দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে বন্যপ্রাণী, আরও মহামারির আশঙ্কা পৃথিবী জুড়ে

Advertisement
মানুষ নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে প্রায় প্রতি নিয়ত জেনে বা অজ্ঞাতে ক্রমশ ধ্বংস করে চলেছে বন্যপ্রাণীদের আবাস্থলগুলি। তাতে একদিকে যেমন বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণীগুলি, অপরদিকে তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ নিজেই। অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা, করোনার মতো মহামারি জড়িত রয়েছে বন্যপ্রাণীর সঙ্গে। ওই সমস্ত বন্যপ্রাণীদের ব্যবসায়ীক কাজে বা অবৈধভাবে ব্যবহার করে মানুষ পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে ফেলেছে মহামারি। – ছবি : সংগৃহীত

wildlife is rapidly disappearing more epidemics are feared around the world

অনলাইন পেপার : এই বিশ্ব শুধু মানুষের নয়, এখানে অধিকার রয়েছে বন্যপ্রাণীদেরও। এই অতি সহজ ও সরল ব্যাপারটি যেন বুঝেও বুঝতে চাইছে না মানুষ। আর তাই নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে প্রায় প্রতি নিয়ত জেনে বা অজ্ঞাতে ক্রমশ ধ্বংস করে চলেছে বন্যপ্রাণীদের আবাস্থলগুলি। এতে বিপাকে পড়েছে সমগ্র বন্যপ্রাণী সমাজ। ইতিমধ্যে হারিয়ে গিয়েছে তাদের একাধিক প্রজাতি। যা আর কখনওই ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
     এই মানুষই নিজে এক সময়ে বন্য ছিল। অন্য প্রাণীদের সঙ্গে মিলিতভাবে জীবন নির্বাহ করত বনে-জঙ্গলে। একে একপ্রকার প্রতিবেশীর সঙ্গে সহ বসবাসও বলা যেতে পারে। অথচ আজ সেই মানুষই নিজের কু-বুদ্ধিকে সম্বল করে সেই সব প্রতিবেশীদের নিধনে মেতে উঠেছে। ধ্বংস করছে বন, জ্বালিয়ে ছারখার করছে একের পর এক বন্যপ্রাণীর আবাস্থল। গভীর সমুদ্রেও খুব একটা নিশ্চিন্তে নেই প্রাণীরা। সেখানেও আঘাত হানছে প্রতি নিয়ত। যার ফলে আগামীতে প্রায় বন্যপ্রাণী শূন্য হতে চলেছে গোটা পৃথিবী।
     এর আগেও একাধিক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা সতর্ক করেছিল। এবার সতর্ক করল WWF (ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফাণ্ড)। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের সম্প্রতি একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ডব্লিউডব্লিউএফ জানিয়েছে ক্রমশ বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাওয়ার মাত্রা একেবারেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছিয়েছে। যা এর পূর্বে কখনও দেখা যায়নি। এই মাত্রা এই মুহূর্তে কমার কোনও লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। যদিও প্রকৃতি বারবার সতর্ক করেছে বা করছে, কিন্তু মানুষের তাতে কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই।
     সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ১৯৭০ সালের পর। জানা যাচ্ছে, এই সময়ে ২০ হাজার স্তন্যপায়ী ও ২০ হাজার মাছের প্রজাতির মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশ পুরোপুরি বিলুপ্ত গিয়েছে। আর এর পুরোটাই হয়েছে মানুষের দ্বারা। যদি মানুষ এখনও সতর্ক না হয়, তবে আগামীতে এই বিলুপ্তির লক্ষণ ক্রমশই বৃদ্ধি পাবে।
     তবে প্রাণী বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাওয়া সবচেয়ে বেশি বিপদের মুখে ফেলবে মানুষকেই। কারণ মানুষও প্রকৃতির বাইরের কোনও প্রাণী নয়। প্রকৃতিকে আঘাত করলে পরে সেই আঘাত মানুষের ওপরই বর্ষিত হবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে। এব্যাপারে ইংল্যান্ডের জুলজিক্যাল সোসাইটি অফ লন্ডনের সংরক্ষণ পরিচালক অ্যান্ড্রু টেরির মতে, বন্যপ্রাণী ধ্বংস হওয়া মানেই প্রকৃতির বাস্তুসংরক্ষণের ওপর আঘাত হানা।
     অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা, বর্তমান করোনা মহামারির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বন্যপ্রাণী। সেই বন্যপ্রাণীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করা বা বাণিজ্যিক কাজে জড়িয়ে ফেলার জন্যই গোটা পৃথিবী জুড়ে এই মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, বন্যপ্রাণীদের শান্তিতে ও নির্ভয়ে বসবাসের সুযোগ করে না দিলে ও বন্য জীবনের ওপর আঘাত হানা বন্ধ না করলে আগামীতে এই রকম মহামারি আরও বাড়তে পারে।
Advertisement
Previous articleপ্রায় হারিয়ে যেতে বসা ‘ভাদু উৎসব’-এ এখনও আনন্দে মাতে বাংলার গ্রাম
Next articleশুক্রে প্রাণের খোঁজ দিতে পারে ফসফিন

1 COMMENT

  1. শুধু হারিয়ে যাচ্ছে বলাও ভুল। আমরা তাদের অনেকাংশেই নিঃশেষ করে ফেলছি হয়ত।😔

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here