ডেথ ভ্যালি বিশ্বের অন্যতম একটি উষ্ণ স্থান। ১০০ বছরেরও আগে এই স্থানটির তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল ৫৬.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে সেই রেকর্ড নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। ২০১৩ সালে এখানকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু এবছর সেই রেকর্ড ভেঙে ১৬ আগস্ট স্থানটির নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে, ৫৪.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। – ছবি : সংগৃহীত |
অনলাইন পেপার : এই বঙ্গদেশে ভরা গ্রীষ্মকাল পেরিয়ে গিয়েছে মাস দুয়েক আগেই। বর্ষার পর এখন সবে হাজির হয়েছে শরৎকাল। দিগন্ত জোড়া সবুজ ধানক্ষেত, মাঠ বা নদীর ধার ঘেঁষে ফুটে ওঠা কোমল কাশ ফুল, শিউলি-বকুলের নিঃশব্দ সুবাসের লড়াই আর মাথার উপর পেঁজা তুলো ছড়ানো নীলাকাশ- এটাই এই শরতের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
তবে এবছরের গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়াটা ছিল বেশ অন্যরকম। আর পাঁচটা বছর থেকে কিছুটা আলাদা। অন্য বছরের তুলনায় তেমন দাবদাহের সম্মুখীন হতে হয়নি বঙ্গবাসীকে। মাঝে মধ্যেই ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি ও সেই সঙ্গে কালবৈশাখী হয়ে গিয়েছে কোথাও কোথাও। এবছরে এখনও পর্যন্ত এই বঙ্গদেশে স্থানভেদে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ছিল ৪২-৪৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
তবে স্থানটি যদি হয় ডেথ ভ্যালি, তার তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পেরিয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। আর এমনটিই হল এবছর। ১০০ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে স্থানটি তার নতুন রেকর্ড গঠন করল। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, গত ১৬ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫৪.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এর আগে ডেথ ভ্যালির সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল ৫৬.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সেই রেকর্ডটি ছিল ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো। কিন্তু পরে ওই রেকর্ডের তথ্য নিয়ে কিছু বিতর্ক তৈরি হয়। ১৯৩১ সালেও তিউনিশিয়ায় তাপমাত্রার একটি রেকর্ড তৈরি হয়েছিল। সেবছর ওই স্থানটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৫৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। পরে এই তথ্যেরও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে দেখা গিয়েছে। তবে ২০১৩ সালে ডেথ ভ্যালিতে নতুন যে রেকর্ডটি করা হয়েছিল, তা ছিল প্রায় নির্ভুল। ওই বছর সেখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
এদিকে প্রচণ্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে ১৫ আগস্ট ক্যালিফোর্নিয়ায় ‘ফায়ারনাডো’ দেখা গিয়েছে। ‘ফায়ারনাডো’ এক ধরণের তপ্ত টর্নেডো। যা স্বল্প স্থানের মধ্যে ভূমি থেকে আকাশ পর্যন্ত প্রশস্ত। প্রচণ্ড শুষ্ক ও গরম বাতাসের কারণে এর সৃষ্টি হয়ে থাকে। এর ঘূর্ণন গতি মাঝে মধ্যেই ২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় পৌঁছে যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানাচ্ছে, এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। ইতিমধ্যেই প্রচণ্ড গরম বাতাস প্রবাহের জন্য ওই অঞ্চলের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিকল হয়ে গিয়েছে। ফলে সমগ্র অঞ্চল দুদিন ধরে ডুবে রয়েছে অন্ধকারে। ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে কর্মরত এক ব্যক্তি ব্রান্ডি স্টুয়ার্ট জানাচ্ছেন, এখানকার প্রচণ্ড গরমে যেন মুখ পুড়ে যাচ্ছে। বাইরে হাঁটলেই অনুভব করতে হবে, যেন একটি উনুনের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে।