গত ফেব্রুয়ারি থেকেই যাওয়া-আসা প্রায় বন্ধ এখানে। বসেনি কোনও সাহিত্য আড্ডা বা গানের আসর। আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে ছিল একরাশ মারণ আতঙ্ক। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, মানুষের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে আর মুখে মাস্ক পরে পেরিয়ে গিয়েছে দীর্ঘ ৮-৯টি মাস। এই শান্তিনিকেতন বড্ড অচেনা ছিল এ’কদিন। তবে আবার ফিরতে শুরু করেছে সেই চেনা শান্তিনিকেতনের প্রতিচ্ছবি। আর শুরুটা করল সেই চিরপরিচিত কবি-সাহিত্যিকেরাই। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি |

জনদর্পণ ডেস্ক : কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত শান্তিনিকেতন বরাবরই একটি সাংস্কৃতিক শহর। মূলত কবিগুরুর জন্যই এই শহর আজ বিশ্বের দরবারে বিশেষভাবে পরিচিত। তার দেখানো পথের পথিক হয়ে আজও এই শহর জুড়ে বসে কবি-সাহিত্যিকদের আড্ডা। বসে গানের আসর। প্রায় সারা বছর ধরেই চলে এই আড্ডা আর আসর। আর তাই সমস্ত শহর জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক নামি-দামি কবি, সাহিত্যিক বা গায়কের সৃষ্টি সম্ভার। এছাড়াও সারা বছর ধরেই ‘কবির টানে, কবিতার টানে’ এখানে এসে হাজির হন দেশ বিদেশের অসংখ্য সাহিত্যপ্রেমী মানুষ।
তবে ছন্দ কেটেছিল মহামারী কোভিড ১৯। গত ফেব্রুয়ারি থেকেই যাওয়া-আসা প্রায় বন্ধ এখানে। বসেনি কোনও সাহিত্য আড্ডা বা গানের আসর। আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে ছিল একরাশ মারণ আতঙ্ক। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, মানুষের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে আর মুখে মাস্ক পরে পেরিয়ে গিয়েছে দীর্ঘ ৮-৯টি মাস। এই শান্তিনিকেতন বড্ড অচেনা ছিল এ’কদিন।
তবে আবার ফিরতে শুরু করেছে সেই চেনা শান্তিনিকেতনের প্রতিচ্ছবি। আর শুরুটা করল সেই চিরপরিচিত কবি-সাহিত্যিকেরাই। বোলপুর ইয়ং টাউন ক্লাবের দ্বিতলে গত ২২ নভেম্বর বিকাল ৪টেয় প্রশাসনিক সমস্ত নিয়ম-নীতি মেনে প্রকাশিত হল ‘এবং ভরসা’ পত্রিকার দ্বিতীয় সংখ্যা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার ‘ভ্রমণপিপাসু’ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সৌমেন চক্রবর্তী, উত্তেজনা কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুজিত রেজ, ‘আজকের কবিতা’ পত্রিকার সম্পাদক তথা ৫৩টি কাব্যগ্রন্থের জনক প্রবীর দাস, ‘একলব্য’ পত্রিকার সম্পাদক দেব কুমার দত্ত সহ আরও একাধিক কবি-সাহিত্যিক।
‘এবং ভরসা’ সম্পর্কে ওই পত্রিকার সম্পাদক প্রতিভা গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, পত্রিকাটিতে একদিকে যেমন অবহেলিত মানুষের জীবন যন্ত্রণার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে, তেমনি ফুটে উঠেছে বিভিন্ন গুণীজনের লেখার মধ্য দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ের ভাবনাগুলো।
প্রতিভা গঙ্গোপাধ্যায় আরও জানালেন, করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বিভিন্ন ‘সাহিত্য’ পরিজনেরা একত্রিত হতে পারেননি। বদ্ধ ঘরের চার দেওয়ালে বন্দী থেকে এতদিন অনলাইনেই সাহিত্য আলোচনা চালিয়েছেন। দীর্ঘদিন পর সাহিত্য পত্রিকার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এদিন একদিকে যেমন সকলের সঙ্গে সকলের একটা সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার গড়ে উঠলো, তেমনি বহু কবি-সাহিত্যিক দীর্ঘদিন পর নিজের কণ্ঠে প্রাণ খুলে স্বরচিত কবিতাও পাঠ করতে পারলো।