১৯৬৯ সাল থেকে ‘ম্যান বুকার’ পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। নোবেলের পর এটিকেই সাহিত্যের অন্যতম সেরা পুরস্কার হিসাবে মানা হয়। তবে পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্তাবলী রয়েছে। উপন্যাসটি হতে হবে ইংরাজি ভাষায় সম্পূর্ণ পূর্ণদৈর্ঘ্যের এবং ঔপন্যাসিক-কে অবশ্যই হতে হবে কমনওয়েলথ, আয়ারল্যান্ড বা জিম্বাবোয়ের বাসিন্দা। তবে ২০১৩ সালে এই শর্তাবলীতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। কমনওয়েলথের বাইরের দেশগুলিতেও যাঁরা ইংরেজি ভাষায় উপন্যাস লেখেন, তাঁদেরকেও এখন এই পুস্কারের জন্য মনোনীত করা হচ্ছে। |

অনলাইন পেপার : এবছর ‘ম্যান বুকার’ পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হল স্কটিশ বংশোদ্ভূত আমেরিকান লেখক ডগলাস স্টুয়ার্ট-কে। তিনি ‘শুগি বেইন’ পূর্ণদৈর্ঘ্যের উপন্যাসটির জন্য এই পুরস্কার পেলেন। চুয়াল্লিশ বছর বয়সী এই ঔপন্যাসিকের এটিই প্রথম উপন্যাস।
ডগলাস স্টুয়ার্ট-এর লেখা এই ‘শুগি বেইন’ উপন্যাসটির প্রতিটি লাইনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শুগি নামের এক দরিদ্র কিশোরের বাল্য জীবনের প্রতিচ্ছবি। শ্রমজীবী পরিবারের এই কিশোর ছোটো থেকেই তাঁর মাকে মাদকাসক্ত দেখে আসছে। তার শ্রমজীবী মা দারিদ্র্যের পাশাপাশি মাদকাসক্তির বিরুদ্ধেও লড়ে চলেছে।
উপন্যাসটি তাঁর নিজের জীবনকে নিয়েই লেখা, জানিয়েছেন ডগলাস স্টুয়ার্ট। ১৬ বছর বয়সে তিনি তাঁর মাকে হারান। ছোটো থেকেই তাঁকে দারিদ্র্যের সঙ্গে সংঘর্ষ করে বড়ো হতে হয়েছে। যে শ্রমজীবী পরিবারের কেউই লেখক হওয়ার জন্য হাতে কখনও কলম তুলে নেয়নি, তিনিই প্রথম হাতে কলম তুলে নিয়েছেন এবং ‘বুকার’-ও জিতেছেন। এটা তাঁকে বেশ অবাকই করেছে।
তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে গ্লাসগো শহরে। তিনি জানিয়েছেন, জেমস কেলম্যানের উপন্যাস ‘হাউ লেট ইট ওয়াজ, হাউ লেট’ তাঁর জীবনকে সম্পূর্ণভাবে পালটে দিয়েছিল। এই উপন্যাসটির জন্য জেমস কেলম্যান ১৯৯৪ সালে ‘বুকার’-ও জেতেন।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, ডগলাস স্টুয়ার্ট বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে রয়েছেন। সেখানে তিনি এখন ফ্যাশন ডিজাইনার কাজের সঙ্গে যুক্ত। এই কাজ করার ফাঁকে ফাঁকেই তিনি লিখে চলেছেন উপন্যাস। তাঁর পরবর্তী উপন্যাস ‘লক ও’ খুব শীঘ্রই প্রকাশিত হবে।
১৯৬৯ সাল থেকে ‘ম্যান বুকার’ পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। নোবেলের পর এটিকেই সাহিত্যের অন্যতম সেরা পুরস্কার হিসাবে মানা হয়। তবে পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্তাবলী রয়েছে। উপন্যাসটি হতে হবে ইংরাজি ভাষায় সম্পূর্ণ পূর্ণদৈর্ঘ্যের এবং ঔপন্যাসিক-কে অবশ্যই হতে হবে কমনওয়েলথ, আয়ারল্যান্ড বা জিম্বাবোয়ের বাসিন্দা। তবে ২০১৩ সালে এই শর্তাবলীতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। কমনওয়েলথের বাইরের দেশগুলিতেও যাঁরা ইংরেজি ভাষায় উপন্যাস লেখেন, তাঁদেরকেও এখন এই পুস্কারের জন্য মনোনীত করা হচ্ছে। বর্তমানে এই পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০,০০০ পাউণ্ড।
প্রথম বছর ‘সামথিং টু আনসার ফর’ উপন্যাসের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাজ্যের ঔপন্যাসিক পি. এইচ. নিউবি। ভারতীয়দের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সালমান রুশদি (‘মিডনাইট চিলড্রেন’, ১৯৮১), অরুন্ধতী রায় (দ্য গড অফ স্মল থিংস, ১৯৯৭), কিরণ দেসাই (দ্য ইনহেরিটেন্স অফ লস, ২০০৬) ও অরবিন্দ আদিগা (দ্য হোয়াইট টাইগার, ২০০৮) এই ৪ জন ঔপন্যাসিক এই পুরস্কার অর্জন করতে পেরেছেন।
এই বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ‘বুকার’ পুরস্কারের জন্য মোট ১৩ জন ঔপন্যাসিককে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দুবাইয়ের বাসিন্দা ভারতীয় বংশোদ্ভূত অবনী দোশীও ছিলেন। তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন তাঁর ‘বার্ন্ট সুগার’ উপন্যাসের জন্য।