করোনা পরিস্থিতিতে এখনও বিভিন্ন দেশে বহু শ্রমিক আটকা পড়ে রয়েছে। তাদের সংখ্যা হতে পারে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটির কাছাকাছি। করোনা মহামারির জন্য চলা লকডাউন সহ আরও অন্যান্য কারণে তারা নিজেদের দেশে ফিরতে পারেনি। এমনকি কোনও রকম সাহায্যও তারা চাইতে পারেনি। আর এই মানুষগুলিই সবচেয়ে বেশি শিকারে পরিণত হচ্ছে পাচারকারিদের। পাচার হওয়া সেই সমস্ত মানুষগুলিকে দিয়ে পরে বিভিন্ন রকম অপরাধমূলক কাজ করানো হচ্ছে। চলছে নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন। |

অনলাইন পেপার : করোনা মহামারি যে শুধু লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনই কেড়ে নিয়েছে, তা নয়। কেড়ে নিয়েছে কোটি কোটি মানুষের কর্মসংস্থানও। করোনার জেরে বিশ্ব জুড়ে চলা লকডাউনে কর্ম হারিয়েছে এক বিরাট অংশের মানুষ। এদের অনেকেই আবার সম্পূর্ণভাবে কর্মহারা হয়ে গিয়েছে। তাদের এই দুঃসময়ের সুযোগ নিচ্ছে আর একদল সুযোগ সন্ধানী। কর্ম দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই অসহায় মানুষগুলিকে পাচার করছে নিঃশব্দে। করছে নির্যাতনও। সুযোগ সন্ধানীদের এই নিঃশব্দ নিশানা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না শিশুরাও। এই বিষয়ে সম্প্রতি সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।
মানুষ পাচার আজ কোনও নতুন বিষয় নয়। বছরের পর বছর ধরে চলছে এই রকম নির্মম ও নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ড। পাচার হওয়া অধিকাংশ মানুষের ওপরই চলে নানা রকম অত্যাচার। শ্রম ও যৌন নিপীড়নও বাদ যায় না এক্ষেত্রে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে গজিয়ে ওঠা একাধিক দালাল চক্রের বিছিয়ে রাখা ফাঁদে পা দিতে বাধ্য হয় এক শ্রেণীর অসহায় মানুষ। করোনা কালে এই পরিস্থিতি যেন আরও ভয়াবহতায় রূপ নিতে চলেছে। জাতিসংঘের চালানো একটি সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ এই পাচার চক্রের শিকার হয়েছে। আর এটি যথেষ্ট উদ্বেগের। সবচেয়ে দুশ্চিন্তার, এই পুরো কর্মকাণ্ড চলছে অত্যন্ত গোপনে ও নিঃশব্দে।
সবচেয়ে বেশি পাচারের শিকার হচ্ছে তুলনামূলক অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা দেশের মানুষগুলি। তারা খুব সহজেই ওই সমস্ত পাচার চক্রের পাতা ফাঁদে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে। পাচার হওয়া সেই সমস্ত মানুষগুলিকে দিয়ে পরে বিভিন্ন রকম অপরাধমূলক কাজ করানো হচ্ছে। চলছে নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন।
জাতিসংঘ আরও জানাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতে এখনও বিভিন্ন দেশে বহু শ্রমিক আটকা পড়ে রয়েছে। তাদের সংখ্যা হতে পারে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটির কাছাকাছি। করোনা মহামারির জন্য চলা লকডাউন সহ আরও অন্যান্য কারণে তারা নিজেদের দেশে ফিরতে পারেনি। এমনকি কোনও রকম সাহায্যও তারা চাইতে পারেনি। আর এই মানুষগুলিই সবচেয়ে বেশি শিকারে পরিণত হচ্ছে পাচারকারিদের। ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর পাশাপাশি জাতিসংঘ সতর্ক করছে মাদক পাচার ও অন্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিও।