Advertisement
প্রতি বছর ৯ আগস্ট বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বীরভূমের বিভিন্ন প্রান্তে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। কিন্তু এবছর করোনা অতিমারির কারণে এই দিবস পালনে কোথাও তেমন কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। যতটুকু হয়েছে তা সবই প্রশাসনিক নির্দেশনামা অনুসরণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি
|
জনদর্পণ ডেস্ক : ভারতে এক অবিচ্ছিন্ন অংশ হিসাবে সুদূর অতীত থেকেই বসবাস করে আসছে বিভিন্ন উপজাতি তথা আদিবাসী সম্প্রদায়। এদের মধ্যে সাঁওতাল, কোঁড়া, মাহালি, ওরাং ইত্যাদি সম্প্রদায় অন্যতম। বিচিত্র তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, শিল্প, সমাজজীবন। শুধু ভারত নয়, পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ দেশেই দেখতে পাওয়া যাবে এই উপজাতি সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্যময় জীবন। তাঁদের এই বৈচিত্র্যময় জীবনধারাকে মর্যাদা দিতে প্রতি বছর ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
এবছরও সারা ভারতবর্ষের মতো বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পালন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। তবে এবছরের দিবস পালনটা হয়েছে কিছুটা অন্যরকমভাবে। বর্তমান সময়ে করোনা সংক্রমণের এই কঠিন পরিস্থিতিতে কোথাও তেমনভাবে আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা সম্ভব হয়নি। যতটুকু হয়েছে, তা সবই প্রশাসনিক নির্দেশনামা অনুসরণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।
এদিন বোলপুরের পাশ্ববর্তী ধান্যসরা গ্রামের সিধু-কানু লোকসংস্কৃতি ভবন চত্বরে “সানতাল টিচার্স অফ বীরভূম”-এর পক্ষ থেকে এই দিনটি বিশেষভাবে পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবক ও শিক্ষক গোকুল হাঁসদা, স্থানীয় শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র মুরমু, বুদ্ধদেব হাঁসদা, গোপাল মুরমু, সুজিত হাঁসদা, বুধন হেমরম, বুদি মুরমু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্যোক্তা সুভাষ চন্দ্র মুরমু জানালেন, গত বছর আদিবাসী সমাজ শিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (পঃবঃ)-র উদ্যোগে সাঁইথিয়া ব্লকের জগন্নাথপুর কৃষি খামারে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আদিবাসী সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করেছিল। কিন্তু এবছর করোনা অতিমারির কারণে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি হয়নি। তার জায়গায় সোশ্যাল মাধ্যম হোয়াসটআ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ছোট্ট করে এই অনুষ্ঠান উৎযাপন করা হয়েছে। তাই কিছুটা আক্ষেপ থেকেই যাচ্ছে।
বিগত বছরগুলিতে যেমনভাবে বেশ কয়েকদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিশেষ দিনটি পালন করা হত, এবছর ধান্যসরা গ্রামের এই সিধু-কানু লোকসংস্কৃতি চত্বরে তেমন কোনও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। লক্ষ্য রাখা হয়েছে, কোনওভাবেই যেন লোকসমাগম না ঘটে। এদিনের অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র বক্তব্য রেখে ও পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘ ১৯৯৫ সালে ৯ আগষ্ট দিনটিকে বিশ্ব আদিবাসী দিবস হিসাবে ঘোষনা করে। তার আগে ১৯৮২ সালে রাষ্ট্রসংঘ প্রথমবারের জন্য বিশ্বের সমস্ত আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়। ভারতে ২০১৫ সাল থেকে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
Advertisement