Advertisement
ক্রিকেট জগতে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৭ জন ব্যাটসম্যান ১০ হাজার রানের গণ্ডি অতিক্রম করতে পেরেছেন। তাঁর মধ্যে ভারত ও শ্রীলঙ্কার ২ জন করে ৪ জন, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সাউথ আফ্রিকার ১ জন করে ব্যাটসম্যান রয়েছেন। ক্রিকেট ইতিহাসে তাঁদের প্রত্যেকের অবদান অসীম। তাঁরা প্রত্যেকেই গড়েছেন একের পর এক বিশ্ব রেকর্ড। তাঁদের গড়া বহু রেকর্ড এখন পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে। – ছবি : সংগৃহীত
|
জনদর্পণ ডেস্ক : ক্রিকেট ময়দানে বিভিন্ন সময়ে এসেছেন অসংখ্য ক্রিকেটার। কেউ স্বল্প সময়ের জন্য, আবার কেউ দীর্ঘদিনের জন্য। পারফর্মেন্স দেখিয়ে যারা নিজের জাত চেনাতে পেরেছেন, তাঁরাই টিকে থাকতে পেরেছেন দীর্ঘদিন। জায়গা করে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ ক্রিকেট প্রেমীর হৃদয়ে।
ক্রিকেট জগতে ব্যাটসম্যানদের ভূমিকা অনেকটাই বেশি। কারণ তাঁদের তৈরি করা রানের ওপরই সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে যে কোনও ম্যাচের ভাগ্য। এই জগতে এমনও ব্যাটসম্যান এসেছেন, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শুধু খেলেই যাননি, গড়েছেন একের পর এক বিশ্ব রেকর্ড। বহুদিন পর্যন্ত সেই রেকর্ড অক্ষতও থেকে গিয়েছে। এমনই ৭ জন ব্যাটসম্যানের কথা এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত যাঁরা টেস্ট ও একদিন উভয় ফরম্যাটেই ১০ হাজার রানের গণ্ডি অতিক্রম করতে পেরেছেন।
৭. ব্রায়ান লারা, ওয়েস্ট ইন্দিজ (১৯৯০-২০০৭) : এই ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তী তাঁর ১৭ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। তাঁর গড়া বহু রেকর্ড আজও অক্ষত রয়েছে। টেস্ট ফরম্যাটে জিম্বাবয়ের বিরুদ্ধে গড়া এক ইনিংসে ৪০০* রানের রেকর্ডটি অবিস্মরণীয়। তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ১৩১টি টেস্ট ও ২৯৯টি একদিনের ম্যাচ। যথাক্রমে দুই ফরম্যাটে তিনি মোট রান করেছেন ১১৯৫৩ ও ১০৪০৫। শতক ও অর্ধ-শতকের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৪ ও ৪৮ এবং ১৯ ও ৫৩।
৬. রাহুল দ্রাবিড়, ভারত (১৯৯৬-২০১২) : ভারতীয় এই কিংবদন্তীকে ‘দ্য ওয়াল’ বলা হয়। কারণ টেস্ট ফরম্যাটে উইকেটের সামনে তিনি প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। প্রায় ক্ষেত্রেই তাঁকে টলানো ছিল একেবারেই অসম্ভব। তাঁর ১৬ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার পেরিয়েছে বহু উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে। আন্তর্জাতিক ময়দানে তিনি খেলেছেন ১৬১টি টেস্ট ও ৩৪৪টি একদিনের ম্যাচ। এই দুই ফরম্যাটে তাঁর মোট রান যথাক্রমে ১৩২৮৮ ও ১০৮৮৯। শতক ও অর্ধ-শতকের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৬ ও ৬৩ এবং ১২ ও ৮৩।
৫. মাহেলা জয়বর্ধনে, শ্রীলঙ্কা (১৯৯৭-২০১৫) : তাঁর সময়ে তিনি ছিলেন শ্রীলঙ্কার একজন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি বেশ কয়েক বছর শ্রীলঙ্কান দলের অধিনায়কত্বের পদও সামলিয়েছেন। ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন অধিনায়ক। তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ১৪৯টি টেস্ট ও ৪৪৮টি একদিনের ম্যাচ। দুই ফরম্যাটে তাঁর মোট রান যথাক্রমে ১১৮১৪ ও ১২৬৫০। শতক ও অর্ধ-শতকের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৪ ও ৫০ এবং ১৯ ও ৭৭।
৪. জ্যাক ক্যালিস, সাউথ আফ্রিকা (১৯৯৫-২০১৪) : এই কিংবদন্তীকে ধরে নেওয়া হয় সর্বকালের সেরা অলরাউণ্ডার। কারণ তিনি ব্যাটিং-এর পাশাপাশি বল হাতেও সমান দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁকে সাউথ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসাবেও মনে করা হয়। ১৯ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ১৬৬টি টেস্ট ও ৩২৮টি একদিনের ম্যাচ। তাঁর রান সংখ্যা যথাক্রমে ১৩২৮৯ ও ১১৫৭৯। শতক ও অর্ধ-শতকের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৫ ও ৫৮ এবং ১৭ ও ৮৬।
৩. কুমার সাঙ্গাকারা, শ্রীলঙ্কা (২০০০-২০১৫) : আধুনিক ক্রিকেটের একজন অন্যতম সেরা উইকেট রক্ষক মানা হয় তাঁকে। এর পাশাপাশি তিনি ছিলেন অন্যতম সেরা একজন ব্যাটসম্যানও। টেস্ট ও একদিন উভয় ফরম্যাটেই তিনি ছিলেন শ্রীলঙ্কার অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। একদিনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মোট রান সংখ্যার বিচারে সচিন তেন্ডুকরের পরই তাঁর স্থান। ১৫ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ১৩৪টি টেস্ট ও ৪০৪টি একদিনের ম্যাচ। মোট রান যথাক্রমে ১২৪০০ ও ১৪২৩৪। শতক ও অর্ধ-শতকের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৮ ও ৫২ এবং ২৫ ও ৯৩।
২. রিকি পন্টিং, অস্ট্রেলিয়া (১৯৯৫-২০১২) : ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সফল অধিনায়ক হওয়ার পাশাপাশি পন্টিং ছিলেন একজন নির্ভরযোগ্য সেরা ব্যাটসম্যান। তাঁর সময়ই অস্ট্রেলিয়া পর পর (২০০৩ ও ২০০৭) দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে। বিশ্বের যে কোনও ফাস্ট বোলারের বিরুদ্ধে তিনি অবলীলায় ব্যাটিং করতে পারতেন। ১৭ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ১৬৮টি টেস্ট ও ৩৭৫টি একদিনের ম্যাচ। রান করেছেন যথাক্রমে ১৩৩৭৮ ও ১৩৭০৪। শতক ও অর্ধ-শতক যথাক্রমে ৪১ ও ৬২ এবং ৩০ ও ৮২।
১. সচিন তেন্ডুকর, ভারত (১৯৮৯-২০১৩) : সচিন-কে বলা হয় আধুনিক ক্রিকেটের ডন। অনেকে তাঁকে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানও মনে করে থাকেন। সর্বাধিক রানের অধিকারী এই ব্যাটসম্যানের ২৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে গড়া রেকর্ডের খাতা অনেক দীর্ঘ। এখনও পর্যন্ত তিনিই একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসাবে টেস্ট ও একদিন উভয় ফরম্যাটেই ১৫ হাজার রানের গণ্ডি অতিক্রম করতে পেরেছেন। এবং একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসাবে ২০০টি টেস্ট ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তাঁর ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ২০০টি টেস্ট ও ৪৬৩টি একদিনের ম্যাচ। তাঁর রান সংখ্যা যথাক্রমে ১৫৯২১ ও ১৮৪২৬। শতক ও অর্ধ-শতক যথাক্রমে ৫১ ও ৬৮ এবং ৪৯ ও ৯৬।
Advertisement