতীয় ক্যাকটাস ফল। গত ১৯ জানুয়ারি বিজেপি শাসিত গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি রসাল এই ফলটির নতুন নামকরণ ঘোষণা করলেন ‘কমলম্’। যেটি একটি সংস্কৃত শব্দ। যার বাংলা অর্থ পদ্ম। ফলটিকে দেখতে অনেকটা পদ্ম ফুলের মতো হওয়ায় তার নাম এমনটি রাখা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। এমনিতেই কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর থেকেই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক স্থান ও রাস্তার নাম বদলে নতুন নামকরণ হয়েছে। এবার তার সঙ্গেই যুক্ত হল এই প্রথম কোনও ফলের নতুন নাম।
গত বছর ভারতীয় ও চিনা সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর থেকেই চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অনেকটাই অবনতি ঘটেছে। ভারতের জনগণের মধ্যেও সেই ঘটনার প্রভাব বেশ গভীরভাবেই বিস্তারলাভ করেছে। চিনা দ্রব্য বর্জন করা থেকে শুরু করে দেশের নিরাপত্তার কথা ভেবে একাধিক চিনা অ্যাপসও নিষিদ্ধ করা হয়েছে ভারতে। তেমনভাবে ‘ড্রাগন’ নামটির সঙ্গে চিনের সম্পর্ক থাকায় এবার এই ফলটির নামই বদলে দিল বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার।
তবে ‘ড্রাগন’ নামটির সঙ্গে চিনের সম্পর্ক থাকলেও ড্রাগন ফলটির জন্মস্থানের সঙ্গে কোনওভাবেই কিন্তু চিন যুক্ত নয়। ড্রাগন মধ্য আমেরিকার ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ। তবে ফলটি বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে। বর্তমানে জনপ্রিয় হওয়ায় পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয় এই ফলের। চিন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ায় ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে ফলটির। তবে সব নামের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে ‘ড্রাগন’।
ফলটি বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। লাল রঙের ড্রাগন ফলের সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। ফলটির বহিরাবরণ ড্রাগনের গায়ের মতোই মোটা মোটা আঁশ যুক্ত হয়ে থাকে। হয়তো তাই এর নামকরণ হয়েছে ‘ড্রাগন ফল’। আর এতেই অনেকের ধারণা, ‘ফলটির জন্ম চিনে’।
ভারতেরও বিগত কয়েক বছর ধরে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফলের। এদেশের বিভিন্ন স্থানের মধ্যে গুজরাতে এক বিশাল অংশ জুড়ে চাষ হয় এই ফলটির। পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরেও এখন চাষ হতে দেখা যাচ্ছে এর। তবে ভারতের গুজরাতেই প্রথম ড্রাগন ফলটির নাম বদলে নতুন নামকরণ হল কমলম্।