১১ অক্টোবর ছিল আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস। এদিন সিউড়ির ‘উপহার’ সংস্থা শিশু কন্যাদের নতুন পোশাক দেওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করে। এর পাশাপাশি তারা শিশু কন্যার মায়েদের নিয়েও বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করে। মায়েদের সচেতন করা হয়, যাতে তাঁরা নানান সামাজিক অবক্ষয়ের বিষয়ে কোনও কারণেই বাল্যবিবাহের দিকে তাঁদের মেয়েদের না এগিয়ে দেয়। এছাড়াও কোনও কারণেই তাঁদের মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত না করে। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি |

জনদর্পণ ডেস্ক : বীরভূম জেলার সিউড়ি শহরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘উপহার’ বরাবরই নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন সমাজ সেবা বা সচেতন মূলক কাজে অংশ নিয়ে থাকে। এর আগে তাদের চলতি বছরেই বৃক্ষরোপণ, রক্তদান শিবির, নারী কল্যাণ, এমনকি করোনা দুর্যোগে পূর্ণ লকডাউন চলাকালে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করার মতো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে। কোনও কোনও সময় তাদেরকে সহযোগিতা করতে আরও একাধিক সংস্থা এগিয়ে এলেও অধিকাংশ সময় তারা নিজেরাই এককভাবে ওই সমস্ত কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। আবার অনেক সময়ে অন্য সংস্থাকেও সহযোগিতা করতে এগিয়ে যায় তারা।
এবার সেই ‘উপহার’ আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসের দিন অর্থাৎ ১১ অক্টোবর এগিয়ে এসেছে সমাজে নারীদের গুরুত্ব বোঝাতে। এদিন তাদের মূল কর্মসূচি ছিল শিশু কন্যাদের নতুন পোশাক উপহার দেওয়া। এর পাশাপাশি তারা শিশু কন্যার মায়েদের নিয়েও বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করে। সেখানে নারী অধিকার ও নারী শিক্ষা সম্বন্ধে মায়েদের বিশেষভাবে বোঝানো হয়। মায়েদের সচেতন করা হয়, যাতে তাঁরা নানান সামাজিক অবক্ষয়ের বিষয়ে কোনও কারণেই বাল্যবিবাহের দিকে তাঁদের মেয়েদের না এগিয়ে দেয়। এছাড়াও কোনও কারণেই তাঁদের মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত না করে।
এবিষয়ে ‘উপহার’ সংস্থার সম্পাদক প্রিয়নীল পালের মতে, মফশলের মেয়েদের মধ্যেও সামাজিক কাজ করার প্রবনতা রয়েছে। আর এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, চতুর্দিকে নারীদের সফলতার উদাহরণ দেখলে। বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক কাজে নারীরা অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে অনেক নারীই এগিয়ে আসার সাহস দেখাতে পারে না। এই সব পিছিয়ে পড়া মেয়েদের এগিয়ে আসার সাহস জোগাতে হবে। তাঁদের অন্তরের সমস্ত দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে অনুপ্রাণিত করতে হবে সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করার।
উইকিপিডিয়ার সূত্র অনুযায়ী, ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর প্রথমবারের জন্য আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস পালন করা হয়। বিশেষ এই দিনটির সূত্রপাত ঘটেছিল ‘প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি বেসরকারি অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায়। এই দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা। প্রতি বছর এই আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসের নির্দিষ্ট একটি থিম নির্ধারণ করা হয়। ২০১২ সালে প্রথম দিবস পালনের থিম ছিল ‘Stop child marriage’ বা ‘বাল্য বিবাহ বন্ধ করা’। এবছর অর্থাৎ ২০২০ সালের থিম ‘My voice, our equal future’ বা ‘আমার কণ্ঠস্বর, আমাদের সমান ভবিষ্যৎ’।