বীজ আলুর দাম বাড়ছে, তাই আগামী মরশুমেও লাভ নিয়ে সংশয়ে আলু চাষিরা

Advertisement
ইতিমধ্যেই স্থানভেদে পোখরাজ জাতের বীজ আলুর দাম বেড়ে হয়েছে ৩৫০০-৪৫০০ টাকা প্রতি বস্তা (৫০ কেজি)। তাই আলু চাষ নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েছেন বীরভূম জেলার আলু চাষিরা। কারণ আলু চাষের লাভ অনেকটাই নির্ভর করে বীজ আলুর ক্রয় মূল্যের উপর। বীজ আলুর ক্রয় মূল্য বৃদ্ধি পেলে চাষের খরচও বৃদ্ধি পাবে। এদিকে আউস ধান ওঠার আগেই ধানের মূল্য হ্রাস পেতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি বস্তা (৬০ কেজি) ধানের মূল্য হ্রাস পেয়ে হয়েছে জাত ভেদে ৬৫০-৮৫০ টাকা।

বীজ-আলুর-দাম-বাড়ছে-তাই-আগামী-মরশুমেও-লাভ-নিয়ে-সংশয়ে-আলু-চাষিরা
Image by Wolfgang Ehrecke from Pixabay

নারায়ণচন্দ্র দাস : গত বছর আলুর মরশুমে যে কৃষক ১০ টাকা প্রতি কেজি দরে আলু বিক্রি করেছিলেন, আজ তাঁকে সেই আলু-ই বাজার থেকে কিনে খেতে হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা প্রতি কেজিতে। এই দর কমার কোনও লক্ষণও এই মুহূর্তে নেই। উপরন্তু বাড়তেও পারে। তাই চাষিদের কাছে এ যেন অনেকটা লাভের গুড় পিঁপড়েই খাওয়ার মতো অবস্থা। এদিকে আগামী আলুর মরশুমও প্রায় চলে আসার মুখে।

সাধারণত আউস ধান ওঠার পরপরই অধিকাংশ চাষি আলু রোপণের জন্য তোরজোড় শুরু করেন। কিন্তু এবছর আলু বীজের দাম নিয়ে একপ্রকার চিন্তায় পড়েছেন বীরভূম জেলার আলু চাষিরা। বীজ আলু ব্যবসায়ীদের থেকে জানা গেল, এই মুহূর্তে স্থানভেদে পোখরাজ জাতের বীজ আলুর দাম ৭০-৯০ টাকা প্রতি কেজি। প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) যার মূল্য দাঁড়াবে ৩৫০০-৪৫০০ টাকা।

এই হিসাবে যদি আগামী মরশুমে আলু চাষের হিসাব কষা হয় তবে দেখা যাবে, প্রতি বিঘাতে একজন চাষির আলু চাষ করতে সর্বমোট খরচ হতে পারে ২০৫০০-২৩৫০০ টাকা প্রায়। তার মধ্যে প্রতি বিঘায় ৩ বস্তা করে বীজ আলু ব্যবহার করলে, শুধুমাত্র বীজ আলুতেই তাঁর খরচ পড়বে ১০৫০০-১৩৫০০ টাকা প্রায়।

এবার ফলন যদি খুব ভালো হয়, তাহলে প্রতি বিঘায় ওই চাষি আলু পেতে পারেন ৭০-১০০ বস্তা প্রায়। এখন আলু চাষের শুধুমাত্র খরচ তুলতে তাঁকে সেই আলু বিক্রি করতে হবে পাইকারি দরে (১০০ বস্তা ফলনের হিসাবে) ২০৫-২৩৫ টাকা প্রতি বস্তা প্রায়। কিন্তু লাভ করতে তাঁকে আরও বেশি মূল্যে বিক্রি করতে হবে সেই আলু। কিন্তু আলুর ফলন যদি কোনও কারণে কমে যায় বা বাজার দর নেমে যায়, তাহলে ওই চাষিকে ক্ষতির মুখ দেখতে হতে পারে। চাষিদের আশঙ্কা এখানেই, বীজ আলুর দাম যদি মরশুমের শুরুতে না কমে, তবে কি প্রকারে আলুর থেকে তাঁরা লাভ তুলতে পারবেন।

ইতিমধ্যেই অনেক চাষি ভেবে রেখেছিলেন, চলতি মরশুমের আউস ধান বিক্রি করে, সেই টাকার কিছু অংশ দিয়ে বীজ আলু কিনে রোপণ করবেন। কিন্তু এই ভাবনাও অনেকটা দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে বলে মনে করছেন অনেক চাষি। কারণ ধান ওঠার পূর্বেই আবারও একবার ধানের মূল্য হ্রাস পেতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি বস্তা বা ৬০ কেজি ধানের দাম জাত ভেদে ৬৫০-৮৫০ টাকা। ১ মাস আগেও এই ধানের মূল্য ছিল ৯৫০-৯৭০ টাকা প্রতি বস্তা। তাই ওই চাষিরাও চলতি মরশুমের আউস ধান বিক্রি করে আগামী মরশুমে আলু চাষ করতে বেশ বেগ পেতে পারেন বলে তাঁরা মনে করছেন। যদিও আলু চাষের মরশুম শুরু হতে এখনও বেশ দেরি। পূর্ব থেকে কোনও কিছুই নির্ধারণ করে রাখা ঠিক হবে না বলেও মনে করছেন অনেক চাষি। বাজারে বীজ আলুর মূল্যেরও ওঠা-নামা হতে পারে ওই সময়ের মধ্যে।

Advertisement
Previous articleদুর্গা পুজো যেভাবে বারোয়ারী পুজোর রূপ পেল
Next articleসন্তান না হওয়ার জন্য পুরুষদের বন্ধ্যাত্বও কিছু কম দায়ী নয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here