নাসা এই মিশনের নাম দিয়েছে ‘টাচ এন্ড গো’ বা ‘ট্যাগ’। অর্থাৎ খুব বেশিক্ষণের জন্য নাসার এই স্যাটেলাইটটি বেন্নুর শরীরকে স্পর্শ করবে না। নমুনা সংগ্রহ করার পর মুহূর্তেই বেন্নু থেকে উড্ডয়ন করবে। আর এটাই সফলভাবে করে দেখালো অসিরিক্স-রেক্স। গত ২০ অক্টোবর ভারতীয় সময় রাতের দিকে সে স্পর্শ করেছিল বেন্নুর শরীর, তাও আবার মাত্র ১৬ সেকেন্ডের জন্য। ওই সামান্যতম সময়ের মধ্যেই সে সংগ্রহ করতে পেরেছে বেন্নুর ‘গুরুত্বপূর্ণ’ নমুনা। |

অনলাইন পেপার : দীর্ঘ ৪ বছর নিঃশব্দে একাকী পথ চলার পর অবশেষে নিজের গন্তব্যে পৌঁছে গেল অসিরিক্স-রেক্স। পৃথিবী থেকে এই দীর্ঘ পথের দূরত্ব প্রায় ২০ কোটি মাইল। অসিরিক্স-রেক্স যাত্রা শুরু করেছিল ২০১৬ সালে। নাসা তাকে পাঠিয়েছিল বেন্নু গ্রহাণুতে। এই গ্রহাণুটির অবস্থান অ্যাস্টারয়েড বেল্টে, অর্থাৎ মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যবর্তী অঞ্চলে। অসিরিক্সের এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য ছিল বেন্নু গ্রহাণুর নমুনা সংগ্রহ করা। যা সে সফলভাবে এই যাত্রায় সম্পন্ন করতে পেরেছে বলে মনে করছে নাসা।
নাসা এই মিশনের নাম দিয়েছে ‘টাচ এন্ড গো’ বা ‘ট্যাগ’। অর্থাৎ খুব বেশিক্ষণের জন্য নাসার এই স্যাটেলাইটটি বেন্নুর শরীরকে স্পর্শ করবে না। নমুনা সংগ্রহ করার পর মুহূর্তেই বেন্নু থেকে উড্ডয়ন করবে। আর এটাই সফলভাবে করে দেখালো অসিরিক্স-রেক্স। গত ২০ অক্টোবর ভারতীয় সময় রাতের দিকে সে স্পর্শ করেছিল বেন্নুর শরীর, তাও আবার মাত্র ১৬ সেকেন্ডের জন্য। ওই সামান্যতম সময়ের মধ্যেই সে সংগ্রহ করতে পেরেছে বেন্নুর ‘গুরুত্বপূর্ণ’ নমুনা।
এমনিতেই যে কোনও গ্রহ বা উপগ্রহতে মহাকাশ যান নামানো তুলনামূলক অনেক বেশি সহজ। কিন্তু গ্রহাণুর ক্ষেত্রে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। গ্রহাণুর পৃষ্ঠতল কোনও গ্রহ বা উপগ্রহের মতো সমতল হয় না। কিছুটা অমসৃণ হয়ে থাকে। তাই স্যাটেলাইটকে সেখানে নামানোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি ঝুঁকি থেকে যায়।
যদিও অসিরিক্স-রেক্স বেন্নুতে নেমে সফলভাবে নমুনা সংগ্রহ করতে পেরেছে, কিন্তু নাসা আশঙ্কা প্রকাশ করছে সংগৃহীত নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসার ব্যাপারে। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, অসিরিক্স ইতিমধ্যে যে ছবি পাঠিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে নাসা জানিয়েছে, স্যাটেলাইটটির যে পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করার কথা ছিল, সংগ্রহ করেছে হয়তো তার থেকে কিছুটা বেশি। আর তাই প্রস্তরখণ্ডের কিছু অংশ যানটির ঢাকনায় আটকা পড়ে গিয়েছে। হয়তো সেকারণেই ঢাকনার মুখ ঠিকঠাক বন্ধ হয়নি। তাই নাসার আশঙ্কা, নমুনার গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ছে এখন।
তবে নাসাও এক্ষেত্রে চুপচাপ বসে নেই। তারাও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সংগৃহীত নমুনাগুলিকে ক্যাপসুলে ঢোকানোর ব্যাপারে। নাসার অনুমান, অসিরিক্স-রেক্স প্রায় ৪০০ গ্রাম নমুনা সংগ্রহ করতে পেরেছে। যদি অসিরিক্স সংগৃহীত নমুনাগুলি ঠিকঠাক পৃথিবীতে নিয়ে আসতে পারে, তবে ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে সৌরমণ্ডল কিভাবে তৈরি হয়েছিল, সে সম্পর্কে তারা অনেক কিছুই জানতে পারবে। অসিরিক্স-রেক্স পৃথিবীতে ফিরে আসবে ২০২৩ সাল নাগাদ।